দেশের ৬ অঞ্চলে রাতের মধ্যেই ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

ঢাকাসহ দেশের ৬ অঞ্চলের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

সোমবার (১৭ মার্চ) রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাদারীপুর, ঢাকা এবং কুমিল্লা অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে

ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

মার্চ মাসেই শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড়ের প্রবল আশঙ্কা, নদীবন্দরগুলোতে রয়েছে সতর্ক সংকেত!

চৈত্রের শুরুতেই কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বাভাস দিলেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ে পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ। তার তথ্য মতে, চলতি মাসেই সারা দেশে তিনবার কালবৈশাখী ঝড়ের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) তার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য দেন তিনি। পোস্টে তিনি লেখেন, শনি ও রোববার (১৫ ও ১৬ মার্চ) সিলেট, ময়মনসিংহ (নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলা), চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

এ অবস্থায় আগামী বৃহস্পতি থেকে রোববার (২০ থেকে ২৩ মার্চ) খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

শুক্র থেকে সোমবার (২৮ থেকে ৩১ মার্চ) রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এ দিন ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শনিবার (১৫ মার্চ) আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

শিলাবৃষ্টি সহ তীব্র কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর

ফাল্গুনের শেষ দিকে এসে বেড়েছে ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি, এবং তাপমাত্রার পারদও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আবহাওয়া অধিদফতর চলতি মার্চ থেকে মে পর্যন্ত দেশের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে, যেখানে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি তীব্র কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি এবং তাপপ্রবাহের মতো বিপজ্জনক আবহাওয়া পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।

পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী তিন মাসে অন্তত ৮ দিন বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে এবং ২ থেকে ৩ দিন তীব্র কালবৈশাখী ঝড়ও দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে, মার্চ থেকে মে মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি হওয়া সাধারণ ঘটনা হবে, তবে এগুলোর তীব্রতা এবং ঘণত্ব কখনও বেশি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতরের মতে— এই সময়ের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ২ থেকে ৩টি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি নিম্নচাপে এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি বিপদের আশঙ্কা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য। ঘূর্ণিঝড়টি যদি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে, তবে তীব্র ঝড়, বৃষ্টি এবং জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো—এই তিন মাসে দেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ৪ থেকে ৭টি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এই তাপপ্রবাহগুলোর তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে, যা মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে গণ্য হয়। তবে, কয়েকটি অঞ্চলে তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে পরিচিত।

এছাড়া, কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে আসা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতাসের গতিবেগও ভয়াবহ হতে পারে, যা স্থানীয়ভাবে বৃক্ষপতন এবং তীব্র বৃষ্টির সৃষ্টি করতে পারে। এসব আবহাওয়ার কারণে কৃষি, সাধারণ জীবনযাত্রা এবং পরিবহন ব্যবস্থায় সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।