মাগুরায় সেই ‘শয়তানের বাড়ি’ গুঁড়িয়ে দিল এলাকাবাসী!

মাগুরার শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িকে ‘শয়তানের বাড়ি’ আখ্যা দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয়রা। শুক্রবার ওই বাড়ির ইট-কাঠ, দরজা-জানালা থেকে শুরু করে সবকিছু ভেঙে খুলে নিয়ে যায় তারা। বাড়ির গাছপালাও কেটে নেয় অনেকে। এর আগে বৃহস্পতিবার বাড়িটিতে আগুন দেওয়া হয়েছিল।

জানা যায়, মাগুরার শহরতলি নিজনান্দুয়ালী গ্রামের মাঠপাড়ায় হিটু শেখের বাড়ি। এ বাড়িতেই বেড়াতে এসে ৫ মার্চ রাতে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল শিশুটি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। সন্ধ্যা ৭টায় মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে শিশুটির প্রথম জানাজা শেষে বিক্ষুব্ধ লোকজন হিটু শেখের বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়।

শুক্রবার দ্বিতীয় দফায় তার বাড়িতে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। বিকাল ৩টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, শত শত লোক ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে বাড়িটি ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। অনেকে হাতুড়ি-শাবল নিয়ে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন। কেউ দরজা-জানালাসহ ঘরের বিভিন্ন জিনিস নিয়ে যাচ্ছেন। এর আগে সকাল থেকে বাড়ির গাছপালাও কেটে নিয়ে যান কেউ কেউ।

হাতুড়ি হাতে বাড়িটির দেওয়াল ভাঙার কাজে যোগ দেওয়া নিজনান্দুয়ালী গ্রামের মোস্তাক হোসেন বলেন, হিটুর এ বাড়িটি শয়তানের বাড়ি। এ বাড়িতে শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তাই বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়াই ভালো।

ধর্ষণের ঘটনায় ৮ মার্চ হিটু শেখের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সদর থানায় মামলা করেন শিশুটির মা। ওই মামলায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এনে আসামি করা হয়েছে হিটু শেখের স্ত্রী জাহেদা, দুই ছেলে রাতুল ও সজিবকে। চার আসামিকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তারা বর্তমানে মাগুরা কারাগারে আছে।

শিশুটির কবর ঘিরে শোকাহত সহপাঠীরা
শিশুটির সহপাঠীরা শুক্রবার তার কবরে গিয়ে শোক প্রকাশ করেছে। দুপুর ৩টায় শিশুর দাদাবাড়ির ওই কবরস্থানে গিয়ে দেখা যায়, একই বয়সি কয়েকটি শিশু কবর ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। সবার চোখে পানি টলমল করছে। শোকাহত হাসিবুল জানায়, শিশুটি তার সঙ্গে একই বিদ্যালয়ে পড়ত। সে অনেক ভালো ছাত্রী ছিল। একসঙ্গেই তারা স্কুলে যাওয়া-আসা করত। তার এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।

এদিকে সকালে শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে শিশুটির বাড়িতে যান জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, মাগুরার সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সংসদ-সদস্য নেওয়াজ হালিমা আরলি, মাগুরা জেলা বিএনপি সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রেজাউল হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা শিশুটির পরিবারের খোঁজখবর নেন। আগামী দিনে অসচ্ছল এ পরিবারটির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তারা।

মাগুরা কারাগার ঘেরাও শিক্ষার্থীদের
ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে শুক্রবার দুপুরে মাগুরা কারাগার ঘেরাও করেন মাগুরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। জুমার নামাজের পর শিক্ষার্থীরা কারাগারের সামনে মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে সড়কের উভয় পাশে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে। পরে তারা সড়ক ছেড়ে কারাগারের মূল ফটকের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন।

এবার ৯ বছরের শিশু ধ’র্ষ’ণের ঘটনায় থানা ঘেরাও

মেহেরপুরে ৯ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি জামিন পেয়ে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল করেন। এর প্রতিকার চেয়ে বাদী থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) অভিযুক্ত ধর্ষককে বাঁচাতে পক্ষপাতিত্ব করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে মেহেরপুর সদর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ছাত্র-জনতা।

জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে মদনাডাঙ্গা গ্রামের বায়েজিদ নামের যুবক। ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে বায়েজিদের সঙ্গী আলামিন হোসন।

এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদি হয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ, আলামিন ও বরকত আলী নামের তিন জনের নামে আদালতে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হন।

ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নিতে বলে আসামিরা। ব্ল্যাকমেইল করে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকাও দিয়েছে তারা। এরপর এক পর্যায়ে এ ভিডিও তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়।

এ ঘটনায় ধর্ষণ মামলার বাদী প্রতিকার চেয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি মীমাংসা জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার এসআই সুজয় কুমার উভয়পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন। এ সময় এসআই সুজয় কুমার ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষ থেকে বাদীকে চাপ দিতে থাকেন।

ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে খবর পেয়ে থানায় থানায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী তুষার ও সিয়াম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই সুজয় কুমার থানার মধ্যেই তুষার ও সিয়ামকে মারধর করেন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেন। এসআই সুজয় কুমার ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবিতে থানা ও থানার আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্র জনতা।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সেনাবাহিনীর একটি দল থানায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে মেহেরপুর পুলিশ সুপার মাকছুদা খানম বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিয়ে পুলিশ সুপারের বক্তব্য প্রত্যাখান করেন। তবে শেষ পর্যন্ত ছাত্ররা তিনটি শর্তের মধ্যে এক ঘণ্টা সময় বেধে দেয়।

রাত সাড়ে ১২টার সময় পুলিশ সুপার এসআই সুজয়কে ক্লোজ করার ঘোষণা দিলে ছাত্ররা থানা চত্বর ত্যাগ করে। পুলিশ সুপার মাকসুদা আখতার খানম বলেন, ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী উপরিদর্শক (এসআই) সুজয় কুমার মল্লিককে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত অন্য দুজনকে আটক করতে সেনাবাহিনীসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না মাগুরায় নি’র্যাতিত সেই শিশুটিকে

ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাগুরার সেই শিশুটি মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বেলা ১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সিএমএইচের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল নাজমুল হামিদ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সেই সঙ্গে বাহিনীটি শিশুটির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।

অধ্যাপক কর্নেল নাজমুল হামিদ বলেন, আজ সকালবেলা দুই দফায় শিশুটির কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। সিপিআর দেওয়ার পর তার হৃৎস্পন্দন ফিরে আসে। কিন্তু বেলা ১২টায় তার আবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এই দফায় সিপিআর দেওয়ার পরও তার হৃৎস্পন্দন আর ফিরে আসেনি। বেলা ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ দুপুর ১টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

সিএমএইচের সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসেনি। গত ৮ মার্চ শিশুটিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।

মাগুরার সেই শিশুটির ব্রেনফাংশন করছে না, জানা গেল সর্বশেষ অবস্থা

মাগুরার শিশুটির শারীরিক অবস্থা ‘অত্যন্ত সংকটাপন্ন’ বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বেলা সোয়া ১১টার দিকে এক বার্তায় তারা জানায়, আজ আরও দুই বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে আট বছর বয়সী শিশুটির।

তার ব্রেনফাংশন করছে না; জিসিএস (কোমা) লেভেল ৩। রক্তচাপ ও অক্সিজেন লেভেলও অনেক কম। শিশুটি বর্তমানে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের শিশু আইসিইউতে আছে।

গত ৮মার্চ সন্ধ্যায় শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিএমএইচে আনা হয়। বুধবার শিশুটির চারবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় বলে সেনাবাহিনীর এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়।

গত পাঁচই মার্চ শিশুটি মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়। ওই ঘটনায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন তার মা।

মামলা দায়েরের পর শিশুটির বোনের স্বামী, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তারা রিমান্ডে আছে।

মসজিদে ঢুকে ৩ ভাইকে হত্যা, প্রধান আসামি গ্রেফতার!

মাদারীপুরে মসজিদে ঢুকে তিন ভাইকে হত্যার ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত হোসেন সরদারকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। রাজধানী ঢাকার আশুলিয়া থানার চিত্রাশাইল থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে র‍্যাব-৮-এর হেডকোয়াটার্স বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নিস্তার আহমেদ।

তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি। গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামি হোসেন সরদার নিহত তিন ভাইয়ের আপন চাচা। বালু উত্তোলন নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল।

কর্নেল আহমেদ বলেন, যারা নিহত হয়েছেন এবং হত্যায় যারা অভিযুক্ত তারা সবাই একসময়ে আওয়ামী লীগের সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বালু ব্যবসা ও বালু মহলার ইজারা নিয়ে বিরোধের সূত্র ধরে হোসেন সরদারের নেতৃত্বে ৮ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৮০/৯০ জনের দল নিয়ে চারটি বাড়িতে হামলা চালায়।

প্রাণ বাঁচাতে ভিক্টিমরা বাড়ির সামনের মসজিদে আশ্রয় নিলে হোসেন সরদারের নেতৃত্বের সন্ত্রাসীরা মসজিদে ঢুকে সাইফুল সরদার, তার ভাই আতাউর সরদারকে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে।

এ ছাড়া তাদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদারকে (১৮) গুরুতর জখম করলে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হামলাকারীরা আরও পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম করে এবং নিহতদেরসহ চারটি বাড়িতে আগুন দিয়ে লুটপাট করে।

অধিনায়ক বলেন, এই ঘটনায় মোট ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। র‍্যাব-৮-এর অধীনে মাদারীপুর ক্যাম্পের পৃথক অভিযানে সুমন সরদার (৩৩) নামে এজাহারভুক্ত আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাবি ছাত্র ও তার মাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত!

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বখাটে মাকে বিশেষ অঙ্গ দেখানোর প্রতিবাদ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও তার মাকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত বখাটে মাদকসেবী ছাত্রলীগ কর্মী। গুরুতর আহত অবস্থায় ছেলে ও মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের দিঘীবালী গ্রামে মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দিলীপ হালদারের ঘরের পাশের কচুগাছ কাটতে যান মনোরঞ্জন হালদার।

এ ঘটনায় প্রতিবাদ করেন দিলীপের মা গীতা রানী হালদার। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে গীতা রানী হালদারকে তার পুরুষাঙ্গ দেখান মনোরঞ্জন হালদারের ছেলে মাদকসেবী ছাত্রলীগ কর্মী মিঠুন হালদার।

মাকে পুরুষাঙ্গ দেখানোর প্রতিবাদ করতে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দিলীপ হালদারকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাদকসেবী ছাত্রলীগ কর্মী মিঠুন হালদার কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।

ছেলেকে বাঁচাতে গেলে মা গীতা রানী হালদারকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে মিঠুন ও তার পরিবারের লোকজন। গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

কুপিয়ে আহত করার কথা অস্বীকার করে মিঠুনের পিতা মনোরঞ্জন হালদার বলেন, ঘরের পাশের কচুগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়েছে। আমি ও আমার স্ত্রীও আহত হয়েছি।

এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুশংকর মল্লিক সাংবাদিকদের বলেন, কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোয়েন্দা অনুসন্ধান: ডাকাতি ও ছিনতাই নিয়ে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মতো অপরাধ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ার পেছনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ অনেকাংশে দায়ী। নিষিদ্ধ ঘোষিত এ সংগঠনটির মাস্টারমাইন্ডরা পরিকল্পিতভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পেশাদার অপরাধীদের নানা পন্থায় মাঠে নামাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাও যুক্ত হচ্ছে। এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন অ্যাপস গ্রুপের মাধ্যমে। গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এদিকে এ চক্রের পুরো নেটওয়ার্ককে চিহ্নিত করতে জড়িতদের তালিকা প্রণয়নসহ পাঁচ ধরনের তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের উচ্চপর্যায় থেকে ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, মূলত পাঁচটি বিষয়ে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে নির্দেশনায়। এর মধ্যে রয়েছে-নিষিদ্ধ সংগঠনটির নেতাকর্মীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা, সামাজিক কার্যক্রম এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে হালনাগাদ খবরাখবর রাখা। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এই নির্দেশনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পূর্ণ নাম ও পরিচয়, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর (যদি থাকে), রাজনৈতিক পরিচয় ও সংগঠনে অবস্থান, অতীত ও বর্তমান কার্যক্রমের বিবরণ, জিডি বা মামলা থাকলে তার তথ্য জরুরি ভিত্তিতে দিতে বলা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, হয়রানি বা মামলার জন্য নয়, নিষিদ্ধ এই সংগঠনটির নেতাকর্মীদের কার্যক্রম এবং গতিবিধি নজরদারিতে রাখতেই তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। তাদের দাবি, যে কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের জন্য এসব তথ্য প্রয়োজন। শুধু ছাত্রলীগ নয়, নিষিদ্ধ সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে।

ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর পর থেকেই মূল দল আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও আত্মগোপনে চলে যান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ছাত্র সমাজের দাবির মুখে গত বছরের ২৩ অক্টোবর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।

গোয়েন্দা তথ্য বলছে, আত্মগোপনে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে কিছুদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। যে রকম সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা করা হয়েছিল সেটি হয়নি। কিন্তু এক মাস ধরে হঠাৎ করেই সামাজিক অস্থিরতা বেড়ে গেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই, ডাকাতির মতো ঘটনা বেড়ে চলেছে। তবে এসব অপরাধের বেশির ভাগ পরিকল্পিত এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাত রয়েছে। এ অবস্থায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরও সতর্ক ও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিষিদ্ধ এই সংগঠনটির নেতাকর্মীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলেও মত দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

একই অভিযোগ রয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকেও। তাদের মতে, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের হাতে অবৈধ অস্ত্র ছাড়াও কালোটাকাও আছে। এ দুই শক্তিতে ভর করে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। এজন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গতিবিধি অনুসরণ করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জেলা পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর আবার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে থানায় থানায় চিঠি দিয়ে দ্রুত তাদের তালিকা সংগ্রহ করে সদর দপ্তরে পাঠাতে বলা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন। আইন অনুযায়ী এদের সব কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাদের মতে, কোনো দমন-পীড়ন, হয়রানি বা মামলা করতে নয়; রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের তথ্য-উপাত্ত যাচাই করা হচ্ছে। শুধু ছাত্রলীগই নয়, হিজবুত তাহরির, সশস্ত্র সর্বহারা পার্টিসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত অন্যান্য দল এবং সংগঠনের বিষয়েও খোঁজখবর নিচ্ছেন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মুখপাত্র) ইনামুল হক সাগর সোমবার যুগান্তরকে বলেন, মামলার আসামিদের খোঁজখবর রাখা মামলা তদারকির নিয়মিত অংশ। তবে ছাত্রলীগের তালিকার চিঠির বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপাররা বিস্তারিত বলতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরল হুদা যুগান্তরকে বলেন, কেউ রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ হলে পুলিশ তার তালিকা করবে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে-এটাই স্বাভাবিক। এটি বিশেষ কোনো দলের জন্য নয়, যে কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের জন্যই প্রযোজ্য।

অভিযোগ রয়েছে, এরই মধ্যে আত্মগোপনে থাকা সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অনেকেই ভোল পালটাতে শুরু করেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র সংগঠনে আশ্রয় নেওয়ার পথ খুঁজছেন তারা। দলগুলোও আবার নিজেদের প্রভাব বলয় ও শক্তি বাড়াতে কাছে টানছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত এই সংগঠনের নেতাকর্মীদের। এর বাইরে আত্মগোপনে থাকা সংগঠনটির অধিকাংশ নেতাকর্মী নানা উপায়ে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে তথ্য মিলেছে। জানা গেছে, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, সিগন্যালসহ বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে এরা সংগঠিত হওয়াসহ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। এছাড়া সমাজে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য, মাদকসেবীসহ চিহ্নিত অপরাধীদের কাজে লাগাচ্ছে। এদের ব্যবহার করে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করাচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজনমতো আর্থিক বিনিয়োগও করা হচ্ছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। কিছুদিন আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি অডিও ভাইরাল হয়। ঢাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে বিদেশে পলাতক আওয়ামী লীগের এই নেতা নির্দেশ দেন। এজন্য যা যা করণীয় তিনি করবেন বলেও অডিও বার্তায় শোনা যায়। অডিও বার্তায় জাহাঙ্গীর আলমকে বলতে শোনা যায়, ‘যে শহরে আমাদের নেতাকর্মী দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবে না, সে শহরে রাতে কেউ ঘুমাতে পারবে না।’ এ বক্তব্য শোনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নড়েচড়ে বসে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের পর সংগঠনটির পুনর্গঠন বা বিকল্প শক্তি তৈরির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিশেষ করে একটানা ক্ষমতার ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের মূল লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবেই পরিচিতি পায় নিষিদ্ধ ঘোষিত এই সংগঠনটি। এরা হেলমেট বাহিনী বলেও পরিচিত। ক্যাম্পাসগুলোতে এমন কোনো অন্যায়, অনাচার নেই, যা তাদের হাত ধরে ঘটেনি। রুম দখল, টর্চার সেল তৈরি করে নিরীহ ছাত্রদের দমন-পীড়ন, হয়রানি-নির্যাতন, টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি-জবরদখল-সর্বত্রজুড়ে ছিল ছাত্রলীগের নাম। কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে ছাত্রলীগের কথাই ছিল আইন। এই আইন অমান্যের শাস্তি ছিল ভয়াবহ এবং নির্মম। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর সেই চিরচেনা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সদস্যরা চলে যান আত্মগোপনে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল এ প্রসঙ্গে সোমবার যুগান্তরকে বলেন, একটি ছেলে বা একটি মেয়ে এক সময় ছাত্রলীগ করেছে, এটা অপরাধ নয়। কিন্তু ছাত্রলীগ করার নামে যারা নানা সময়ে অপরাধ করেছে, যারা চিহ্নিত অপরাধী, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, মামলা রয়েছে-তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে এই অপরাধীরা নতুন করে সংগঠিত হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াবে। এমনকি এরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে আশ্রয় নেওয়ারও চেষ্টা করবে। কেউ যাতে তাদের আশ্রয় না দেয়, এটিও নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নিরপরাধ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন-তাও নিশ্চিত করতে হবে।

‘মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়াহীন’! মাগুরার সেই শিশুটির শারীরিক অবস্থা আবারও অবনতি

মাগুরার সেই শিশুর শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তার ‘মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়াহীন’ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক। মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গতকাল সোমবার সামান্য উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু আজ শিশুটির মস্তিষ্ক প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে পড়েছে। ঘটনার সময় শিশুটিকে যখন ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়, তখন তার মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়।

পরদিন বেলা ১১টায় হাসপাতালে নেওয়ার আগপর্যন্ত ওই অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল। ফলে দীর্ঘ সময় অক্সিজেন না পেয়ে মস্তিষ্কের বড় ক্ষতি হয়েছে। শিশুটির চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে গঠিত বোর্ডের এক চিকিৎসক ও শিশুটির স্বজনের সঙ্গে আজ সকালে কথা বলে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানা গেছে।

চিকিৎসক জানান, গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) (মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে কোনো ব্যক্তির চেতনার মাত্রা পরিমাপ করা হয়) আবারও ৩–এ নেমে এসেছে। স্বাভাবিক মাত্রা ১৫। জিসিএস ৩ অবস্থাকে মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থা বলে বিবেচনা করা হয়। গতকাল সকাল থেকে তার জিএসএস ৩ থেকে উন্নতি হয়ে ৫–এ উঠেছিল বলে অবস্থার কিছুটা উন্নতি ধরে নেওয়া হয়েছিল।

বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের এই শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন শিশুটির মা। শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিআইসিইউ থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শিশুটিকে এখনো লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

সিএমএইচের প্রধান সার্জনকে প্রধান করে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডে রয়েছেন সার্জিক্যাল বিশেষজ্ঞ, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, প্লাস্টিক সার্জন, শিশু নিউরোলজি বিভাগ, অ্যানেসথেসিয়া, শিশু হৃদ্‌রোগ বিভাগ, শিশু বিভাগের সার্জন, ইউরোলজি বিভাগ ও থোরাসিক সার্জন বিভাগের চিকিৎসকেরা।

মেয়েটির শখের ফোন ছোঁ মেরে নিয়ে পালায় যুবক, দেবদূতের মতো ধরলেন এক শিক্ষার্থী, তারপর…

সোমবার দুপুর একটা। রমজানের মধ্য দুপুরে রাজধানীর পল্টন মোড়ে অন্য সময়ের মতো গাড়ির জটলা। কিন্তু কে জানত যানজটের মধ্যে বড় বিপদে পড়বেন মায়ের সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা করতে রওনা হওয়া সিদ্ধেশ্বরী কলেজের শিক্ষার্থী সাবিনা (ছদ্মনাম)। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েকে অনেক কষ্টে একটা স্মার্ট ফোন কিনে দিয়েছিলেন বাবা-মা। বাসের জানালার পাশে বসে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছিল মেয়েটি। হঠাৎ কল আসায় মোবাইল বের করতেই ছিনতাইকারী ছোঁ মেরে নিয়ে পালিয়ে যায়।

শখের মোবাইলটি হারিয়ে মা-মেয়ে যখন পাগলপ্রায় তখন পেছনে আরেকটি বাস থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা দেখছিলেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম। দেবদূতের মতো নেমে এসে ছিনতাইকারীকে ফলো করে আরেকটি বাস থেকে ধরে ফেলেন। উদ্ধার করে দেন মেয়েটির মোবাইলটি।

এরপরই শুরু হয় ছিনতাইকারীকে গণধোলাই। আশপাশের লোকজন, চলতি পথের লোকজন যে যেভাবে পারছেন উত্তম-মাধ্যম দিতে থাকেন মোবাইল নেয়া যুবককে। পরে পল্টন মোড়ে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশ এসে ছিনতাইকারী উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছিনতাইয়ের শিকার মেয়েটি মাকে নিয়ে নিউমার্কেট যাচ্ছিলেন। হেডফোনে কথা বললেও হঠাৎ ফোন আসায় ব্যাগ থেকে মোবাইলটি বের করা মাত্রই ওৎপেতে থাকা ছিনতাইকারী আচমকাই সেটি থাবা দিয়ে নিয়ে সটকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে বাস থেকে নেমে পড়েন মেয়েটির মা। পেছনে বিআরটিসির আরেকটি বাস থেকে ছিনতাইয়ের দৃশ্য দেখে দ্রুত নেমে আসেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আশরাফুল ইসলাম।

ঢাকা মেইলকে আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার পুরো চোখটাই কেন যেন সামনের বাসের জানালায় ছিল। যখন দেখলাম মোবাইলটা নিয়ে লোকটা দ্রুত চলে যাচ্ছে তখন আর বসে থাকতে পারলাম না। ফলো করতে করতে দেখি ছিনতাইকারী সামনে ট্রান্সসিলভা পরিবহনের একটা বাসে উঠে পড়েছে। বাসে উঠে ধরে ফেললাম ওকে। সঙ্গে সঙ্গে ফোন হারানো মেয়েটির মাও আসেন।

ধরে ফেলার পর ছিনতাইকারী ধারালো একটি জিনিস দিয়ে শরীরে আঘাত করার চেষ্টা করেছে জানিয়ে এই শিক্ষার্থী বলেন, ভালো করে আঘাত করতে পারলে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যেত। আল্লাহ রহমত করেছেন। এরপর আর নিজেকে স্থির রাখতে পারিনি। বাস থেকে নামানোর পর লোকজন গণধোলাই দিয়েছে। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে গেছে।

এদিকে ঘটনাস্থলে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ছিনতাইকারীকে আমরা উদ্ধার করে পাশে বক্সে আটকে রেখেছি। থানা পুলিশের কাছে দেওয়ার পর তারা ব্যবস্থা নেবে।

নিশ্চিত খোয়া যাওয়া ফোন ফিরে পেয়ে খুশি হলেও এমন ঘট্নায় বেশ ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী ও তার মা। তারা বলেন, এমন করে যদি রাস্তায় বের হলে ফোন খোয়া যায় তাহলে আমরা কোথায় যাব? এই ধরনের কাজ যারা করবে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ফোন উদ্ধার করতে সহযোগিতা করার জন্য আশরাফুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানান ফোন হারানো সেই শিক্ষার্থী ও তার মা।

মাগুরার সেই শিশু আছিয়ার বর্তমান অবস্থা সংকটাপন্ন

মাগুরার শিশু আছিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) কর্তৃপক্ষ।

সিএমএইচের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বুকে প্রচণ্ড চাপ দেওয়ায় শিশুটির ফুসফুসের বিভিন্ন জায়গায় বাতাস জমে গেছে।

রোববার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অতিরিক্ত বাতাস বের করে বুকে টিউব বসানো হয়েছে। অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে তার মস্তিষ্কেও ক্ষতি হয়েছে।

শিশুটির মা ফোনে জানান, হাসপাতালে মেয়ের শয্যাপাশে আছেন তিনি। কোনো নড়াচড়া নেই। সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন।