বিশ্বের ২১তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বাংলাদেশ

লন্ডনভিত্তিক সেন্টার ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (CEBR) জানিয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১.৬০ ডলার ট্রিলিয়ন আকারে পরিণত হয়ে বিশ্বের ২১তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে।পোশাক খাতের পাশাপাশি ওষুধ ও ইলেকট্রনিক্স খাতে সফল বৈচিত্র্যকরণ, অবকাঠামো বিনিয়োগ

এবং ক্রমবর্ধমান জনমিতি সুবিধার কারণে বাংলাদেশ এই অবস্থানে পৌঁছাবে।

CEBR-এর ১৬তম বার্ষিক বিশ্ব অর্থনৈতিক আউটলুক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০৩৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE), সুইডেন এবং বেলজিয়ামের মতো উচ্চ আয়ের দেশগুলোকে অর্থনীতির আকারে ছাড়িয়ে যাবে।

বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ৪৩৪ ডলার বিলিয়ন, যা ১৮৯টি দেশের মধ্যে বিশ্বে ৩৭তম। তবে ২০৩৯ সালের মধ্যে দেশটি ১৬ ধাপ এগিয়ে ২১তম স্থানে পৌঁছাবে।Tourism guides

তবে, এই অর্থনৈতিক অগ্রগতির পেছনে একটি বিপরীত চিত্র রয়েছে: ২০৩৯ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ৮,০৬১ ডলার হবে, যা ১৮৯টি দেশের মধ্যে ১২৩তম স্থানে থাকবে।

সুইজারল্যান্ডের মাথাপিছু জিডিপি ১৫৬,৭৭৩ ডলার হবে, যা বাংলাদেশের তুলনায় ১৮ গুণ বেশি।সংযুক্ত আরব আমিরাত এর মাথাপিছু জিডিপি ১০৫,২০৯ ডলার হবে, যা বাংলাদেশের তুলনায় ১২ গুণ বেশি। সুইডেন এবং বেলজিয়াম যথাক্রমে ১৮তম এবং ২২তম স্থানে থাকবে।

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে মালদ্বীপ ২০৩৯ সালে মাথাপিছু জিডিপিতে শীর্ষে থাকবে, ৩৮,৮৫৯ ডলার নিয়ে বিশ্বে ৫৯তম স্থানে। এর পরে ভুটান (১০৬তম) এবং বাংলাদেশ (১২৩তম)।

মাথাপিছু জিডিপি হিসাবে বাংলাদেশ ভারতকে (১২৪তম) এক ধাপ পেছনে ফেলবে। তবে ভারত ২০৩৯ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। পাকিস্তান (১৬২তম), নেপাল (১৬০তম), এবং শ্রীলঙ্কা (১৩৪তম) এ অঞ্চলের নিচের দিকে থাকবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ ২,৫২১ ডলার মাথাপিছু জিডিপি নিয়ে ২০২৪ সালে ১৪৩তম স্থানে রয়েছে। CEBR জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্ব জিডিপি ১১০ ডলার ট্রিলিয়ন থেকে বেড়ে ২০৩৯ সালে ২২১ ডলার ট্রিলিয়নে পৌঁছাবে।

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির মুকুট ধরে রাখবে। চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও পিছিয়ে থাকবে। ভারত, ২০২৫ সালের মধ্যে জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। ২০২৮ সালে দেশটি ৫ ডলার ট্রিলিয়ন অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং ২০২৯ সালের মধ্যে জার্মানিকে ছাড়িয়ে তৃতীয় স্থানে পৌঁছাবে।

ছোট অর্থনীতিগুলোর মধ্যে তুভালু, নারু, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, কিরিবাতি এবং পালাউ পরবর্তী ১৫ বছরে তাদের বর্তমান অবস্থানেই থাকবে।

‘কিছু ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে পড়তে পারে!’

গভর্নর ড. মুনসুর বলেন, প্রথম দিকে মনে হয়েছিল কিছু ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু সেগুলো এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকিং খাতের ধস নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। এখন আর কোনো ব্যাংক পতনের শঙ্কা নেই।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গোল্ডেন জুবিলি উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য ব্যাংক খাতকে পুনর্গঠন করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিতে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ঘাটতি ও রিজার্ভের পতনের মতো বড় সংকট ছিল। তবে এই সংকট থেকে আমরা অনেকটা উত্তরণ করেছি। আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করেনি, ফলে রিজার্ভ আর কমেনি।

বরং রিজার্ভ বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মুনসুর বলেছেন, ব্যাংক খাতে অর্জনের পাশাপাশি ব্যর্থতাও রয়েছে এবং এই ব্যর্থতার দায় কোনো একক গোষ্ঠীর নয়, বরং সবার।ব্যাংকিং খাতের বিকাশের জন্য আমানতকারী ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এই খাত ঘুরে দাঁড়ালে দেশের অর্থনীতি আরও বিকশিত হবে।

গভর্নর ড. মুনসুরের মতে, অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য ব্যাংকিং খাতকে শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের অব্যবস্থাপনা ও সংকট মোকাবিলা করতে সবার অংশগ্রহণ জরুরি। একক কোনো পক্ষ নয়, বরং সবাইকে সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।

বড় সুখবর, জাপানের সঙ্গে এই প্রথম যে চুক্তি করল বাংলাদেশ

প্রথম দেশ হিসেবে জাপানের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইপিএ) করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে চতুর্থ দফায় ঢাকায় বাংলাদেশ-জাপান বৈঠকে বসবে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম। তিনি জানান, গত ১৮-২০ ডিসেম্বর জাপানে বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের নিমিত্ত তৃতীয় দফা

আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। জাপানের সঙ্গে চলমান এই আলোচনায় বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ বছর ইতোমধ্যেই আরও দুই দফা আলোচনা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফা আলোচনা ঢাকায় ১৯-২৩ মে ২০২৪ এবং ১০-১৪ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সফলভাবে আলোচনা সম্পন্ন হলে এটি হবে যেকোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। আলোচনার চতুর্থ দফা আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় এবং পঞ্চম দফা টোকিওতে এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

মোট ২১টি অধ্যায়ের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মুখপাত্র বলেন, এগুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রেড ইন গুডস, ট্রেড ইন সার্ভিসেস, রুলস অব অরিজিন, কাস্টমস প্রসিডিউর ও ট্রেড ফেসিলিটেশন,

স্যানিটারি ও ফাইটোস্যানিটারি মেজারস, সরকারি ক্রয়, প্রতিযোগিতার নীতি, ই-কমার্স, বিনিয়োগ এবং ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ব্যবসা পরিবেশের উন্নতি।