এবার সরকারি কলেজ শিক্ষকদের জন্য বড় ‘সুখবর’

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে বিভিন্ন সরকারি কলেজের শিক্ষকদের বড় একটি সংখ্যার পদোন্নতি হয়েছে। ৭৬৫ জন সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের শিক্ষককে পদোন্নতি দিয়ে সহযোগী অধ্যাপক করা হয়েছে। পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী পঞ্চম গ্রেডে বেতন ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।

গতকার সোমবার পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এর একটিতে ৭৬৪ জনকে; আরেকটিতে একজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি হিসাববিজ্ঞানের ৯৪ জন শিক্ষক একযোগে সহযোগী অধ্যাপক হয়েছে। পদোন্নতি পাওয়া অন্য শিক্ষকদের মধ্যে ৫৬ জন অর্থনীতি বিভাগের, ২৯ জন আরবি ও ইসলাম শিক্ষার, ৪৬ জন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির,

২৬ জন ইংরেজির, ৩১ জন ইতিহাসের, ৪৮ জন উদ্ভিদবিদ্যার ও ৭ জন কৃষিবিজ্ঞানের। অন্যান্য বিভাগের মধ্যে গার্হস্থ্য অর্থনীতির একজন, গণিতের ৮৮ জন, দর্শনের ৩৯ জন, পদার্থবিদ্যার ৬৬ জন, পরিসংখ্যানের ছয়জন, প্রাণিবিদ্যার ৭২ জন, ব্যবস্থাপনার ৫৫ জন ও বাংলা বিভাগের ছয়জন সহকারী অধ্যাপক পদোন্নতি পেয়েছেন।

সহযোগী অধ্যাপক হওয়ার তালিকায় ভূগোল বিভাগের ২৪ জন, মনোবিজ্ঞানের নয়জন, রসায়নের ২২ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ১৮ জন, সমাজকল্যাণের ১৩ জন, সমাজবিজ্ঞানের একজন, সংস্কৃতির দুজন শিক্ষকের নামও রয়েছে।

এদের বাইরে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের (টিটিসি) বাংলা বিভাগের দুজন, শিক্ষা বিভাগের একজন ও বিজ্ঞান বিভাগের তিনজন শিক্ষক পদোন্নতি পেয়েছেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত নির্দেশনা অনুযায়ী পদোন্নতিপ্রাপ্তরা কাজে যোগ দেবেন। অপরদিকে কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের উচ্চতর পদে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পদায়নের জন্য ‘স্বতঃসিদ্ধভাবে’ অগ্রাধিকার পাবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে।

নতুন বছরে বই উৎসব নিয়ে এনসিটিবির সব পরিকল্পনা ব্যর্থ!

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নতুন বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথম দিন দু-তিনটি বই তুলে দিতে নানা পরিকল্পনা করেছিল এনসিটিবি। কিন্তু তাদের সেই পরিকল্পনাও সফল হয়নি। কোন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কবে বই পাবে, তা জানাতে পারছে না স্কুলগুলো। এত দিন বছরের প্রথম দিন বই উৎসব অনেকটা সর্বজনীন উৎসবের মতো ছিল। এ বছর বই ছাপতে দেরি হওয়ায় হচ্ছে না সেই উৎসব।

আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে এনসিটিবি সব বইয়ের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও তা শেষ করতে ফেব্রুয়ারি মাসের পুরোটা লাগতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এমন পরিস্থিতিতে আজ বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করবেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তবে এই অনলাইন বই ডাউনলোড করে শিক্ষার্থীদের পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বেশির ভাগ বই এরই মধ্যে ছাপা হয়েছে এবং তা উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ফলে এই তিন শ্রেণির বেশির ভাগ শিক্ষার্থী বছরের প্রথম দিন বই পাবে। তবে অন্যান্য শ্রেণির কত শতাংশ বই ছাপা হয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির বই বেশির ভাগ স্কুলই পায়নি। তবে রাজধানী, বিভাগীয় ও জেলা শহরের কিছু স্কুলে কয়েকটি শ্রেণির তিনটি বিষয়ের স্বল্পসংখ্যক বই তারা পেয়েছে। কিন্তু এভাবে বিক্ষিপ্তভাবে পাঠানো বই কিভাবে স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে দেবে, তা তারা বুঝতে পারছে না। তারা আরো বই পাওয়ার অপেক্ষা করছে। মফস্বল ও দূরের স্কুলগুলো চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণির কোনো বই পায়নি।

এতে স্কুলগুলো শিক্ষার্থীদের জানাতে পারছে না কবে তারা তাদের হাতে বই তুলে দিতে পারবে। জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপার কাজ প্রায় শেষ এবং উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেও গেছে। অন্যান্য শ্রেণির কিছু না কিছু বই আমরা প্রতিটি উপজেলায় পাঠাতে চেষ্টা করেছি। ১ জানুয়ারি আমরা ৪৫৫টি বইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন করছি। আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে আমরা সব বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছানার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।’

সূত্র জানায়, সংগত কারণেই এ বছরের বইয়ের পাণ্ডুলিপি প্রণয়নে দেরি হয়েছে। তারপর আবার দরপত্রসহ নানা প্রক্রিয়া শেষ করতেও দেরি হয়েছে। ফলে আগে থেকে সংশ্লিষ্ট সবাই আশঙ্কা করেন, এবার বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। এ জন্য শিক্ষার্থীরা যাতে অন্তত তিনটি করে বই পায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলা হয়। কিন্তু এনসিটিবি সেসব কথায় গুরুত্ব না দিয়ে তাদের মতো চলতে থাকে। যদিও শেষের দিকে এসে তিনটি করে বই দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এমনকি প্রেস মালিকদের চাপ দিতে থাকে। কিন্তু বছরের শেষ দিনে এসে এনসিটিবির সব পরিকল্পনাই ব্যর্থ হয়।

শিক্ষকরা বলছেন, গত দুই বছর নতুন শিক্ষাক্রমে পড়ালেখা করেছে শিক্ষার্থীরা। সেখানে ভিন্নধর্মী পড়ালেখায় শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো চাপ নিতে হয়নি। কিন্তু এখন হঠাৎ করেই আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যেতে হয়েছে। এতে এমনিতেই বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থী তাল মেলাতে পারছে না। তারা এ বছরের বার্ষিক পরীক্ষায় খুব খারাপ করেছে। এখন যদি আবার বই পেতে পেতে আরো দুই মাস চলে যায়, তাহলে বড় ধরনের শিখন ঘাটতিতে পড়বে শিক্ষার্থীরা।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, এবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীসংখ্যা চার কোটি ৩৪ লাখ তিন হাজার ২৮৩। তাদের জন্য ছাপা হচ্ছে ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই। প্রাথমিকের দুই কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য ছাপা হচ্ছে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই। মাধ্যমিক পর্যায়ের দুই কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮০৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭ কপি বই। এ ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সাড়ে আট হাজারের বেশি ব্রেইল বই ছাপা হচ্ছে। শিক্ষকদের জন্য প্রায় ৪১ লাখ সহায়িকা ছাপা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বই ছাপার কাজ বেশ আগেই শুরু হয়েছে। এই বইয়ের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। এরপর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির কার্যাদেশ ও চুক্তিপত্র শেষে দুই সপ্তাহ আগে তা ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। এই বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি। গত সপ্তাহের শেষ দিকে চতুর্থ, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়ের ছাপা শুরু হয়েছে। এ সপ্তাহে নবম ও দশম শ্রেণির বই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। তবে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এক বছর বই পড়ে এসএসসি পরীক্ষায় বসবে বলে তাদের বইয়ের কাজ আগে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রেস মালিকরা বলছেন, আমাদের প্রেসের প্রতিদিন দুই লাখ বই ছাপার সক্ষমতা। আমরা শত চেষ্টা করেও এর বেশি বই ছাপতে পারব না। কিন্তু এনসিটিবি একসঙ্গে সব বইয়ের কার্যাদেশ দিয়ে সব বইয়ের ছাপার কাজ শেষ করতে বলছে। তারা ব্যাপারটি বুঝেও না বোঝার ভান করছে। আগে প্রতিটি শ্রেণির বইয়ের কার্যাদেশ পর্যায়ক্রমে দেওয়া হতো। এতে একটি শ্রেণির বইয়ের কাজ শেষ করে আরেকটি ধরা যেত। কিন্তু এবার তা না হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বই দিতে দেরি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রতিবছর সাধারণত জুলাই-আগস্ট থেকে পাঠ্যবই ছাপার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর পরও ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বই দেওয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এনসিটিবিতে অনেক পরিবর্তন আসে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, সদস্য ও অন্য কর্মকর্তারা পরিবর্তন হন। এরপর আবার আগের শিক্ষাক্রমে ফিরে যাওয়া হয়। পাঠ্যক্রমেও বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে পাণ্ডুলিপি পরিমার্জনেও বেশ সময় লাগে। এরপর আবার এনসিটিবির নতুন কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও পরিকল্পনার অভাবে পাঠ্যবইয়ের কাজ বেশ কিছুটা পিছিয়ে যায়।

২২ দিন সব কোচিং সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ!

সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার জন্য ১ জানুয়ারি থেকে

আগামী ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ভর্তি পরীক্ষায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যক্তি বা

প্রতিষ্ঠান পরিচালিত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা এই সিদ্ধান্ত অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, দেশের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৭ জানুয়ারি (শুক্রবার সকাল ১০টায় শুরু হবে পরীক্ষা) অনুষ্ঠিত হবে। ১৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে এ পরীক্ষা।

যেসব পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এবারের নতুন পাঠ্যবই!

শিক্ষাপঞ্জি মেনে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে। এবার ৪০ কোটির বেশি বই ছাপানো হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, নতুন পাঠ্যবইয়ে সাহিত্যের পাশাপাশি ইতিহাস বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষণা, শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। জানা গেছে, নতুন ৪০ কোটি বই এর মধ্যে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা ৯ কোটি ৬৪ লাখের মতো। আর মাধ্যমিকে (মাদরাসার ইবতেদায়িসহ) মোট বইয়ের সংখ্যা ৩০ কোটি ৯৬ লাখের মতো।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সরকার এক যুগ আগে তৈরি পুরোনো শিক্ষাক্রমের আলোকে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে জন্য এনসিটিবি ৪১ বিশেষজ্ঞ দিয়ে ৪৪১টি পাঠ্যবই পরিমার্জন করেছে। এতে অনেক বিষয়বস্তু সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। বেশ কিছু গদ্য, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা বা বিষয়বস্তু বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে স্থান পেয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়বস্তুসহ নতুন কিছু গল্প-কবিতা। পঞ্চম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয়ের নতুন বইয়ে ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক অধ্যায়ের প্রথম অংশে প্রথমে রয়েছে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ছবি।

পাশে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। জাতীয় চার নেতার ছবিও রয়েছে। পুরোনো বইয়ে একই স্থানে শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার ছবি ছিল। নতুন বইয়ে একই অধ্যায়ের ‘পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা’ শীর্ষক লেখায় বলা হয়েছে, ‘…পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এই আক্রমণের নাম দিয়েছিল “অপারেশন সার্চলাইট”। ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। ২৬শে মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ২৭শে মার্চ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারো স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।’ একই বিষয়ের পুরোনো বইয়ে এই অংশে ছিল, ‘…পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর এই আক্রমণের নাম দিয়েছিল “অপারেশন সার্চলাইট”।

ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।…’ চতুর্থ শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পাঠ্যবইয়েও স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি রয়েছে। নতুন বইয়ে এই অধ্যায়ের ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক লেখায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ছবির পাশাপাশি মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার ছবি স্থান পেয়েছে। এখানে বিষয়বস্তু হিসেবে বলা হয়েছে, ‘…এ রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ২৬শে মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ২৭শে মার্চ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারো স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।’

পুরোনো বইয়ে এ–সংক্রান্ত লেখায় শুধু বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ছবি ছিল। আর স্বাধীনতার ঘোষণা–সংক্রান্ত স্থানে লেখা ছিল, ‘এ কালরাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের আগে অর্থাৎ ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ওয়্যারলেস বার্তায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। এর ভিত্তিতে ২৬ মার্চ শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এছাড়া পাঠ্যবই থেকে ইতিহাসবিষয়ক আরো কিছু বিষয়বস্তু বাদ দেওয়া হয়েছে। এতদিন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও পতাকা নির্মাণের নিয়মাবলি এবং জাতীয় সংগীত বাংলা বইয়ের প্রচ্ছদের ঠিক পরের পৃষ্ঠায় ছিল। কিন্তু নতুন বাংলা বইয়ে তা পুনর্বিন্যাস করে বইয়ের শেষ প্রচ্ছদের আগের পৃষ্ঠায় নেয়া হয়েছে। এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ে ছয়টি প্রবন্ধ, কবিতা বা ছড়া নতুন করে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ শীর্ষক প্রবন্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদ আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ছবিসহ এই গণ-অভ্যুত্থানে সব শহিদকে স্মরণ করে লেখা যুক্ত হয়েছে।

এই প্রবন্ধে আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে শহিদ মীর নিসার আলী তিতুমীর থেকে শুরু করে এ বছরের জুলাই গণ–অভ্যুত্থান পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে শহিদদের স্মরণ করা হয়েছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তনের বিষয়ে জানান, জুলাই বিপ্লবের পর বিপ্লবের গ্রাফিতিসহ বিষয়গুলোকে স্থান দেওয়ার একটি গণদাবি ছিল। এবার ইতিহাসের বইয়ে না দিয়ে বাংলা–ইংরেজি বইয়ে জুলাই বিপ্লবের বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। আর মুক্তিযুদ্ধে অন্য নায়কদের আগে অবহেলা করা হয়েছে। এবার তাদেরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, অতিবন্দনা পরিহার করা হয়েছে। পাঠ্যবইকে রাজনৈতিক দলের প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা বন্ধ করা হয়েছে। তবে গতবারের মতো এবারো থাকছে পাঠ্যবইয়ের ঘাটতি। বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিতে ৪০ কোটি ১৬ লাখ পাঠ্যবই প্রয়োজন। ছাপাখানার মালিক, মুদ্রণ শিল্প সমিতি ও এনসিটিবি সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ কোটি বই উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর জন্য ছাড়পত্র বা পিডিআই হয়েছে। এখনো ৩৩ কোটি বই ছাপানোই বাকি। ফলে এবার নতুন বছরের প্রথম দিনে সারা দেশে সব শিক্ষার্থী সব বই পাবে না।

ছাপাখানাগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১১৬টি ছাপাখানায় ২৪ ঘণ্টা বিরামহীন পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। তবে ছয় মাসের কাজ এক মাসে শেষ করতে সরগরম ছাপাখানাগুলো। কোনো ফুরসত নেই শ্রমিকদের। মিনিটে মিনিটে বেরিয়ে আসছে ছাপা কাগজ। অন্যপাশে চলছে বাঁধাইয়ের কাজ। ২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসে পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হয়েছিল।

তারপরও সবার হাতে সব বই পৌঁছাতে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এবার মাধ্যমিকের পাঠ্যবই ছাপাতে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ (নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ড বা নোয়া) দেওয়া হয় ১০ ডিসেম্বর থেকে। কাগজসংকট না থাকলে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪০ লাখ কপি পাঠ্যবই পাঠানোর সক্ষমতা আছে ছাপাখানাগুলোর। ছাপাখানার মালিক, মুদ্রণ শিল্প সমিতি ও এনসিটিবি কর্মকর্তারা বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিক্ষাক্রম পরিবর্তন, পাঠ্যবই পরিমার্জন, আগের দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র দেওয়া, দেরি করে পরিদর্শন প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করা, বিলম্বে নোয়া (নোট অব অ্যাওয়ার্ড) দেওয়াসহ ছাপাসংক্রান্ত কাজে বিলম্বের কারণে এবার এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখনো বেশ কিছু পরিমাণ বই ছাপার জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে চুক্তিপত্র সইয়ের কাজটিও শেষ হয়নি। ফলে আগামী মার্চ মাসের আগে সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই পৌঁছানো কঠিন হবে।

২০২৫ সালের শিক্ষাবর্ষে ছুটির তালিকায় টানা ২৮ দিন স্কুল বন্ধ!

২০২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭৬ দিন ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তারের সই করা প্রজ্ঞাপনে বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জি ও ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, পবিত্র রমজানের ছুটি শুরু হবে ২ মার্চ। এসময় ঈদুল ফিতর, জুমাতুল বিদা ও স্বাধীনতা দিবসসহ অন্যান্য ছুটি মিলিয়ে টানা ২৮ দিন স্কুল বন্ধ থাকবে।

দীর্ঘ এই ছুটির পর ৮ এপ্রিল ক্লাস শুরু হবে। এছাড়া, ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটির জন্য ১ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত টানা ১৫ দিন ছুটি রাখা হয়েছে। দুর্গাপূজায় ৮ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে লক্ষ্মীপূজা ও ফাতেহা-ই-ইয়াজ দহমসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত।

প্রতি বছরের মতো এবারও প্রধান শিক্ষকের জন্য সংরক্ষিত তিনদিনের বিশেষ ছুটি রাখা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যালয়ের প্রধান এই ছুটি বরাদ্দ করতে পারবেন। এছাড়া, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান উপলক্ষে নিয়মিত ছুটি থাকবে।

শিক্ষা ছুটিতে আরও বলা হয়েছে:
১. শিক্ষাবর্ষ হবে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ সাল পর্যন্ত। সরকার ঘোষিত নির্দেশনার আলোকে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করতে হবে।

২. উল্লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা, প্রাক নির্বাচনি পরীক্ষা, নির্বাচনি পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং বার্ষিক পরীক্ষার উত্তরপত্র অন্তত এক বছর সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতি পরীক্ষার সময় ১২ কর্মদিবসের বেশি হবে না।

৩. স্ব-স্ব বিদ্যালয় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র (পাবলিক পরীক্ষা ব্যতীত) নিজেরাই প্রণয়ন করবেন। কোনো অবস্থাতেই অন্য কোনো উৎস থেকে সংগৃহীত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

৪. পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না। তবে কোনো বিশেষ কারণে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে।

৫. সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্রবার ও শনিবার) ব্যতীত বছরে মোট ছুটি থাকবে ৭৬ দিন।

৬. কোনো সরকারি কর্মকর্তার পরিদর্শন উপলক্ষে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া যাবে না এবং সংবর্ধনা বা পরিদর্শন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ করা যাবে না। সংবর্ধিত বা পরিদর্শনকারী ব্যক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করানো যাবে না।

৭. ছুটিকালীন অনুষ্ঠেয় ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদন ও অন্যান্য পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনে বিদ্যালয় খোলা রাখতে হবে।
৮. এসএসসি পরীক্ষার সময় পরীক্ষা কেন্দ্র ব্যতীত অন্যান্য বিদ্যালয়সমূহে যথারীতি শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকবে।

২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাৎসরিক ছুটির তালিকা প্রকাশ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বাৎসরিক ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সাপ্তাহিক ছুটির বাইরে স্কুল বন্ধ থাকবে ৭৬ দিন। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মিরাজুল ইসলামের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রকাশিত তালিকায় থাকা দীর্ঘ ছুটির মধ্যে ২ মার্চ থেকে পবিত্র রমজানের ছুটি শুরু হবে। ঈদুল ফিতর, জুমাতুল বিদা, স্বাধীনতা দিবসসহ কয়েকটি ছুটি মিলিয়ে সেসময় টানা ২৮ দিন স্কুল বন্ধ থাকবে। দীর্ঘ ছুটির পর ৮ এপ্রিল পুনরায় ক্লাস শুরু হবে।

 

ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশেও টানা ১৪ দিন স্কুল ছুটি থাকবে। এ ছুটি শুরু হবে ৩ জুন, চলবে ২২ জুন পর্যন্ত। দুর্গাপূজায় এবার ৭ দিন ছুটি রাখা হয়েছে। অবশ্য এ ছুটির মধ্যে লক্ষ্মীপূজা, ফাতেহা-ই-ইয়াজ দহমসহ বেশ কয়েকটি ছুটি পড়বে।

প্রতিবছরের মতো এবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের হাতে সংরক্ষিত তিনদিন ছুটি রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধান যখন প্রয়োজন মনে করবেন তখন এ ছুটিগুলো দিতে পারবেন। এর বাইরে বিভিন্ন জাতীয়, আন্তর্জাতিক দিবস ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে নিয়ম মেনে ছুটি থাকবে।

ফিরেছে বিভাগ বিভাজন, এসএসসির নম্বর বণ্টন ও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ

অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষাক্রমে নবম-দশম শ্রেণিতে ফিরেছে বিভাগ বিভাজন। সেই অনুযায়ী ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার পুনর্বিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, প্রশ্নের ধরন ও নম্বর বণ্টন প্রকাশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বোর্ডের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের মোট ৩২টি বিষয়ের সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার নম্বর বিভাজনে ব্যাবহারিক না থাকা বিষয়গুলোর রচনামূলক অংশে থাকবে ৭০ নম্বর এবং বহুনির্বাচনী অংশে থাকবে ৩০ নম্বর।

ব্যাবহারিকসহ বিষয়গুলোতে তত্ত্বীয় অংশে ৭৫ ও ব্যাবহারিক অংশে ২৫ নম্বর থাকবে। তত্ত্বীয় অংশে ৪০ নম্বর ও বহুনির্বাচনী অংশে থাকবে ২৫ নম্বর। এর আগে আওয়ামী সরকারের শিক্ষাক্রমে নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১ সেপ্টেম্বর পূর্বের প্রণীত ‘নতুন শিক্ষাক্রম বা জাতীয়

শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১’ আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রে তখন বলেছিল, বিদ্যমান শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তাই ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করে ২০২৬ সাল থেকে তা পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে। তার আগে ২০২৫ সালে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটা আগের শিক্ষাক্রমের ধাঁচের পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে।

এতে বলা হয়, ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (পরীক্ষা ২০২৬ সালে) নিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রেখে পূর্বের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুযায়ী প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত পুস্তক) শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাভিত্তিক এই পাঠ্যপুস্তকগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচিটি সম্পন্ন করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে পরিচালিত হবে।

বর্তমানে বিভাগ বিভাজন ফিরিয়ে এনে ২০১২ সালের পাঠ্যসূচির বইগুলো ২০২৫ সালের জন্য ফের ছাপানোর কাজ চলছে এবং সে অনুযায়ী পরিমার্জনা করা হচ্ছে। ২০২৬ সালে এ বইগুলো থেকেই পাঠ্যক্রম পরিচালনা করা হবে এবং দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এ বইগুলো পড়েই এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।

এসএসসির ২০২৬ সালের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও নম্বর বণ্টন প্রকাশ

নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন ফিরিয়ে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার পুনর্বিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, প্রশ্নের ধরন ও নম্বর বণ্টন প্রকাশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। শনিবার বোর্ডের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞান,

ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের মোট ৩২টি বিষয়ের সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীরা এক বছর নতুন কারিকুলামে পড়েছে। আগামী বছর ২০১২ সালের কারিকুলামে পড়বে। প্রথম বছর বিভাগ বিভাজন না থাকলেও এবার তারা

বিজ্ঞান, মানবিক বা ব্যবসা শিক্ষায় অন্তভুক্ত হয়েছে। কারিকুলাম বারবার পরিবর্তনের কারণে অনেক অভিভাবক শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করে গিনিপিগ না বানানোর আহবান জানিয়েছেন। এসব পরীক্ষার্থীদের নতুন বই ছাপার কাজ সেভাবে শুরু না হওয়ায়

ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার জনকণ্ঠকে জানান, ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় নতুন সিলেবাস থেকেই প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে। এরমধ্য থেকেই পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেবে।

তবে এক বছরে এমন পরিবর্তন তাদের শিক্ষাজীবনে প্রভাব ফেলবে বলেও তিনি মনে করেন। ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার নম্বর বিভাজনে দেখা গেছে, ব্যবহারিক না থাকা বিষয়গুলোতে ৭০ নম্বর রচনামূলক অংশে ও ৩০ নম্বর বহুনির্বাচনি অংশে

থাকবে। আর ব্যবহারিকসহ বিষয়গুলোতে তত্ত্বীয় অংশে ৭৫ ও ব্যবহারিক অংশে ২৫ নম্বর থাকবে। তত্ত্বীয় অংশে ৪০ নম্বর ও বহুনির্বাচনি অংশে ২৫ নম্বর থাকবে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের

সময়ে প্রণীত ‘নতুন শিক্ষাক্রম বা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১’ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ ফিরিয়ে নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তখন এক পরিপত্রে বলেছিল, বিদ্যমান শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তাই ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম

চূড়ান্ত করে ২০২৬ সাল থেকে তা পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে। তার আগে ২০২৫ সালে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেকটা আগের শিক্ষাক্রমের ধাঁচের পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে। ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা

(পরীক্ষা ২০২৬ সালে) নিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রেখে পূর্বের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুযায়ী প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত পুস্তক) শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাভিত্তিক এই পাঠ্যপুস্তকগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচিটি সম্পন্ন করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয়

শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে পরিচালিত হবে। বিভাগ-বিভাজন ফিরিয়ে এনে ২০১২ সালের পাঠ্যসূচির বইগুলোই ২০২৫ সালে বিতরণের জন্য পরিমার্জন করে ছাপানোর কাজ চলছে। আগামী বছরের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী যারা ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বসবেন, তারা এসব বই পাবেন।