হাসপাতাল থেকে দিন দুপুরে ‘চুরি’ হওয়া সেই শিশুকে উদ্ধার করল র‍্যাব!

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চুরি হওয়া দুই মাস সাত দিন বয়সী ছেলে শিশুকে উদ্ধার করেছে র‍্যাব। শনিবার (৮ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মিরওয়ারেশপুর ইউনিয়নের

বেচার দোকান সংলগ্ন একটি বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু।

চুরি হওয়া নবজাতকের মায়ের নাম জান্নাতুল ফেরদৌস (১৯)। তিনি উপজেলার মীরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের চৌকিদার বাড়ির লিটন মিয়ার মেয়ে। এর আগে, একই দিন দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে থেকে এ চুরির ঘটনা ঘটে।

মধ্যরাতে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে উত্তাল ঢাবি!

মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদণ্ড) দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রীরা।

শনিবার (৮ মার্চ) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন তারা। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘দফা এক দাবি এক, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাসে মিছিল বের হলে পরে এতে অন্য হলগুলোর নারী শিক্ষার্থীরা যোগ দেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাত একটার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে তাদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ছাত্রীরা বলেন, দেশে শিশু থেকে বৃদ্ধা কেউই ধর্ষকদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ধর্ষকদের গ্রেফতার করার পর তাদের বিচার হয় কি না, তা আমরা জানতে পারি না।

দেখা যায় ধর্ষকরা জামিন পেয়ে বাইরে অবাধে চলাফেরা করে। ধর্ষকদের শাস্তি সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকলেও তা বাস্তবায়ন হতে দেখি না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আইন সংশোধনসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বেগম রোকেয়া হলের সামনে থেকে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল বের করেন। মিছিলটি রোকেয়া হলের সামনে থেকে ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে ফের রোকেয়া হলের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

৩ ভাইকে মসজিদ থেকে বের করে কুপিয়ে হত্যা, নেপথ্যে….

মাদারীপুর সদর উপজেলায় মসজিদ থেকে টেনে বের করে আপন দুই ভাই ও তাদের এক চাচাতো ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন প্রতিপক্ষ। বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বলে জানা গেছে। শনিবার (৮ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের খোয়াজপুর এলাকার ৬ নং ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহতরা হলেন- একই এলাকার আজিবর সরদারের ছেলে সাইফুল সরদার (৪০) ও আতাউর সরদার (৩৫) এবং তাদের চাচাতো ভাই মুজাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (১৭)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১০ জন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ, স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের খোয়াজপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার।

আরেক পক্ষ একই এলাকার একই বংশের হোসেন সরদার উত্তোলন করে আসছিলেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। একে অপরকে বালু উত্তোলন করতে বাধা দেয়। এরই জেরে শনিবার সকাল ১১টার দিকে খোয়াজপুর সরদারবাড়ি জামে মসজিদের সামনে একা পেয়ে সাইফুল সরদারের ওপর হামলা চালায় হোসেন সরদারের লোকজন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সাইফুলের বড় ভাই আতাউর সরদার, আরেক ভাই অলিল সরদার ও তার পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। এ সময় প্রাণ রক্ষা করতে তিন ভাই দৌঁড়ে মসজিদে লুকিয়ে পড়েন। পরে সেখান থেকে তাদের টেনেহিঁচড়ে কোপাতে কোপাতে বাইরে বের করে। প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।

এতে ঘটনাস্থলেই আপন দুই ভাই সাইফুল সরদার ও আতাউর সরদার মারা যান। চাচাতো ভাই পলাশ সরদারকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। পলাশ সরদারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. মাসুদ বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতদের ভাই অলিল সরদার (২৮) ও আজিজুল হকের ছেলে তাজেল সরদার (২৫) গুরুতর আহত হন। তাদের প্রথমে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

অন্য আহতরা হলেন—নিহত সাইফুল সরদারের স্ত্রী সতি বেগম (২৫), নিহত আতাউর সরদারের স্ত্রী মাহমুদা বেগম (৩০), রোজিনা বেগম (৩৫) প্রমুখ। আহতরা মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছেন। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। নিহতদের মা সুফিয়া বেগম বলেন, ‘হোসেন সরদার ও শাজাহান খাঁনের লোকজন আমার দুই ছেলেকে হত্যা করেছে। আরেক ছেলের অবস্থাও গুরুতর। এই হত্যার বিচার চাই।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, ‘এই ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন। পলাশ সরদার নামে আরো একজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে আটক করেছে। এ ব্যাপারে অভিযান চলমান আছে।’

আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, অতঃপর…..

রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় তিনটি মোটরসাইকেল। এ ঘটনায় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একজন সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে মহানগর যুব মহিলা দলের সহ–ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক লাভলীসহ তার অনুসারীরা কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বহুতল ভবন ঘেরাও করেন। ভবনটির একটি ফ্ল্যাটে নগরের বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বাবু ওরফে ব্যাটারি বাবু পরিবারসহ থাকেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর ব্যাটারি বাবু ও তার ভাই সাব্বির বাবুর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

লাভলীর দাবি, তারা ভবনটি ঘিরে রাখলে যৌথ বাহিনী অভিযানে আসে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে ভবনে মোস্তাককে পাওয়া যায়নি। যদিও ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় প্রবেশকারী হিসেবে মোস্তাকের নাম দেখা গেছে। এছাড়া সিসিটিভির ফুটেজেও মোস্তাককে তার স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ভবনে ঢুকতে দেখা গেছে। মোস্তাক আহমেদকে না পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভবনটি ঘিরে রাখে। পরে সেখান থেকে মোস্তাক আহমেদের ভাই সাব্বির বাবুকে গ্রেপ্তার করে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মোস্তাককে না পাওয়ার জন্য সাবেক যুবদল নেতা মারুফ হোসেন জীবনকে দায়ী করেন লাভলী। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মারুফের লোকজন শুক্রবার সন্ধ্যায় দড়িখড়বোনা এলাকায় লাভলীর বাড়িতে হামলা করেন। পরে লাভলীর অনুসারীরা দড়িখড়বোনা রেল লাইনের পাশে মারুফের ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এরপর দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

হামলায় মহিলা দলের নেত্রী লাভলী, তার আড়াই বছরের মেয়ে, এসবি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন ও রেলওয়ের কর্মচারী মো. রনি আহত হয়েছেন। তারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে সংঘর্ষের সময় দড়িখড়বোনা এলাকায় তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

দীর্ঘ সময় ধরে দড়িখড়বোনা, উপশহর মোড়, রেলগেট, সপুরা ও শালবাগান এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এ সময় অনেকের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখা গেছে। কয়েকটি হাতবোমারও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সংঘর্ষ চলার অনেক সময় পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি।

এদিকে সংঘর্ষের পর রাত সাড়ে ১১টায় নগরের মিয়াপাড়া এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন মহিলা দলের নেত্রী লাভলী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদের ভবন ঘেরাও করা এবং তার ভাইকে পুলিশে তুলে দেওয়ায় বিএনপির লোকজন তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন।

লাভলী আরও বলেন, সাব্বিরকে পুলিশে তুলে দেওয়ার পর মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব মারুফ হোসেন তাকে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। বিনিময়ে তিনি যেন এটা নিয়ে ঝামেলা না করেন। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার বাসায় একই প্রস্তাব আনা হয়েছিল। সেটি ফিরিয়ে দেওয়ার পর তার বাসায় হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মারুফ হোসেনের মোবাইলে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তার ছোটভাই পরিচয় দিয়ে সনি নামের এক ব্যক্তি ফোন ধরেন। তিনি বলেন, লাভলীর ভাই তাঁতী লীগ আর ছেলে যুবলীগ করত। তাদের ধরার জন্য ছাত্রদলের ছেলেরা গিয়েছিল। তারপর মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটেনি।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। এলাকার পরিস্থিতি এখন থমথমে আছে। এ বিষয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বলেন, এটা বিএনপির দুই গ্রুপের কোনো সংঘর্ষের ঘটনা নয়। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই।

মাইকে ঘোষণা দিয়ে ১০টি বিলের ৬ কোটি টাকার মাছ লুট!

সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলার প্রায় দশটি বিল থেকে প্রকাশ্যে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। ইজারাদারদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে মাইকে ঘোষণা দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ জাল, পলো ও নৌকা নিয়ে বিলে নেমে পড়ে এবং শত শত মেট্রিক টন মাছ ধরে নিয়ে যায়। তাদের দাবি, এ ঘটনায় অন্তত ৬ কোটি টাকার মাছ লুট হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে হাঁটু পানিতে নেমে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এমনকি অনেকে নৌকা নিয়ে বিলে প্রবেশ করে মাছ সংগ্রহ করেছে। পরিস্থিতি এমন ছিল যে, ‘যার যা সাধ্য, সে তত মাছ নিয়ে পালাও’—এমন এক অবস্থা তৈরি হয়।

ইজারাদারদের অভিযোগ, মাছ ধরার মৌসুমে তারা বছরের পর বছর মাছের পরিচর্যা করে, তারপর নির্ধারিত সময়ে আহরণ করেন। কিন্তু এবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে হাজার হাজার মানুষ একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে মাছ লুট করেছে। তারা আরও জানান, মাছ লুটের আগে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, এরপর বিভিন্ন গ্রাম থেকে দলে দলে লোক এসে লুটপাটে অংশ নেয়।

এ ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, বরং নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল। এক ইজারাদার বলেন, “আমরা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মাছ লুটের পাশাপাশি প্রায় ৫০ লাখ টাকার বাঁশ ও বিলের অফিসের বিভিন্ন সরঞ্জামও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”

স্থানীয় সূত্র জানায়, শুধু একদিনেই ৫০ লাখ টাকার মাছ লুট হয়েছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে বিল ও নদী থেকে শত কোটি টাকার মাছ লুট হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ইজারাদাররা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন এবং ভবিষ্যতে মাছ উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

সুনামগঞ্জের ১০৩১টি জলমহাল থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন দেশি মাছ উৎপাদন হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। তবে এভাবে লুটপাট চলতে থাকলে আগামী বছর মাছ উৎপাদন ভয়াবহভাবে কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, “ঘটনাটি নজরে এসেছে। যেহেতু বিল ও ইজারার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জড়িত, তাই তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয়রা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

জেলে থাকা বাবার জন্য বাড়ির উঠানে অপেক্ষা করছে ছেলের লাশ! জানেনা বাবা নিজেও

জেলে থাকা বাবা ও চাচাদের অপেক্ষায় বাড়ির উঠানে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়েছে ছেলের লাশ। জেলে থাকা বাবা ও চাচারা কখন আসবেন জানেন না কেউ। অপেক্ষার প্রহর কাটছে না স্বজনদের। কান্না আর আহাজারীতে ভারী হয়ে উঠেছে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রাম।

নিহত ওই যুবকের নাম মো. জুয়েল রানা। জুয়েল রানা কুড়িপাড়া গ্রামের মো. নাজিমুদ্দিন মন্ডলের ছেলে। জুয়েল রানা রাজবাড়ী কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছিলেন।

সরেজমিনে গেলে জানা যায়, ২০১৭ সালে জমি-জমা নিয়ে নিহত জুয়েলে বাবা নাজিমুদ্দিনের সাথে ও চাচাত ভাই এতেম আলীর একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় নাজিমুদ্দিন মন্ডল ও তার পাঁচ ভাইকে আসামী করে পাংশা মডেল একটি মামলা করেন এতেম আলীর পরিবার।

২০২৪ সালে উক্ত মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় নাজিমুদ্দিনসহ তার তার পাঁচ ভাইকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় রাজবাড়ী অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক জান্নাতুন লিলিফা আকতার জা। মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত অন্যান্য আসামীরা হলেন, (নাজিমুদ্দিন মন্ডলে পাঁচ ভাই) মো. সিরাজ মন্ডল, মো. লোকমান মন্ডল, মো. জিল্লু মন্ডল, আজাদ মন্ডল ও জনাব মন্ডল।

নাজিমুদ্দিনের ভাতিজা (নিহতের চাচাত ভাই) কামাল মন্ডল জানান, গত ২৪ তারিখ (সোমবার) আমার বাবা ও পাঁচ চাচা উক্ত মামালায় রাজবাড়ি কোর্টে জামিন ধরতে গেলে জামিন নামুঞ্জুর করে তাদের জেল হাজতে পাঠায় আদালত। গত দুই দিন আগে ঢাকা হাই কোর্ট থেকে জামিন ধরা হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) আমি ও আমার নিহত চাচাত ভাই জুয়েল রানাসহ ৫-৬জন রাজবাড়ী কারাগাড়ে আমার বাবা ও চাচাদের আনতে যাই।

ঢাকা হাইকোর্ট থেকে জামিনের নথি না আসায় তাদের (বাব-চাচাদের) আনতে পারিনি। রাজবাড়ী থেকে ফেরার পথে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া মোড় এলাকায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আমার চাচাত ভাই জুয়েল রানার মৃত্যুবরণ করেছেন।

এ ঘটনায় রেজাউল ইসলাম (মোটরসাইকেল চালক) নামে আমার আরও এক চাচাত আহত হয়েছে। তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

তিনি আরও জানান, জেলে থাকা বাবা ও চাচাদের জন্য আমার ভাইয়ের মরদেহ লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়েছে। ঢাকা হাই কোর্ট থেকে জামিনের নথি এখনো রাজবাড়ীতে আসেনি। নথি আসলে বাবা ও চাচারা জেল থেকে বের হবেন। তারা আসলে ভাইয়ের দাফন সম্পন্ন হবে। তবে ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ বাব-চাচাদের দেওয়া হয়নি।

বিশেষ কারনে মুক্তি পেলেন আওয়ামী লীগ এই নেতা!

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নিতে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুর রহমান হাবিব নিজ গ্রামে ফিরেছেন। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে তিনি তার মায়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নেন। এই ঘটনায় স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসনের নজর কাড়ে।

হাফিজুর রহমান হাবিব দক্ষিণ পাটাদহ গ্রামের বাসিন্দা এবং মাদারগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। জানা গেছে, হাফিজুর রহমান হাবিব নাশকতার মামলায় জামালপুর জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন। তবে তার মা হামিদুন বেগমের মৃত্যু হওয়ায় শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে এবং জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে তিনি প্যারোলে মুক্তি চেয়েছিলেন।

৩ মার্চ রাত ১১টায় তার মা বার্ধক্যজনিত কারণে ৯৫ বছর বয়সে মারা যান। মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে হাবিব দিশেহারা হয়ে পড়েন। পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে তিনি জামালপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করেন।

জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম তার আবেদন মঞ্জুর করে তাকে ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেন। মুক্তির সময় তার সঙ্গে ছিল পুলিশ পাহারা। দুপুর ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ওই সময়ের মধ্যে তিনি তার মায়ের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করেন। এই সময়ের মধ্যে তাকে পুরোপুরি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল এবং পুলিশ তার পাশে ছিল।

জানাজা ও দাফন শেষে, নির্ধারিত সময় শেষে হাবিজুর রহমান হাবিবকে পুনরায় কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। মাদারগঞ্জ মডেল থানার ওসি হাসান আল মামুন এ বিষয়ে বলেন, “হাফিজুর রহমান হাবিব প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনায়, এবং জানাজা শেষে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”

হাফিজুর রহমান হাবিব ১৭ ফেব্রুয়ারি জামালপুরের নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন এবং তার পর থেকে তিনি জামালপুর জেলা কারাগারে বন্দি আছেন। তার বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ রয়েছে এবং এই মামলায় তিনি বর্তমানে আদালতের বিচারের সম্মুখীন।

এই ঘটনা অনেককে চমকে দিয়েছে, কারণ এটি সাধারণত দেখা যায় না যে, একটি প্যারোলে মুক্তি পাওয়া আসামি তার মা মারা যাওয়ার পর শেষবারের মতো জানাজায় অংশ নিতে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটি একটি বিশেষ অনুমতি ছিল এবং এভাবে তার পরিবারের কাছে শেষ শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব হয়েছে।

বরিশাল বিপিএল জেতায় নাহিদ-হাসনাতকে নিয়ে যা বললেন ‘সারজিস’

টানা দ্বিতীয়বার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের শিরোপা জিতেছে ফরচুন বরিশাল। বিপিএলের ১১তম আসরের ফাইনালে আজ বরিশাল ৩ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম কিংসকে। বিপিএল জেতায় বরিশাল নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে সারজিস আলম লিখেছেন, ‘নাহিদ-হাসনাত আগে থেকেই বরিশালের জালে ‘জামাই’ হিসেবে আটকা!

তিনি আরও লিখেছেন, ‘বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটাও গেলো বরিশালের ঘরে! নিজের কথা আর নাই বা বলি! সময় এখন বরিশালের! কি কও মনু?’ তার এই স্ট্যাটাস নিয়ে অনেকে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছেন।

তার মধ্যে একজন লিখেছেন, ‘তু‌মি তো এখন ব‌রিশাইল্লা জামাই। তাই এ বিজ‌য়ের অংশীদার তু‌মিও।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘তোমরা বরিশালের ৩ জামাই বরিশালকে জেতানোর জন্য স্বজনপ্রীতি করছো।’ জামিল নামের একজন লিখেছেন, ‘সারজিস ভাইয়ের আইডি ভাবীর দখলে; উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা হতাশ হইয়েন না!’

আরও যে মন্তব্য এসেছে সেগুলো হলো- ‘দুলাভাই, সব দিকে থেকে জিতেছেন’; ‘হাসনাত ভাই বরিশাল সারজিস ভাই বরিশাল, অবশেষে বিপিএল ট্রফিও বরিশাল।’

প্রসঙ্গত, গত রাতে ফাইনাল ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান করে চট্টগ্রাম কিংস। জবাবে ১৯ দশমিক ৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৫ রান করে টানা দ্বিতীয় বারের মতো বিপিএল চ্যাম্পিয়ন বরিশাল। গেল বছর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মত বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বরিশাল।

শাহবাগ থেকে ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ মিছিল আজ রাত ৮ টায়! আসলে কি হতে চলেছে?

দিল্লীতে বসে ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্য শেখ হাসিনার ভাষণের প্রতিবাদে আজ রাতে শহরে ‘মার্চ টু ধানমন্ডি বত্রিশ’ কর্মসূচি পালিত হতে যাচ্ছে। মিছিলটি আজ রাত (৫ ফেব্রুয়ারি) ৮টায় শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে ধানমন্ডি বত্রিশ অভিমুখে যাত্রা করবে।

মিছিলে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহ নানা রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাধারণ মানুষেরা।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দেলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ এর সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেনঃ “আজ রাতে ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে”

পিপল একটিভিস্ট কেয়ালিশনের মুখপাত্র রাতুল মোহাম্মদ তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে আজ রাত ৮টায় ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২” এ অংশগ্রহণের জন্য সকলকে আহবান জানান।

নওগাঁ থেকে নিখোঁজ সুবার ভিডিও ‘বার্তা’

মায়ের ফুসফুস ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে ঢাকায় এসে মোহাম্মদপুর থেকে নিখোঁজ হন ১১ বছরের এক কিশোরী। সোমবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে কৃষি মার্কেট এলাকা থেকে নিখোঁজ হন তিনি। পরে তাকে নওগাঁ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি ভালো আছি, সুখে আছি।’ এ সময় ক্যামেরার পেছনে থাকা ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করেন, বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ।

এ সময় বাবার কাছে ফেরার সম্মতিও জানান তিনি। জানা গেছে, নিখোঁজ কিশোরীর নাম আরাবি ইসলাম সুবা। মায়ের চিকিৎসা করাতে বরিশাল থেকে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় আসে। সুবা বরিশালের একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

সুবার বাবা ইমরান রাজিবের একটি আবেগঘন ফেসবুক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনেক নেটিজেন তাকে খুঁজে পেতে পরিবারকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে পোস্টটি শেয়ার করেছেন।

সুবার আত্মীয় মাইদুল রাকিব জানান, সুবার মা প্রথমে গুলশানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করায় তার পরিবার মহাখালী এলাকার একটি বাসা নিয়ে বসবাস শুরু করে। সম্প্রতি জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে তার কেমোথেরাপি শুরু হয়।

সেজন্য চারদিন আগে সুবাকে সঙ্গে নিয়ে মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের কাছে আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন সুবার মা। এর মধ্যে রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বয়সে ছোট এক ফুফাত ভাইকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয় সুবা।

কৃষি মার্কেট এলাকার প্রিন্স বাজার এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় তার কাজিন একটি গাড়িকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যায়। এরপর সুবা আর বাসায় পৌঁছায়নি। পরে পরিবারের লোকজন তৎক্ষণাৎ আশপাশ খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। পরে তারা মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।