ধর্ষকদের ধরিয়ে দিতে ‘পুরস্কার ঘোষণা’ করলেন তাসরিফ!

মাগুরা জেলায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় হতবাক হয়েছেন সারাদেশের মানুষ। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এ ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় বইছে। শোবিজের তারকারাও ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। যথাযথ বিচারের দাবি করছেন। তরুণ প্রজন্মের গায়ক তাসরিফ খানও তার ফেসবুকে এ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে ধর্ষকদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন গায়ক।

তিনি লিখেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ, প্রকৃত ধর্ষকের ছবি আপনারা ভেরিফায়েড পেজ অথবা ওয়েবসাইট থেকে আপলোড করে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করুন। বাকিটা আমরা দেখতেছি!’

তাসরিফ এ স্ট্যাটাসের সঙ্গে তার অনুরাগীরা সহমত প্রকাশ করেছেন। মো. ইয়াসিন নামের একজন মন্তব্য করে লিখেছেন, ‘ভাই পুরস্কার দেওয়া লাগবে না খালি পিক দিলেই হবে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ বাকিটা দেখে নিবো।’

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশুটি এই মুহূর্তে হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনা দেশের মানুষের মনে দাগ কেটেছে। গত বৃহস্পতিবার বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে আট বছরের সেই শিশু।

আজও মশাল মিছিল ও বিক্ষোভে উত্তাল ঢাবি ক্যাম্পাস!

দেশব্যাপী ধর্ষণের প্রতিবাদে আজও বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিশু আসিয়াসহ সকল ধর্ষকের বিচারের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার (০৯ মার্চ) রাত ৮টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার রাজুতে গিয়ে শেষ হয়।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টায় আত্মপ্রকাশ করা ‘ধর্ষণ বিরোধী মঞ্চ’র ব্যানারে হওয়া মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারের অধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই বিভিন্ন হলের নারী শিক্ষার্থী।

এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘জাস্টিস ফর তনু’, ‘জাস্টিস ফর আসিয়া’, ‘ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ধর্ষকের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’- ইত্যাদি স্লোগানে প্রকম্পিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশ-বাতাস।

উত্তরার এক মসজিদে কিল-ঘুষিতে গুরুতর আহত এক মুসল্লী!

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের কাছে উত্তরার একটি মসজিদে ইমাম সাহেবের সাথে দেখা করে কোলাকুলি করার সময় তাবলীগ জামাতের বিবাদমান এক গ্রুপের কর্মীদের কিল-ঘুষি মারধরের শিকারে সাদপন্হীদের এক সাথী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

সাদপন্হীদের অন্যতম মিডিয়া মুখপাত্র মোহাম্মদ সায়েম বলেছেন, শুরায়ে নেজামের জোবায়ের পন্থীরা এ হামলা চালিয়েছে।

আহত সাদপন্হী সাথীর নাম মোঃ আনোয়ারুল কিবরিয়া। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তররা ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউসুল আজম জামে মসজিদে। নামাজ শেষে মসজিদে মারধরের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাল হয়।

সাদপন্হী মিডিয়া মুখপাত্র মোহাম্মদ সায়েম হামলার ঘটনার বিবরণ দিয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, মসজিদের ইমাম সাহেব মুফতী মোঃ জুনায়েদ কাসেমী (দাঃ) সাথে কোলাকুলিরত অবস্থায় মাওলানা সাদপন্থী সাথী মোঃ আনোয়ারুল কিবরিয়ার উপর অতর্কিত কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে জোবায়ের পন্থীরা। কিবরিয়া মসজিদের ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন।

মোহাম্মদ সায়েম বলেন, “এমনটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা! আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানাচ্ছি!”

উল্লেখ করা যেতে পারে, টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে সাদপন্হীদের জোড় ইজতেমা করতে না দেওয়ার ঘোষণায় শুরায়ে নেজামের জোড় ইজতেমা চলাকালে গত ১৮ ডিসেম্বর হামলা সংঘর্ষে উভয়পক্ষে ৪ মুসল্লী নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনায় তাবলীগ জামাতের দুগ্রুপে এখনও ব্যাপক উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। হামলা মামলা মোকদ্দমায় এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে নানাভাবে ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন।

এদিকে মসজিদের ভেতরে ভাইরাল হওয়া মারধরের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ওই মসজিদের ইমাম সাহেবের সাথে কোলাকুলি করছেন। ইমাম সাহেবের চারদিকে কয়েক মুসল্লী দাড়ানো। এসময় কয়েক মুসল্লীর সাথে থাকা এক মুসল্লী হঠাৎ করে ইমাম সাহেবের সাথে কোলাকুলিরত মুসল্লীকে বুকের সামনে পাঞ্জাবির কলার ধরে মাথায় কিল-ঘুষি মারছেন। ঘুষি খাওয়া মুসল্লী উপর হয়ে মসজিদের ফ্লোরে লুটিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন।

বনশ্রীতে সেই স্বর্ণ ডাকাতি: গ্রেপ্তারকৃত বাউফলের সেই শ্রমিকদল নেতা বহিষ্কার

রাজধানীর বনশ্রীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ছয় আসামির একজন বাউফলের কালাইয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রমিকদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক সুমন মোল্লাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে কালাইয়া ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি মো. আবুল বাশার শিকদার স্বাক্ষরিত বহিষ্কার আদেশটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বনশ্রী এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনকে গুলি করে দুইশ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় একদল একটি ডাকাত দল। এরপর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ডাকাত চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাউফল সুমন মোল্লা ছাড়াও উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আমিনুল ইসলামও রয়েছেন।

শ্রমিক দল নেতাকে বহিস্কারের সত্যতা নিশ্চিত করে কালাইয়া ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি মো. আবুল বাশার শিকদার বলেন,কার ভিতরে কি আছে কেউ তো তা জানেনা। সবাই বলছে ও ভালো এজন্য কমিটিকে রাখা হয়েছিলো ।ধরা খাইছে এজন্য ডাকাত হইছে ।যে খারাপ কাজ করবে তার বিচার হোক ।

অন্যায় অনিয়ম করলে সেটার প্রশ্রয় আমি দিবোনা। এঘটনা নিয়ে দৈনিক জনকণ্ঠের অনলাইনে শনিবার একটি স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর শ্রমিকদল নেতা সুমন মেল্লাকে বহিষ্কার করা হয়।

স্কুলের বই বিতরণ অনুষ্ঠানে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, অতঃপর…

রাজশাহীর পবা উপজেলার বাগসারা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৮ মার্চ) সকাল ১০টায় খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এতে আহত পাঁচ ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ কার্যক্রম পণ্ড হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা বই নিতে এসে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যায়। এ ঘটনায় স্কুল কমিটির পক্ষ থেকে পবা থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি কে হবেন? তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে নওহাটা পৌর বিএনপির দুইপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এর মধ্যে কয়েক দিন আগে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি মনোনীত হন নওহাটা পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম। নতুন সভাপতি হওয়ায় তাকে নিয়ে শনিবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণের আয়োজন করেন প্রধান শিক্ষক।

খবর পেয়ে আরেক পক্ষ নওহাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র মকবুল হোসেন গ্রুপের নেতাকর্মীরা গিয়ে স্কুলে জড়ো হন। একপর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে রফিকুল গ্রুপের সঙ্গে মকবুল গ্রুপের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বাগসারা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, নতুন সভাপতিকে নিয়ে বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে পরিচিতি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে মারধরের কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যায়।

তবে বিদ্যালয়ের নতুন সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভার সাবেক মেয়রের লোকজন বই বিতরণে বাধা দিতে এসেছিল। আমরা প্রতিহত করতে গেলে সামান্য ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।’

পবা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় একপক্ষ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শুনেছি বিবদমান গ্রুপের নেতারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নেবেন।’

৪ দিনেও জ্ঞান ফেরেনি শিশুটির, এজাহারে লোমহর্ষক বর্ণনা

মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের সেই শিশুটির চার দিনেও জ্ঞান ফেরেনি। ওই ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ থাকায় শনিবার (০৮ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। লাইফ সাপোর্টে কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে তার।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর শনিবার মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিশুটির মা। মামলায় অভিযোগ করেন, তার মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারা শিশুটিকে হত্যার চেষ্টাও চালায়।

শনিবার সকালে শিশুটির বড় বোন ও বাবাকে দিয়ে মাগুরা সদর থানায় এজাহার পাঠান শিশুটির মা। সেই অনুযায়ী বিকেল ৩টার দিকে মামলা রেকর্ড হয়। মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৪) এর ক/ ৩০ ধারায় ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে শিশুটিকে আহত করার অভিযোগ করা হয়েছে। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, চার মাস আগে মাগুরা পৌর এলাকার এক ছেলের সঙ্গে শিশুটির বড় বোনের বিয়ে হয়। ওই বাড়িতে বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুর থাকতেন। বিয়ের পর থেকে বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তার শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১ মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় আট বছরের শিশুটি।

এজাহারে বাদী আরও উল্লেখ করেন, বুধবার (৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। কিন্তু বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল বলছে। এরপর সকাল ছয়টার দিকে শিশুটি আবার বোনকে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়ার কথা বলে। কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তার বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তার কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।

এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনা জানার পর শিশুটির বড় বোন তার মাকে মোবাইলে বিষয়টি জানাতে গেলে তার স্বামী ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করে। এ কথা কাউকে বললে শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয় এবং তাদের দুই বোনকে আলাদা দুটি কক্ষে আটকে রাখে। সকালে এক নারী প্রতিবেশী বাড়িতে এলে বোনের ভাশুর দরজা খুলে দেন। তখন শিশুটির মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করানোর চেষ্টা করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে বোনের শাশুড়ি অন্য প্রতিবেশীদের সহায়তায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে মেয়েটিকে জিনে ধরেছে বলে চিকিৎসকদের জানান। তবে, চিকিৎসক ও অন্যরা বিষয়টি টের পেলে শাশুড়ি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। পরে বাদী হাসপাতালে যান।

মেয়েটির বড় বোন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার ২০ দিন আগে সন্ধ্যায় বাড়িতে কেউ ছিল না। তিনি ঘরে আলো জ্বালিয়ে টয়লেটে যান। সেখান থেকে ফিরে দেখেন ঘরে আলো বন্ধ। এ সময় হঠাৎ একজন পেছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে। উচ্চতা ও অন্য বিষয় দেখে তিনি ধারণা করেন, জড়িয়ে ধরা ব্যক্তিটি তার শ্বশুর হিটু শেখ। বিষয়টি স্বামী সজিবকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি তিনি। পরে তিনি বাবার বাড়ি চলে যান। আর স্বামীর বাড়ি ফিরতে চাচ্ছিলেন না। বাবা-মা বুঝিয়ে ছোট বোনকে সঙ্গে করে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেয়।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বোনের শ্বশুরবাড়ি মাগুরা শহরের নান্দুয়ালী এলাকায় বেড়াতে গিয়ে বোনের শ্বশুর হিটু শেখ (৫০)-এর লালসার শিকার হয় শিশুটি। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার (০৭ মার্চ) রাতে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

মাগুরার সেই শিশুটির সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে যা জানা গেল

মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে ‘সংকটাপন্ন’ অবস্থায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়েছে। শনিবার (০৮ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল থেকে তাকে সেখানে নেওয়া হয়। বুধবার (০৫) ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর শনিবার চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

চিকিৎসাধীন শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে শনিবার ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাচ্চাটার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। গতকাল রাত থেকে তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। ধর্ষণের পাশাপাশি তার গলা চেপে ধরা হয়েছিল। আমরা দেখেছি তার গলায় একটা দাগ আছে। গলা চেপে ধরার কারণে তার শ্বাসকষ্ট হয়েছে। এ কারণে তার সমস্যাগুলো আরও বেশি হচ্ছে। এর আগে ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির চিকিৎসায় শনিবারই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

ঢাকা মেডিকেলের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান এবং শিশুটির চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য মো. ছামিদুর রহমান বলেন, স্ট্যাগুলেশন মানে গলা টিপে ধরার কারণে তাকে আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে। গলা টিপে ধরার কারণেই তার সমস্যা বেশি হচ্ছে। সার্জিক্যাল সাইট অতটা খারাপ না। তার পেরিনিয়াম (যৌনাঙ্গের একটা অংশ) অত খারাপ না।

চারজনের বিরুদ্ধে মামলা : শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার তিন দিন পর চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম বলেন, শনিবার শিশুটির মা বাদী হয়ে সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। মামলার শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৫০), সজীব শেখের ভাই রাতুল শেখ (২০) এবং তাদের মা জাবেদা বেগমকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে। চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, চার মাস আগে মাগুরা পৌর এলাকার এক ছেলের সঙ্গে শিশুটির বড় বোনের বিয়ে হয়। ওই বাড়িতে বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুর থাকতেন। বিয়ের পর থেকে বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তার শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১ মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় আট বছরের শিশুটি।

এজাহারে বাদী আরও উল্লেখ করেন, বুধবার (৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। কিন্তু বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল বলছে। এরপর সকাল ছয়টার দিকে শিশুটি আবার বোনকে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়ার কথা বলে। কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তার বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তার কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।

এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনা জানার পর শিশুটির বড় বোন তার মাকে মোবাইলে বিষয়টি জানাতে গেলে তার স্বামী ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করে। এ কথা কাউকে বললে শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয় এবং তাদের দুই বোনকে আলাদা দুটি কক্ষে আটকে রাখে। সকালে এক নারী প্রতিবেশী বাড়িতে এলে বোনের ভাশুর দরজা খুলে দেন। তখন শিশুটির মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করানোর চেষ্টা করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে বোনের শাশুড়ি অন্য প্রতিবেশীদের সহায়তায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে মেয়েটিকে জিনে ধরেছে বলে চিকিৎসকদের জানান। তবে, চিকিৎসক ও অন্যরা বিষয়টি টের পেলে শাশুড়ি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। পরে বাদী হাসপাতালে যান।

মেয়েটির বড় বোন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার ২০ দিন আগে সন্ধ্যায় বাড়িতে কেউ ছিল না। তিনি ঘরে আলো জ্বালিয়ে টয়লেটে যান। সেখান থেকে ফিরে দেখেন ঘরে আলো বন্ধ। এ সময় হঠাৎ একজন পেছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে। উচ্চতা ও অন্য বিষয় দেখে তিনি ধারণা করেন, জড়িয়ে ধরা ব্যক্তিটি তার শ্বশুর হিটু শেখ। বিষয়টি স্বামী সজিবকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি তিনি। পরে তিনি বাবার বাড়ি চলে যান। আর স্বামীর বাড়ি ফিরতে চাচ্ছিলেন না। বাবা-মা বুঝিয়ে ছোট বোনকে সঙ্গে করে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেয়।

জেলা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, এরই মধ্যে মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সকালে ঢাকায় পাঠানো হয়।

চার নারী উপদেষ্টাকে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান : নারী নিপীড়ন বন্ধে ‘কিছু’ করার না থাকলে চার নারী উপদেষ্টাকে ক্ষমতা ছেড়ে সড়কে নামার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক নারী সমাবেশে সংগঠনটির সভাপতি সীমা দত্ত চার নারী উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা যদি সত্যিকার অর্থে নারীদের জন্য কাজ করতে চান, আর আপনারা যদি ক্ষমতায় বসে কিছু করতে না পারেন, তাহলে রাস্তায় নেমে আসুন। আপনারা ক্ষমতা ছাড়ুন, আপনারা বলুন যে, আপনারা ব্যর্থ। তাহলে আমরা অন্তত বলতে পারব, প্রচলিত ব্যবস্থায় আপনারা সফল হতে পারেননি।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সমালোচনা করে সীমা দত্ত বলেন, ‘ক্ষমতায় বসে কী করছেন? আমরা প্রতিদিন তামাশা দেখি। আন্দোলনের সময় বিগত সরকারের মন্ত্রীরা যেমন ৩২টি দাঁত দেখিয়ে মানুষের ওপর সব দায় চাপাত, এ সরকারও তাই করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি জানাচ্ছি। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আসা সরকারের কাছে বিগত সময়ে চেয়ে আসা খুন-ধর্ষণের বিচার পাওয়া যাবে, সে প্রত্যাশা ছিল আমাদের। কিন্তু সেসব মামলা নিষ্পত্তি করা দূরে থাক, বরং প্রতিদিন নানাভাবে নারী নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা বলছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা নাকি এসব করছে। যদি তাই হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী করছে? আমরা সরকারের কাছে এর জবাব চাই।’

এদিকে, শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মাগুরার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মিছিল করে ধর্ষণকারীর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দল ও জেলা মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাশ্বতী শীল বলেন, শিশুটি যেন সব ধরনের আইনগত সহায়তা পান তার জন্য জেলা প্রশাসন কাজ করছে।

পাশে থাকার আশ্বাস তারেক রহমানের : ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শনিবার শিশুটির মায়ের সঙ্গে ফোনালাপে এ কথা জানান তিনি।

ফোনালাপের শুরুতে তারেক রহমান শিশুটির শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে বলেন, মাগুরায় বিএনপির যত নেতাকর্মী আছেন, তারা সবাই শিশুটির পাশে থাকবেন। ন্যায়বিচার পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করব। শিশুটির সঙ্গে যারা অন্যায় করেছে তারা যেন আইন অনুযায়ী শাস্তি পায়।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘শিশুটির চিকিৎসার জন্য যা প্রয়োজন আমরা চেষ্টা করব, আমাদের দলের অবস্থান থেকে।’ এসময় শিশুটির মা তার মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেন তারেক রহমানের কাছে।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দোষীর শাস্তি দাবি উপদেষ্টা ফরিদার : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘মাগুরার শিশু ধর্ষণের ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছি। হিটু আটক হয়েছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যারা নারীর দোষ দেখে এই শিশুর ধর্ষণের ঘটনায় তাদের ব্যাখ্যা কী?’

’তুয়ি কে, আমি কে, আছিয়া আছিয়া’- স্লোগানে উত্তাল রাবি!

দেশে চলমান ধর্ষণ প্রতিরোধ, ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত ও সার্বিক নিরাপত্তার দাবিতে ৮ মার্চ বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় মিছিল শুরু হয়ে ছাত্রী হলগুলোর সামনে দিয়ে অতিক্রম করে। দলে দলে সেখানে ছাত্রীরা যুক্ত হয়। ৮ টার দিকে মিছিলটি জোহা চত্বরে সমবেত হয়।

এসময় শিক্ষার্থীদের স্লোগান ছিল – ‘তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া’ , ধর্ষিতার কান্না, আর না আর না’, ‘ধর্ষকের শাস্তি, মৃত্যু মৃত্যু’, ‘ধর্ষকের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে জবাই কর’, ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’। মিছিলে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকরাও ছিলেন সরব।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ‘এই দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য উদ্যেশ্য প্রণোদিতভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের মা বোনদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

নতুন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা বার বার বলতে চাই আপনারা যদি আমার বোনদের ও জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে এই দেশের শাসনভার চালানোর অধিকার আপনারা হারিয়ে ফেলেছেন। আপনারা যদি শাসনভারে থাকতে চান তাহলে অতি শীঘ্রই আমার বোনদের ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে বাংলাদেশ থেকে ধর্ষককে বিতাড়িত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতি: গ্রেফতার ৬ সদস্য, মিলল তাদের পরিচয়

রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল শনিবার (৮ মার্চ) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এই তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ইকবার মৃধার ছেলে। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য। এছাড়াও গ্রেফতার হওয়া আরেকজনের নাম সুমন মোল্লা।

তিনি ওই ইউনিয়নের আয়নাবাজ কালাইয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান মোল্লার ছেলে। তিনি আবার ৪নং ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সহ-দফতর সম্পাদক। ছাত্রলীগকর্মী আমিনুল আগেও একাধিকবার ডাকাতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল বলে জানা গেছে।

তার বিরুদ্ধে ডাকাতদলকে আশ্রয়, অস্ত্রের যোগান ও ডাকাতির নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ স্বীকার করে আমিনুল জবানবন্দি দিয়েছিলেন বলেও জানা গেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, দিনে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে ব্যস্ত থাকতেন আমিনুল ইসলাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ তিনি।

এদিকে, আমিনুলের সাথে পটুয়াখালী-২ আসনের সাবেক এমপি আ স ম ফিরোজ, জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ আওয়ামী নেতাদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে বাউফল থানার পরিদর্শক আতিকুল ইসলাম যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, আমিনুল একজন পেশাদার ডাকাত। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।

প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতারের সময় অস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলি, স্বর্ণালংকার, নগদ টাক ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বনশ্রীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনকে বাড়ির সামনে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুইশত ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আগামী ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম: দাবি না মানলে রাষ্ট্রের বিপক্ষে দাঁড়াবে ঢাবি শিক্ষার্থীরা!

মাগুরায় আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদণ্ড) দাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। শনিবার (৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন।

তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘দফা এক দাবি এক, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ’সহ নানা স্লোগান দেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য হলের নারী শিক্ষার্থীরাও এতে যোগ দেন। রাত ১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশে শিশু থেকে বৃদ্ধা—কেউই ধর্ষকদের হাত থেকে নিরাপদ নয়। অনেক সময় ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করা হলেও বিচার প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ থেকে যায়, এবং তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে অবাধে চলাফেরা করে। ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি সংবিধানে উল্লেখ থাকলেও তা কার্যকর হতে দেখা যায় না।

এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আইন সংশোধনসহ জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা। আরেক শিক্ষার্থী ধর্ষকের বিচারের দাবিতে বলেন, “আমরা আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের মাধ্যমে চিহ্নিত ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাই। তা নাহলে আমরা এই ব্যর্থ রাষ্ট্রের বিপক্ষে দাঁড়াবো ইনশাআল্লাহ”।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বেগম রোকেয়া হলের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি ভিসি চত্বর ঘুরে আবার রোকেয়া হলের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।