কঠোর নীতি অবলম্বন করছেন ট্রাম্প, কপাল পুড়ছে এশিয়ার যে দুই দেশের!

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না আফগানিস্তান, পাকিস্তান। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর থেকে এশিয়ান দেশগুলো নিয়ে কঠোর নীতি অবলম্বন করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সম্প্রতি ভারতের নাগরিকদের অভিবাসন নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানায় ট্রাম্প প্রশাসন। এই নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে৷ এবার এশিয়ার আরো দুই দেশের নাগরিকদের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প।

সম্প্রতি জারি করা একটি নক্তুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আগামী সপ্তাহ থেকেই আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা তৈরি করতে পারে৷

দেশগুলোর নিরাপত্তা ও যাচাই ঝুঁকির উপরে সরকারি পর্যালোচনার ভিত্তিতে এমন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে বিষয়টি নিয়ে অবগত তিনটি সূত্র জানিয়েছেন।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তিনটি সূত্র জানিয়েছে, অন্যান্য দেশও এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকতে পারে৷ তবে তারা সেগুলোর নাম জানেন না। এটি মূলত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ৭টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ভ্রমণকারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা সিদ্ধান্তের পুনরাবৃত্তি হবে।

২০১৮ সালে কয়েক দফা সংশোধনের পর যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট থেকে এই নীতি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১ সালে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন। এটিকে জাতীয় চেতনার একটি কলঙ্ক হিসেবে অভিহিত করেন।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধানের এত মাথা ব্যথা কেন?

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের উপর যেন নেমে এসেছে শীতল কুয়াশার চাদর। অথচ ভেতরে জমছে অস্থিরতার ঢেউ। আর সেই অস্থিরতার ঢেউ থামানোর জন্য বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে দিল্লি।

ভারতের আশা, আসন্ন নির্বাচন বদলে দিতে পারে কূটনৈতিক সমীকরণ। ভারতের ধারণা, নতুন সরকার আসলেই মরিচা পড়া সম্পর্কের দা শাণিত হয়ে চকচক করবে। তবে মনে প্রশ্ন উঁকি দেয়, ভারত বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এত তাড়াহুড়ো করছে কেন! তাদের মনে কি অন্য পরিকল্পনার প্যাচ?

বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের ফলে ভারতের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের পরিবর্তন আসতে পারে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রসঙ্গে দ্বিবেদী বলেন, ঢাকায় সরকার পরিবর্তন হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক পরিবর্তিত হতে পারে। তাই এ বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেয়াটা খুব দ্রুত হয়ে যায়।

ভারত যেন বাংলাদেশের নিয়ে বেশ তসবি জপছে। বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে ভারতের অবস্থান প্রকাশ্য। নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে তারা আগ্রহের কথা জানাচ্ছে হরহামেশাই।

৭ই মার্চ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালও বাংলাদেশের দ্রুত নির্বাচন এবং নির্বাচিত সরকারের প্রসঙ্গে তাদের আগ্রহের কথা জানান। বাংলাদেশের নির্বাচন প্রশ্নে ভারতের অতি আগ্রহ সন্দেহের চোখে দেখা দরকার। মাত্র এক বছর আগে যারা সক্রিয়ভাবে বিরোধিতা করে বাংলাদেশের সুষ্ঠ নির্বাচন বানচাল করেছে এবং আওয়ামী লীগকে ডামি নির্বাচন আয়োজনে সহায়তা করেছে, তাদের এই হঠাৎ নির্বাচন প্রীতি খুব সহজ ব্যাপার নয়।

অথচ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যে কয়েকটি দল প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা প্রায় সবাই ভারতের বিপক্ষে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ভারতের বিপক্ষে মন্তব্য করতেও দেখা গেছে দলগুলোর নেতাদের। স্পষ্টভাবে বলতে গেলে বিএনপি, জামায়াত এবং নতুন দল এনসিপি প্রকাশ্যে ভারতের বিরোধিতা করেছে।

বিএনপির নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেন, “আমরা রক্ত দিয়ে এসে যে স্বাধীনতা কিনেছি, ওই স্বাধীনতা আবার বিক্রি করে দেবো! আমরা পিন্ডির কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি, এটা দিল্লির কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করবো! এই রক্ত আমাদের মধ্যে নেই।”

এনসিপির নেতা সারজিস আলম বলেন, “ভারতকে একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক তখনই হবে, যখন ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক হবে সমতার। যখন ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কিন্তু ওই বিগত ১৬ বছরে ভারত দেশের সাথে দলের যে সম্পর্ক করেছিল, ভারতের সাথে আওয়ামী লীগের যে সম্পর্ক করেছিল, সেই সম্পর্ক যদি আগামীতে তার স্বপ্ন দেখে, সেই স্বপ্ন বাংলাদেশে আর কোনদিন সফল হবে না।”

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এই তিনটি দলের সরকার গঠন করার সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে বলাই যায়, নতুন সরকার এলে ভারতের সাথে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে যতটুকু সম্পর্ক রাখা যায় সেটাই থাকবে। কারণ এর আগে পতিত আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ক্ষতি করে ভারতকে একতরফা ভাবে শুধু দিয়েই গেছে, যা আওয়ামী লীগের পতনের অন্যতম কারণ ছিল। সেই পথে অন্তত নতুন সরকার হাঁটবে না এটা এক প্রকার নিশ্চিত।

তাহলে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের এত তাড়া কেন, প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। তবে নির্বাচনের ব্যাপারে দিল্লির অতি আগ্রহ উচ্ছিলা মাত্র। বিভিন্ন মাধ্যমে গুঞ্জন রয়েছে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে ভারত পশ্চিমা কোন কোন লবিকে কাজে লাগাচ্ছে। লীগকে রাজনীতিতে ফেরাতে দেশের প্রধান সারির রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে নিপথ্যে ভারতের হয়ে পশ্চিমা শক্তি মধ্যস্থতা করছে। চলছে দেন-দরবার, সুপারিশ।

বিশ্লেষকদের ধারণা, ভারতের দ্রুত নির্বাচন করার তাগিদে নেপথ্যে আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করা এবং দ্রুত বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব বলয়ের দ্বারকে উন্মুক্ত করার বিষয় জড়িত থাকতে পারে। তবে একটা রক্তাক্ত বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হয়েছে। এই ধরনের ষড়যন্ত্র হলে নিশ্চয়ই বাংলার জনগণ সেটা রুখে দিতে প্রস্তুত থাকবে। বাংলার জনগণ আর বাংলাদেশে বারবার গণহত্যা, গণতন্ত্র হরণ, ফ্যাসিজম ও স্বৈরাচারী ব্যবস্থা কায়েম করতে দেবে না।

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বদলাবে কি না, যা জানালেন ভারতীয় সেনাপ্রধান

ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, বাংলাদেশে সরকার বদলালে দিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের পরিবর্তন আসতে পারে। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সামরিক সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী।

উভয় দেশের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবে নোট বিনিময় করে থাকে। শনিবার (৮ মার্চ) দিল্লিতে ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ নামের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেছেন। খবর এনডিটিভি ও পিটিআই’র।

এ ছাড়া পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেছেন, উভয় দেশের মধ্যে উচ্চ মাত্রার যোগসাজশ রয়েছে এবং এটা আমাদের মেনে নিতে হবে।

উপেন্দ্র দ্বিবেদী তার বক্তব্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি ও চলমান সংঘাত থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) ও নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) নিয়েও কথা বলেন।

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ‘ঘনিষ্ট’ সম্পর্কের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান দ্বিবেদী বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থলে একটি দেশ রয়েছে, সেই দেশের সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশি যেকোনো দেশের সম্পর্কের ব্যাপারে আমি উদ্বিগ্ন। আমার চিন্তিত হওয়া উচিত, কারণ সন্ত্রাসবাদের পথটি সেই দেশ থেকেও ব্যবহার করা হতে পারে। এটিই আমার উদ্বেগের প্রধান বিষয়।’

বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক প্রসঙ্গে দ্বিবেদী বলেন, ঢাকায় সরকার পরিবর্তন হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক পরিবর্তিত হতে পারে, তাই এ বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুব দ্রুত হয়ে যায়।

এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, আমি খুব স্পষ্ট করেই বলব, (বাংলাদেশ ও ভারতের) বর্তমান সামরিক-সামরিক সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী। এবং আমরা নিয়মিতভাবে নোট বিনিময় করি, যাতে যেকোনো ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বা সন্দেহ এড়ানো যায়।

এবার বাংলাদেশ নিয়ে ‘বিশেষ’ সতর্কতা জারি করল যুক্তরাষ্ট্র!

বাংলাদেশে সফরের ক্ষেত্রে নিজেদের নাগরিকদের ওপর সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। দেশটিতে সফরের ক্ষেত্রে মার্কিনিদের পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা ও সশস্ত্র সংঘাতের ঝুঁকির কারণেই এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

শনিবার (৭ মার্চ) মধ্যরাতে এ সতর্কতা জারি করা হয়। পররাষ্ট্র দপ্তরের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো কর্তৃক জারি করা লেভেল-৩ ভ্রমণ সতর্কতায় বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীরা সামান্য বা

কোনো সতর্কতা ছাড়াই পরিবহনকেন্দ্র, বাজার, শপিং মল, সামরিক স্থাপনা, বিমানবন্দর, বিশ্ববিদ্যালয়, পর্যটনকেন্দ্র, স্কুল, হাসপাতাল, উপাসনালয় ও সরকারি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা করতে পারে। এর আগে পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশের উপর এই সতর্কতা জারি করা হয়।

বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়, জানালেন ভারতের ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী’

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সবসময় সুসম্পর্ক রক্ষা করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সোমবার দেশটির বার্তা সংস্থা ইন্দো-এশীয় নিউজ সার্ভিসকে (আইএএনএস) দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ভারত সবসময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে শক্তিশালী সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।

রাজনাথ সিং বলেন, ‘‘ভারত সর্বদা তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং বাংলাদেশও আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা সর্বদা আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করি। কারণ (সাবেক প্রধানমন্ত্রী) অটল বিহারী বাজপেয়ী বলতেন, আমরা আমাদের বন্ধুদের পরিবর্তন করতে পারি; প্রতিবেশীদের নয়। সুতরাং, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।’’

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জয়সওয়াল বলেন, আমরা স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশ সমর্থন করি; যেখানে সব সমস্যার সমাধান গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, গুরুতর অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সহিংস উগ্রপন্থীদের মুক্তি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।

শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের ‘হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা’র অভিযোগের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, তারা আশা করছেন বাংলাদেশ কোনও ধরনের পার্থক্য না করেই হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীর বিরুদ্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করবে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনবে।

তিনি বলেন, আমরা বারবার গুরুত্ব দিয়ে বলেছি যে, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি তাদের সম্পত্তি এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষা করা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব। এর আগে, গত মাসে ওমানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৈঠকে সন্ত্রাসবাদকে বাংলাদেশে স্বাভাবিক করা উচিত নয় বলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানান ভারতের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ভারত-বাংলাদেশের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে জানা গেল পানি কম পাওয়ার কারণ!

কলকাতার এক পাঁচ তারকা হোটেলের বলরুমে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন নদী কমিশনের বাংলাদেশ শাখার সদস্য আবুল হোসেন। একইসঙ্গে, ভারতের পক্ষ থেকেও সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।

দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টার এই বৈঠকে মূলত গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন ও নবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি মৌসুমে গঙ্গার পানির প্রবাহ কম থাকায় দেশটি প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছে না, যার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষিকাজ ও জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পানির স্বল্পতার কারণে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিনিধি দল গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৪টি, এবং প্রতিটি নদী নিয়েই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও মতবিরোধ রয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী নদীগুলোর খনন ও নিরাপত্তা ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করতে আগামী শুক্রবার যৌথ কমিশনের টেকনিক্যাল কমিটির আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিশেষ কোনো আলোচনা করবে না বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ২০২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দুই দেশের যৌথ কমিটি নতুন খসড়া চুক্তির খসরা চূড়ান্ত করবে।

পরবর্তী বৈঠক ও সম্ভাব্য সমাধান
বৈঠকের পর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী বৈঠকগুলোতে গঙ্গার পানি বণ্টন ছাড়াও অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, নদী খনন এবং নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী নদীগুলোর পানি প্রবাহ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি যৌথ সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই অভিন্ন নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে দুই দেশের সদিচ্ছার ভিত্তিতে এই সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জিম্মি মুক্তির বিষয়ে হামাসকে শেষ ‘সতর্ক বার্তা’ দিলেন ট্রাম্প!

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের উদ্দেশ্যে ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সতর্কবার্তায় তিনি হামাস নেতাদের গাজায় আটক থাকা সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দিতে এবং গাজা ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা ও বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় আটক থাকা সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দিতে হামাসের উদ্দেশ্যে ‌‘শেষ সতর্কতা’ জারি বরেছেন এবং ফিলিস্তিনি এই গোষ্ঠীটির নেতাদের গাজা উপত্যকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন।

মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে এই হুমকিটি এমন এক সময়ে এলো যখন হোয়াইট হাউস ১৯৯৭ সালের পর প্রথমবারের মতো মার্কিন-ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তি এবং গাজা যুদ্ধের অবসানের জন্য হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে গাজা ভূখণ্ডের ওপর অবরোধ জারি করে রেখেছে ইসরাইল। এতে সেখানকার ফিলিস্তিনিরা দিনে দিনে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ছে কারণ ইসরাইলের অবরোধ খাদ্যের মূল্য ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং খাদ্য সংকটের সৃষ্টিও করেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করেছে, তাদের স্টকে যে খাবার রয়েছে তা দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যেতে পারে।

এমন অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা ভূখণ্ডে আটক থাকা সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার দাবির অংশ হিসাবে হামাস এবং গাজার জনগণের উদ্দেশ্যে হুমকিবার্তা দেন। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বন্দিদের মুক্তি না দিলে চড়া মূল্য দিতে হবে।

পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, এটি আপনাদের জন্য শেষ সতর্কতা! (হামাসের) নেতৃত্বের জন্য এখন সময় এসেছে গাজা ত্যাগ করার। আপনাদের জন্য এখনও এই সুযোগটি রয়েছে।

তিনি আরও লিখেছেন, এছাড়াও, গাজার জনগণের কাছে (আমার বার্তা): আপনাদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে, কিন্তু আপনারা যদি জিম্মিদের আটকে রাখেন তাহলে তেমনটি হবে না। যদি আপনারা তেমন কিছু করেন, তাহলে আপনি মৃত! স্মার্ট সিদ্ধান্ত নিন।

আল জাজিরা বলছে, ওয়াশিংটন হামাসের সঙ্গে আলোচনায় নিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি হোয়াইট হাউস নিশ্চিত করার কয়েক ঘণ্টা পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্স থেকে এই মন্তব্য করা হলো। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ‘দূত’ অ্যাডাম বোহেলার কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।

হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি এ আলোচনা ‘অভূতপূর্ব’ ঘটনা। কারণ দেশটি এর আগে কখনো সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেনি। ১৯৯৭ সালে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী দলটিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তকমা দিয়েছিল মার্কিন সরকার।

কংগ্রেসে প্রথম ভাষণে ‘নিজের ঢাক নিজে পেটালেন’ ট্রাম্প

দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রথম ভাষণেই রেকর্ড গড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট ধরে দেওয়া এই ভাষণ মার্কিন পার্লামেন্টের ইতিহাসে দীর্ঘতম ভাষণগুলোর একটি। এর আগে ২০০০ সালে বিল ক্লিনটন স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে এক ঘণ্টা ২৮ মিনিট বক্তব্য দিয়েছিলেন।

নিজ প্রশাসনের নেওয়া বিভিন্ন বিতর্কিত পদক্ষেপের পক্ষে সাফাই গেয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, মাত্র ৪৩ দিনেই তিনি যা অর্জন করেছেন, তা অনেক প্রেসিডেন্ট আট বছরেও করতে পারেননি।

তিনি বলেন, “ছয় সপ্তাহ আগে আমি এই ক্যাপিটালের নিচে দাঁড়িয়ে আমেরিকার স্বর্ণযুগের সূচনার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেই সময় থেকেই আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল যুগ প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। এটি কেবল শুরু।”

ভাষণে ট্রাম্প সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দেন। কংগ্রেসকে আহ্বান জানান, ভূমি প্রতিরক্ষায় ‘গোল্ডেন ডোম মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম’ গঠনের জন্য তহবিল বরাদ্দ দিতে।

তিনি বলেন, “কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে আমার লক্ষ্য ভবিষ্যতে সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গড়ে তোলা।” রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্প দাবি করেন, “যুদ্ধ বন্ধ হওয়া উচিত, আর শান্তির জন্য প্রস্তুত রাশিয়া। আমরা জোরালো সংকেত পেয়েছি যে তারা আলোচনায় আগ্রহী।”

ইউরোপের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব বাড়ানোর পাশাপাশি শুল্ক আরোপ করে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এছাড়া, গ্রীনল্যান্ড এবং পানামা খালের মালিকানা ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাও পুনর্ব্যক্ত করেন ট্রাম্প। অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করে তিনি দাবি করেন, গত মেয়াদে দুই কোটির বেশি অভিবাসী অনুপ্রবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে।

দীর্ঘ ভাষণে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ধনকুবের ইলন মাস্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন ট্রাম্প। যদিও কী কারণে বা কোন প্রসঙ্গে তাকে প্রশংসিত করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি। ট্রাম্পের এই ভাষণ তার আত্মপ্রচারমূলক বক্তব্যে ভরা ছিল বলে সমালোচকদের দাবি।

তবে তার সমর্থকদের মতে, এটি ছিল একটি দৃঢ় ও আত্মবিশ্বাসী অভিভাষণ, যেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।

এবার বাংলাদেশ ইস্যুতে জাতিসংঘে নাক কাটা গেল ভারতের!

বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিরক্ষী পাঠানো ভারতের এবার জাতিসংঘে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নাক কাটা গেল। কাশ্মীর ও মণিপুরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে।

জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ভারতজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম সভায় গাজা, ইউক্রেন, আফগানিস্তানের পাশাপাশি ভারতের নামও উঠে আসে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, কাশ্মীরে চলছে তীব্র দমন-পীড়ন। বিশেষ করে মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়নের ঘটনা বাড়ছে।

শুধু কাশ্মীরই নয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের চলমান সহিংসতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা চলা এই রাজ্যের সংকট সমাধানে ভারত সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, দিশেহারা ভারত!

পশ্চিমাদের একরে পর এক নিষেধাজ্ঞায় ভয়ানক চাপে পড়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যতই নরেন্দ্র মোদিকে বন্ধু বলে সম্বোধন কুরন না কেন ঠিকই মোদির উপর শুল্ক আরোপ আর নিষেধাজ্ঞার খড়গ ছাপিয়ে দিয়েছেন।

শুধু যুক্তরাষ্ট্র কেন যুক্তরাজ্য, ইইউর নিষেধাজ্ঞার কপটে পড়েছে বেশ কিছু ভারতীয় কোম্পানি। এর মধ্যে আছে জয়পুরভিত্তিক ইলেকট্রনিক্স বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান ইউনিসিয়া ইমপেক্স প্রাইভেট লিমিটেড, রুশ বার্তা সংস্থা আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সেমাবার এই কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনছে লন্ডন এবং ব্রাসেলস কর্তৃপক্ষ।

শুধু তাই নয় ইইউর নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসছে প্রতীক কর্পোরেশন যেটি মুম্বাইভিত্তিক একটি কোম্পানি যেটি মোটরগাড়ি পণ্য তৈরি করে থাকে। আরটি বলছে রাশিয়া এবং ইরানের সাথে বাণিজ্য করায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।