২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র তালিকা প্রকাশ!

২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। তালিকায় কেন্দ্রের কোড নম্বর, কেন্দ্রের আওতাধীন কলেজের নাম, কলেজের কোড নম্বর, কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা ইত্যাদির বিবরণ রয়েছে। সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্র অনুযায়ী কলেজের তালিকা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষের কাছ থেকে কেন্দ্র ফি’র টাকা গ্রহণ করে গোপনীয় কাগজপত্র জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে, অলিখিত উত্তরপত্রসহ অন্য কাগজপত্র ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে সংগ্রহ করে পরীক্ষা পরিচালনা করবেন।

প্রতিদিন পরীক্ষা শেষে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ডাকযোগে ওএমআরের প্রথম অংশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কম্পিউটার কেন্দ্রে এবং উত্তরপত্রগুলো পরীক্ষা পরিচালনা নীতিমালা অনুযায়ী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর পাঠাবেন।

এতে আরও বলা হয়, ভেন্যু কেন্দ্রগুলো মূল কেন্দ্র থেকে টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গ্রহণ করে পরীক্ষা পরিচালনা করবেন এবং পরীক্ষা শেষে এ সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র মূল কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জমা দেবেন।

জেলা সদরে জেলা প্রশাসক ও উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরীক্ষা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচিত কলেজের অধ্যক্ষ-ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হবেন অধ্যক্ষ-ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা কলেজের সিনিয়র কোনো অধ্যাপক।

‘ল তে লাকি তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, স্লোগানে উত্তাল জবি ক্যাম্পাস!

শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক লাকি আক্তারকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা লাকি আক্তারকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরদিনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানান।

মঙ্গলবার রাত দেড়টায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা রায় সাহেব বাজার মোড় প্রদক্ষিণ করে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জড়ো হন।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ১৩ এর খুনিরা, হুঁশিয়ার সাবধান; শাহবাগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন; ল তে লাকি, তুই হাসিনা, তুই হাসিনা; শহিদেরা দিচ্ছে ডাক, শাহবাগ নিপাত যাক; ওয়ান-টু-থ্রি-ফোর, শাহবাগ নো মোর; শাহবাগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এ সময় সমাবেশে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নূর নবী বলেন, শাহবাগ একটি ঘৃণিত নাম হয়ে থাকবে। নতুন করে আর আইডেন্টিটি তৈরি করতে পারবে না। আজকে একটা ইস্যু তৈরি করে পরিকল্পিতভাবে লাকি আক্তারদের মাঠে নামানো হয়েছে। আমরা দেখেছি, পুলিশ প্রশাসনের ওপর তারা প্রথমে হামলা করেছে। এই জগন্নাথের মাটি থেকে লাকি আক্তারকে চিরদিনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে হবে।

আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, হাজার হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সেই স্বাধীনতাকে ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার জন্য এক ঝাঁক ভারতীয় হায়েনা মাঠে নেমেছে। ২০১৩ সালের যেসব কুত্তা শাহবাগে ঘেউঘেউ করেছিল, তাদের আবারও পদচারণা দেখা যায়। তারা কোন সাহসে আমার দেশের পুলিশের ওপর হামলার সাহস পায়।

লাকিসহ যেসব শাহবাগিরা ২০১৩ সালে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল, তাদের কেনো এখনো গ্রেফতার হচ্ছে না? আবার দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান, তাহলে আবার জুলাই বিপ্লব হবে। ইন্টেরিম সরকারকে বলতে চাই, আপনারা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

আপনারা পাড়া মহল্লায়, গ্রামে, যেখানে শাহবাগি নামক প্রাণীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে, আপনারা প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন।

ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক বলেন, আমরা দেখেছি, ২০১৩ সালে যেই লাকি আক্তাররা, ইমরান এইচ সরকাররা দেশের জনগণকে জিম্মি করে এক নারকীয় অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। যদি আবারও তারা বাংলাদেশে ২০১৩ সালের মতো নারকীয় পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়, আমরা আবু সাঈদ, মুগ্ধদের মতো রুখে দিবো।

শিক্ষকদের বেতন ও ঈদ বোনাস নিয়ে ‘সুখবর’ দিলো মাউশি!

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস নিয়ে সুখবর দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। চলতি মাসের মধ্যে বেতন ও ঈদুল ফিতরের বোনাস পাবেন তারা। রোববার (৯ মার্চ) রাতে মাউশি অধিদপ্তরের প্রশাসন এবং অর্থ ও ক্রয় উইং সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

নাম প্রকাশ না করে মাউশির অর্থ ও ক্রয় উইংয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আগামী ২০ মার্চের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগেও তারা বেতন পেতে পারেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসহ অন্যান্য বিষয়ে জটিলতা তৈরি হলে বেতন পেতে আরও দু-তিনদিন সময় লাগতে পারে।

শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতনের সঙ্গে ঈদের বোনাসের অর্থ পাবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গেই ঈদের বোনাস পাবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। সেভাবে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

সরকারি কর্মচারীরা মার্চ মাসের বেতন চলতি মাসেই পাবেন। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মার্চ মাসের বেতন কবে হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রশাসন ও ক্রয় উইংয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, মার্চ মাসের বেতন চলতি মাসে হবে না। এটা মোটামুটি নিশ্চিত। শিক্ষক-কর্মচারীরা মার্চ মাসের বেতন এপ্রিলে পাবেন।

জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত ৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হতো। এ অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো।

গত বছরের ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়।

পরবর্তীতে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পান। দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার ও চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ শিক্ষক-কর্মচারীকে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে। এখন তারা ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পেতে যাচ্ছেন।

‘ভাত দে, নইলে বিষ দে’ স্লোগানে থালা হাতে শিক্ষকদের ‌‌ভূখা মিছিল!

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে থালা হাতে ভূখা মিছিল করেছেন শিক্ষকরা। রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে এ মিছিল বের করেন তারা। মিছিল নিয়ে পল্টন মোড় ঘুরে আবারও প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এ নিয়ে টানা ১৫ দিন প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে রয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। মিছিলে শিক্ষকরা ‘ভাত দে, নইলে বিষ দে’, ‘দাবি মোদের একটাই, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও চাই’, ‘এক দেশে দুই নীতি, মানি না মানবো না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা এ কর্মসূচি করছেন। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচিসহ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষরা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে তারা ন্যায্য দাবি নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন। কিন্তু সরকার তাদের দাবি নিয়ে কোনো ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে না। রমজানে রোজা রেখেও তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দ্রুত তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষকরা।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের মহাসচিব ও নওগাঁ শফিউদ্দিন মোল্লা কলেজের অধ্যক্ষ মনিমুল হক বলেন, নতুন শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে আমাদের একটাই দাবি সব প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত করা।

আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর ভৌত কাঠামোসহ সব কিছু যাচাই করে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি যে বেতন-ভাতার সুবিধা সেটা দেওয়া হচ্ছে না। এটা আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এবার দীর্ঘ ৪০ বছর পর ভাগ্য খুলছে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের!

অবশেষে ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের ভাগ্য খুলতে যাচ্ছে। এমপিওভুক্তির প্রস্তাবের ফাইলে স্বাক্ষর করে গেছেন বিদায়ি শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এখন প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন পেলেই এই শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হবেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে নিজের শেষ কর্মদিবসে বুধবার (৫ মার্চ) ওই ফাইলে স্বাক্ষর করেন তিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছর পর এক হাজার ৫১৯ ইবতেদায়ি মাদরাসার ছয় হাজারের বেশি শিক্ষকের ভাগ্য খুলতে যাচ্ছে।

এমপিওভুক্ত (বেসরকারি) শিক্ষকদের উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে বিদায় এবং নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারের যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব কথা জানান।

বিদায়ি উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি সবাইকে আশ্বাস দিয়েছিলাম, সাধ্যমতো এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটে যতটুকু অর্থ সংকুলন করা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে আমরা যত দূর পারি চেষ্টা করব দাবিগুলো মেটাতে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘কিন্তু ১৫-২০ বছরের বঞ্চনা দু-এক বছরের বাজেট দিয়ে তো মেটানো যায় না। এটা বোঝানো খুব কঠিন। আজই বেসরকারি বেতন সরকারি বেতনের সমান করে দিতে হবে— এটা ন্যায্য দাবি বুঝলাম, কিন্তু এক বছরের বাজেট দিয়ে কিভাবে ১৫ বছরের বৈষম্য ঠিক করা যায়? কিন্তু শুরুটা করা দরকার। সেই শুরুটা আমরা করে দিয়ে যাচ্ছি।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘তাঁদের (এমপিওভুক্ত শিক্ষক) উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা—এ বছরের ঈদুল আজহা থেকে শুরু করে আগামী বছরের বাজেট থেকে অন্তত কিছু বাড়াতে পারব, এখানেও আমি ঘোষণা দিচ্ছি না কত বাড়াব। আমি জানি সেটুকু বাজেটের মধ্যে এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটের মধ্যে প্রভিশন রাখা হচ্ছে।

শিক্ষকদের অবসর এবং কল্যাণ ভাতার জন্য একটা তহবিল তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে বিদায়ি উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বছরই কিছুটা তৈরি করা হয়েছে। আগামী বাজেটে আরো রাখা হবে। তবে পুরো ফান্ড টেকসই করতে হলে দু-একটা বাজেটে হবে না, ভবিষ্যতে তিন-চারটা বাজেটে আশা করি এটার সমাধান হয়ে যাবে।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কল্যাণ ভাতা এবং অবসর ভাতা—এটা হলো তাঁদের সবচেয়ে ন্যায্য দাবি। কিন্তু তাঁরা তো সংঘবদ্ধ নন। তাঁরা রাস্তায়ও কোনো দিন নামেননি। কিন্তু আমি তো মনে করেছিলাম তাঁদের ওই দাবিটাই সবচেয়ে আগে মেটানো উচিত।’

তিনি বলেন, ‘দেশের অনেক ইবতেদায়ি মাদরাসা আছে। এর মধ্যে অনেক অনানুষ্ঠানিক। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানের নথি (রেজিস্ট্রেশন) আছে। সরকারি প্রাথমিক স্কুলের মতো তারা বাংলা, ইংরেজি গণিত পড়াচ্ছে, অবকাঠোমো শিক্ষক থাকার পরও এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তাঁদের এমপিওভুক্ত করা সম্ভব। সেই কাজ আমি করে দিয়েছি।’

গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শেষ দিন সেই ফাইলে স্বাক্ষর করে গেছেন বিদায়ি শিক্ষা উপদেষ্টা। সেই ফাইল এখন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে। তাঁর সম্মতি মিললে শিক্ষকরা এমপিওভুক্তি হিসেবে বেতন-ভাতা পাবেন।

এইচএসসির ফরম পূরণ: ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীকে ‘জিম্মি’ করে ৬ মাসের অগ্রিম বেতন আদায়!

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৬ জুন। পরীক্ষায় অংশ নিতে নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এখন ফরম পূরণে ব্যস্ত। কিন্তু শিক্ষাবোর্ডের ‘দায়সারা’ বিজ্ঞপ্তিকে ঢাল বানিয়ে তাদের কাছ থেকে সাত মাসের বেতনের টাকা একসঙ্গে আদায় করা হচ্ছে। অল্প সময়ে অনেকে একসঙ্গে এত টাকা জোগাড় করতেও চরম বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো সন্তানের ফরম পূরণের সঙ্গে অগ্রিম বেতন পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন আবদারে ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

তারা বলছেন, এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর পরও কলেজ থেকে কেন মাসিক বেতন চাওয়া হচ্ছে, তার কারণ বুঝতে পারছেন না তারা। সেটাও একমাসের নয়, তিন মাসের বাড়তি বেতন নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাত মাসের বেতনের টাকা একসঙ্গে অগ্রিম আদায় করা হচ্ছে। অগ্রিম বেতন পরিশোধ না করলে আটকে দেওয়া হচ্ছে ফরম পূরণ। এতে চরম আর্থিক চাপে পড়েছেন তারা। ফরম পূরণে বাড়তি ও অগ্রিম বেতনের টাকা নেওয়া বন্ধে সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ চান শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।

২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেন প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে প্রায় ১৬ লাখ শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। সব শিক্ষাবর্ষে কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। সেসব বাদ দিয়ে প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষার্থী এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন বলে জানিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। ফলে ১৫ লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণের সময় আদায় করা হচ্ছে অগ্রিম বেতন।

জানা যায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরাই এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। ২০২৩ সালের জুন মাসে তাদের শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ভর্তি করা হয়েছিল ওই বছরের সেপ্টেম্বরে। আর ক্লাস শুরু হয়েছিল অক্টোবরে। সেসময় তাদের অক্টোবর মাস (২০২৩) থেকে বেতন নেওয়া হয়। একাদশ থেকে দ্বাদশ, সবশেষ নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তারা এখন এইচএসসির চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছেন।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ৯টি শিক্ষ বোর্ড এইচএসসির ভর্তি ফরম পূরণের নির্দেশিকা জারি করে। তাতে বলা হয়, ২ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ ফি দিতে হবে ২ হাজার ৭৮৫ টাকা। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার পরীক্ষার্থীদের ফি দিতে হবে ২ হাজার ২২৫ টাকা।

তবে ফরম পূরণের ফির সঙ্গে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অগ্রিম বেতন আদায় করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের দাবি, শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মেনেই তারা মোট ২৪ মাসের (একাদশ-দ্বাদশ) বেতন নিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীসহ সারা দেশের প্রায় সব কলেজ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অগ্রিম বেতন আদায় করছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হামদর্দ কলেজসহ বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি কলেজের বিজ্ঞপ্তি জাগো নিউজের হাতে এসেছে। সেখানে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতন পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বেতন পরিশোধ না করা পর্যন্ত এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করতে দিচ্ছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ।

ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর হতে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ১৭ মাস বেতন আদায় করা হয়েছে। বাকি সাত মাসের (মার্চ-সেপ্টেম্বর) বেতনের টাকা ফরম পূরণের সময় একসঙ্গে দিতে হবে। সম্পূর্ণ ফি পরিশোধ না করা পর্যন্ত ফরম পূরণ করতে দেওয়া হবে না।

ভিকারুননিসার মূল শাখায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর মা তাহেরা আক্তার রূপা জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষাবর্ষ দেরিতে শুরু করার পেছনে তো আমাদের দায় নেই। তারা দেরিতে একাদশে ভর্তি করিয়েছেন। এখন ১৫-১৬ মাস ক্লাস করিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছেন। কিন্তু ২৪ মাসেরই বেতন দিতে হবে। তার মধ্যে ৬-৭ মাসের বেতন অগ্রিম নেওয়া হচ্ছে। ভিকারুননিসায় ৭ মাসের বেতন বাবদ আমাদের একসঙ্গে ১৪ হাজার ৭০০ টাকা দিতে হচ্ছে। তার সঙ্গে ফরম পূরণ ফি ২ হাজার ৭৮৫ টাকা। সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার টাকা লাগবে। এটা দুই-তিনদিনের মধ্যে পরিশোধ করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এটা তো এখন বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জন্য।’

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক সাব্বিন হায়দার বলেন, ‘মেয়ের ফরম পূরণ করতে গিয়ে দেখি সাত মাসের বেতন আগাম চাইছে। বললাম হঠাৎ এত টাকা আমরা দেবো কীভাবে? শিক্ষকরা উল্টো রাগ দেখিয়ে বলেছেন, তাহলে এ কলেজে ভর্তি করছেন কেন?’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমাদের মতো যাদের আয়, তাদের পক্ষে মাসে মাসে দুই হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়তো সম্ভব। কিন্তু একসঙ্গে ৭ মাসের বেতনের ১৪ হাজার টাকা এবং ফরম ফিলআপের ফি পরিশোধ করতে গেলে তো ধারদেনা করা ছাড়া উপায় নেই। রমজান মাস, সামনে ঈদ। আবার ফরম পূরণ না করলে তো মেয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে না। বাধ্য হয়ে সব টাকা দিয়েছি। এটা তো একরকম জিম্মি করা। এত আন্দোলন, বৈষম্য নিয়ে কথা; তারপরও দেশে সেই শিক্ষার বাণিজ্য তো চলছেই।’

ফরম পূরণে অগ্রিম ৭ মাসের বেতন আদায়কে শিক্ষার নীতিহীন ব্যবসা বলে মনে করেন অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘কলেজের শিক্ষাবর্ষ শেষ হয় ৩০ জুন। এবার পরীক্ষা শুরু হবে ২৬ জুনে। তাহলে পরীক্ষার পর কলেজে কি ক্লাস চলবে? যদি ক্লাস না চলে তাহলে শিক্ষার্থীরা বেতন কেন দেবে? স্কুল-কলেজের এ ব্যবসা আর কতদিন এ দেশে চলবে? বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরও এমন শিক্ষার বাণিজ্য কেন? আমরা পরীক্ষা শুরুর পর বেতন আদায়ের অন্যায় আবদারের প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষাপ্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছি।’

‘কলেজেরও তো আয় দরকার’
ভর্তি নির্দেশিকায় থাকা নির্দেশনা মেনে বেতন আদায় করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন কলেজের অধ্যক্ষরা। আর শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, একাদম-দ্বাদশ দুই বছরের। সেই হিসাবে ২৪ মাসে শিক্ষাবর্ষ। ২৪ মাসের বেতনের টাকা না পেলে কলেজগুলো বিপদে পড়বে। তাদের ভাষ্য, ‘কলেজগুলোরও তো আয়ের দরকার আছে।’ জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাজেদা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকা বোর্ড যে নির্দেশনা দিয়েছে, তাতে ২৪ মাসের বেতন নিতে বলা হয়েছে। আমরা নিয়মের বাইরে কিছু করছি না।’

একসঙ্গে অগ্রিম ৭ মাসের বেতন আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফরম পূরণের পর শিক্ষার্থীরা আর কলেজে আসে না। এখন বেতন না নিয়ে নিলে সেটা তোলা কষ্টকর। সেজন্য ফরম পূরণের সঙ্গে সব নিয়ে রাখা হচ্ছে।’ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জাগো নিউজকে বলেন, ‘একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি দুই বছরের। সেজন্য ২৪ মাসের বেতন নিতে বলা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব জায়গায়ই তো এমন হয়।’

শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেছে এবং পরীক্ষা দিয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তাহলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতন আদায়ের যৌক্তিকতা কী এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা তো আগের নিয়ম। বরাবরই ২৪ মাসের বেতন নেওয়া হয়। কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় চলে। তাদেরও আয়ের প্রয়োজন আছে। তাদের তো বছরের ১২ মাসই শিক্ষকদের বেতন দিতে হয়। সেজন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও পুরো দুই বছরের (১২+১২ মাস) বেতনের টাকা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছি আমরা।’ ক্লাস বন্ধ এবং পরীক্ষার পরও বেতন আদায়ে শিক্ষা বোর্ডের এমন অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ড যে নির্দেশনা দিয়েছে, তাতে কিছুটা কনসিডার (ছাড়) দেওয়ার সুযোগ আছে কি না, তা কথা বলে দেখবো। সুযোগ থাকলে সেটা করা হবে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সবার আগে বিবেচনায় নিতে হবে।’

সমালোচনার ফলে স্কুল ভর্তিতে ৫ শতাংশ কোটার সেই আদেশ বাতিল!

সমালোচনার ফলে স্কুল ভর্তিতে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সন্তানদের সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কোটার সেই আদেশ বাতিল করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে কোটার স্থলে নতুন করে প্রতি শ্রেণিতে একটি করে আসন বেশি রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সোমবার আগের আদেশ বাতিল করে নতুন আদেশ জারি করেছে। এতে স্বাক্ষর করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব (মাধ্যমিক-১) মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সরকারি স্কুলের ভর্তিতে লটারির জন্য নির্ধারিত আসন সংখ্যার অতিরিক্ত প্রতি শ্রেণিতে ১ জন করে ভর্তির জন্য আসন সংরক্ষিত থাকবে।

এতে আরও বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত/ শহীদ পরিবারের সদস্যদের আসন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র/গ্যাজেটের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে এবং ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে ইস্যুকৃত জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এ শহীদদের গেজেট যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ এ আহত/ শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে উক্ত আসনে ভর্তি করতে হবে। কোনো অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না।

এর আগে গত ২রা মার্চ একটি আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা কোটার মতো ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের পরিবারের সন্তানদের সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কোটা পাবে।

এখন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত থাকছে না সাত কলেজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধীনে ২০২৪-২৫ সেশন থেকে সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ হচ্ছে। এর মাধ্যমে ঢাবি থেকে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল হচ্ছে। আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিন পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদের কার্যালয় সংলগ্ন সভাকক্ষে সভা শুরু হয়।

জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে এই সভা শুরু হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে আলোচনা করেন ঢাবি উপাচার্য ও সাত কলেজে অধ্যক্ষরা। এসময় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, কলা অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ছিদ্দিকুর রহমান খান, বিজ্ঞান

অনুষদের ডিন আব্দুস সালাম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন রাশেদা ইরশাদ নাসির, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ আব্দুলাহ আল মামুনসহ বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুন্সী শামস উদ্দীন আহমেদ, হিসাব পরিচালক সাইফুল ইসলাম, কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) আমজাদ হোসেন শিশির এবং সাত কলেজের অধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

এমপিওভুক্ত নিয়ে শিক্ষকদের জন্য আসলো বিশাল ‘সুখবর’

দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজে নতুন নিয়োগ পাওয়া তিন হাজার ২০৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি)।

তাদের মধ্যে স্কুলে দুই হাজার ৫৭৯ জন এবং কলেজের ৬২৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। একই সঙ্গে ২ হাজার ৮৪২ জনকে উচ্চতর স্কেল ও ১৩০ জন স্কুল শিক্ষককে বিএড স্কেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাউশির এমপিও কমিটি। রোববার (১২ জানুয়ারি) মাউশির জানুয়ারি মাসের এমপিও (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পদাধিকার বলে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের রুটিন দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. এ কিউ এম শফিউল আজম। এ সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, মাউশি অধিদপ্তরের ৯ আঞ্চলিক পরিচালক ও উপ-পরিচালক এবং অধিদপ্তরের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্টসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কোন অঞ্চলের কতজন এমপিওভুক্ত
সভায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানান, স্কুলের ৩ হাজার ২০৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলের ১৩০, চট্টগ্রামের ১২৭, কুমিল্লার ১৪৮, ঢাকার ৭২৬, খুলনার ৩৭৭, ময়মনসিংহের ১৬৪, রাজশাহীর ৬৬৮, রংপুরের ১৭৫ এবং সিলেটের ৬৪ জন তালিকায় রয়েছেন।

অন্যদিকে কলেজের ৬২৭ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলের ৪৫, চট্টগ্রামের ৪৩, কুমিল্লার ৫২, ঢাকার ১০১, খুলনার ৭৭, ময়মনসিংহের ৬৭, রাজশাহীর ৭৬, রংপুরের ১১০ এবং সিলেট অঞ্চলের ৫৬ জন রয়েছেন।

উচ্চতর স্কেল পাচ্ছেন ২৮৪২ জন
এদিকে বেসরকারি স্কুল-কলেজের ২ হাজার ৮৪২ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে উচ্চতর গ্রেড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমপিও কমিটি। তাদের মধ্যে স্কুলের ২ হাজার ৩৫৯ জন এবং কলেজের ৪৮৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। সভায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানান, উচ্চতর গ্রেড পাওয়া স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলের ৩৩১,

চট্টগ্রামের ১২৩, কুমিল্লার ৯৭, ঢাকার ৫০২, খুলনার ৪২৫, ময়মনসিংহের ১৪৯, রাজশাহীর ৪৬৯, রংপুরের ১৭৩ এবং সিলেটের ৯০ জন রয়েছেন। অন্যদিকে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলের ৩৯, চট্টগ্রামের ১৭, কুমিল্লার ৪১, ঢাকার ৪৮, খুলনার ২৬, ময়মনসিংহের ৯, রাজশাহীর ২৪৭, রংপুরের ৩৯ ও সিলেট অঞ্চলের ১৭ জন রয়েছেন।

বিএড স্কেল পাচ্ছেন ১৩০ জন
বেসরকারি স্কুলে কর্মরত ১৩০ জন শিক্ষককে বিএড স্কেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএড স্কেল পাওয়া স্কুল শিক্ষকের মধ্যে বরিশাল অঞ্চলের ৬ জন,

চট্টগ্রামের ৫, কুমিল্লার ৯, ঢাকার ৬৪, খুলনার ১৫, ময়মনসিংহের ৫, রাজশাহীর ১৪, রংপুরের ১১ এবং সিলেট অঞ্চলের ১ জন শিক্ষক আছেন।

এইচএসসি পরীক্ষার সম্ভাব্য সময় ও রুটিন নিয়ে যা জানা গেলো

চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আগামী জুনের শেষ সপ্তাহে শুরু হবে। এ জন্য পরীক্ষার রুটিন প্রস্তুতের কাজ চলছে। মঙ্গলবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশার এ তথ্য জানিয়েছেন।

আবুল বাশার বলেন, জুনের শেষ সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য সূচির (রুটিন) খসড়া প্রস্তুতের কাজ চলছে। আশা করছি, চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সম্ভাব্য পরীক্ষা সূচি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সম্ভব হবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে ২ মার্চ থেকে। আর ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এইচএসসির নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে কলেজগুলোকে। এরপর ফরম পূরণ শুরু হবে।

সাধারণত, এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারির শুরুতে ও এইচএসসি পরীক্ষা এপ্রিলের শুরুতে হতো। কিন্তু করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে পুরো শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে গেছে।

২০২৪ সালের ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। তবে আন্দোলনের জেরে মাঝপথে এসে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বাকি পরীক্ষাগুলো নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও সেগুলো না দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করেন পরীক্ষার্থীরা। পরে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার নম্বর বিবেচনায় নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ১৫ অক্টোবর ফল প্রকাশ করা হয়। তাতে পাস করে ৭৭.৭৮% শিক্ষার্থী।