সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: তদন্ত কমিটিকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রধান উপদেষ্টা প্রায় এক ঘণ্টা তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে প্রাপ্ত তথ্যপত্র নিয়ে আলোচনা করেন।

অক্লান্ত পরিশ্রম করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিল করায় তিনি তদন্ত কমিটিকে অভিনন্দন জানান। বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তদন্ত কমিটির সদস্যদের কাছে সচিবালয়ে ভবিষ্যতে অগ্নিকাণ্ড যেন না ঘটে সে ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে কী কী করা যেতে পারে সে সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করতে নির্দেশনা দেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য বুয়েটের অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) মাকসুদ হেলালী, সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুব রাসেল, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম,

উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, উপ-প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

বৈদ্যুতিক লুজ কানেকশনের কারণে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটে

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো ধরনের নাশকতার প্রমাণ মেলেনি। বৈদ্যুতিক লুজ কানেকশনের কারণে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনের এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তার সঙ্গে প্রাথমিক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বিস্তারিত আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞ দলের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে খুঁটিনাটি জেনে নিয়ে ভবিষ্যতে করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।

১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে: হাসনাত

আগামী ১৫ জানুযারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘ফার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশে একথা বলেন তিনি। সমাবেশে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র জারি হওয়ার আগপর্যন্ত আপনারা পাড়া-মহল্লায় মানুষের কাছে যাবেন।

তারা কী বলতে চায় সেসব কথা নিয়ে আসবেন। তিনি বলেন, আমরা ৩ আগস্ট এই শহীদ মিনার থেকে এক-দফা ঘোষণা দিয়েছিলাম। এই অভ্যুত্থান অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। এ জন্যই পুলিশ,

সচিবালয়ে অনেকেই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আপনাদের বলি আপনারা রিয়েলিটি মেনে নেন। খুনি হাসিনার এই দেশে পুনর্বাসন হবে না। আমরা তাকে সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা যারা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছি, সারাদেশের মানুষ আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে। এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ হয়নি। সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।

কোনো বিপ্লবীর গায়ে যদি হাত পড়ে, সরকারকে এর দায় নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে পারিনি। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ যে নির্যাতন, নিপীড়ন, গুম, খুন করেছে;

সেগুলোর বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হতে থাকবো। বক্তব্য শেষে হাসনাত ‘এই মুহূর্তে দরকার, বিচার আর সংস্কার’ স্লোগান দিতে থাকেন।

বক্তব্যের শেষে তিনি বলেন, আপনাদের সাথে আবারও দেখা হবে ১৫ জানুয়ারিতে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে।

যেসব পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এবারের নতুন পাঠ্যবই!

শিক্ষাপঞ্জি মেনে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে। এবার ৪০ কোটির বেশি বই ছাপানো হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, নতুন পাঠ্যবইয়ে সাহিত্যের পাশাপাশি ইতিহাস বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষণা, শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। জানা গেছে, নতুন ৪০ কোটি বই এর মধ্যে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা ৯ কোটি ৬৪ লাখের মতো। আর মাধ্যমিকে (মাদরাসার ইবতেদায়িসহ) মোট বইয়ের সংখ্যা ৩০ কোটি ৯৬ লাখের মতো।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সরকার এক যুগ আগে তৈরি পুরোনো শিক্ষাক্রমের আলোকে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে জন্য এনসিটিবি ৪১ বিশেষজ্ঞ দিয়ে ৪৪১টি পাঠ্যবই পরিমার্জন করেছে। এতে অনেক বিষয়বস্তু সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। বেশ কিছু গদ্য, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা বা বিষয়বস্তু বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে স্থান পেয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিষয়বস্তুসহ নতুন কিছু গল্প-কবিতা। পঞ্চম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয়ের নতুন বইয়ে ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক অধ্যায়ের প্রথম অংশে প্রথমে রয়েছে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ছবি।

পাশে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। জাতীয় চার নেতার ছবিও রয়েছে। পুরোনো বইয়ে একই স্থানে শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার ছবি ছিল। নতুন বইয়ে একই অধ্যায়ের ‘পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা’ শীর্ষক লেখায় বলা হয়েছে, ‘…পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এই আক্রমণের নাম দিয়েছিল “অপারেশন সার্চলাইট”। ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। ২৬শে মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ২৭শে মার্চ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারো স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।’ একই বিষয়ের পুরোনো বইয়ে এই অংশে ছিল, ‘…পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর এই আক্রমণের নাম দিয়েছিল “অপারেশন সার্চলাইট”।

ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।…’ চতুর্থ শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পাঠ্যবইয়েও স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি রয়েছে। নতুন বইয়ে এই অধ্যায়ের ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক লেখায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ছবির পাশাপাশি মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার ছবি স্থান পেয়েছে। এখানে বিষয়বস্তু হিসেবে বলা হয়েছে, ‘…এ রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ২৬শে মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ২৭শে মার্চ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারো স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।’

পুরোনো বইয়ে এ–সংক্রান্ত লেখায় শুধু বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ছবি ছিল। আর স্বাধীনতার ঘোষণা–সংক্রান্ত স্থানে লেখা ছিল, ‘এ কালরাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের আগে অর্থাৎ ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ওয়্যারলেস বার্তায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। এর ভিত্তিতে ২৬ মার্চ শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এছাড়া পাঠ্যবই থেকে ইতিহাসবিষয়ক আরো কিছু বিষয়বস্তু বাদ দেওয়া হয়েছে। এতদিন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও পতাকা নির্মাণের নিয়মাবলি এবং জাতীয় সংগীত বাংলা বইয়ের প্রচ্ছদের ঠিক পরের পৃষ্ঠায় ছিল। কিন্তু নতুন বাংলা বইয়ে তা পুনর্বিন্যাস করে বইয়ের শেষ প্রচ্ছদের আগের পৃষ্ঠায় নেয়া হয়েছে। এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ে ছয়টি প্রবন্ধ, কবিতা বা ছড়া নতুন করে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ শীর্ষক প্রবন্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদ আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ছবিসহ এই গণ-অভ্যুত্থানে সব শহিদকে স্মরণ করে লেখা যুক্ত হয়েছে।

এই প্রবন্ধে আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে শহিদ মীর নিসার আলী তিতুমীর থেকে শুরু করে এ বছরের জুলাই গণ–অভ্যুত্থান পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে শহিদদের স্মরণ করা হয়েছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান পাঠ্যবইয়ের পরিবর্তনের বিষয়ে জানান, জুলাই বিপ্লবের পর বিপ্লবের গ্রাফিতিসহ বিষয়গুলোকে স্থান দেওয়ার একটি গণদাবি ছিল। এবার ইতিহাসের বইয়ে না দিয়ে বাংলা–ইংরেজি বইয়ে জুলাই বিপ্লবের বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। আর মুক্তিযুদ্ধে অন্য নায়কদের আগে অবহেলা করা হয়েছে। এবার তাদেরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, অতিবন্দনা পরিহার করা হয়েছে। পাঠ্যবইকে রাজনৈতিক দলের প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা বন্ধ করা হয়েছে। তবে গতবারের মতো এবারো থাকছে পাঠ্যবইয়ের ঘাটতি। বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দিতে ৪০ কোটি ১৬ লাখ পাঠ্যবই প্রয়োজন। ছাপাখানার মালিক, মুদ্রণ শিল্প সমিতি ও এনসিটিবি সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ কোটি বই উপজেলা পর্যায়ে পাঠানোর জন্য ছাড়পত্র বা পিডিআই হয়েছে। এখনো ৩৩ কোটি বই ছাপানোই বাকি। ফলে এবার নতুন বছরের প্রথম দিনে সারা দেশে সব শিক্ষার্থী সব বই পাবে না।

ছাপাখানাগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১১৬টি ছাপাখানায় ২৪ ঘণ্টা বিরামহীন পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। তবে ছয় মাসের কাজ এক মাসে শেষ করতে সরগরম ছাপাখানাগুলো। কোনো ফুরসত নেই শ্রমিকদের। মিনিটে মিনিটে বেরিয়ে আসছে ছাপা কাগজ। অন্যপাশে চলছে বাঁধাইয়ের কাজ। ২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসে পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হয়েছিল।

তারপরও সবার হাতে সব বই পৌঁছাতে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এবার মাধ্যমিকের পাঠ্যবই ছাপাতে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ (নোটিশ অব অ্যাওয়ার্ড বা নোয়া) দেওয়া হয় ১০ ডিসেম্বর থেকে। কাগজসংকট না থাকলে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪০ লাখ কপি পাঠ্যবই পাঠানোর সক্ষমতা আছে ছাপাখানাগুলোর। ছাপাখানার মালিক, মুদ্রণ শিল্প সমিতি ও এনসিটিবি কর্মকর্তারা বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিক্ষাক্রম পরিবর্তন, পাঠ্যবই পরিমার্জন, আগের দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র দেওয়া, দেরি করে পরিদর্শন প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করা, বিলম্বে নোয়া (নোট অব অ্যাওয়ার্ড) দেওয়াসহ ছাপাসংক্রান্ত কাজে বিলম্বের কারণে এবার এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখনো বেশ কিছু পরিমাণ বই ছাপার জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে চুক্তিপত্র সইয়ের কাজটিও শেষ হয়নি। ফলে আগামী মার্চ মাসের আগে সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই পৌঁছানো কঠিন হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর ইউনিটি’র গাড়িবহরে হামলা!

বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মার্চ ফর ইউনিটি’র গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে খুলনা মহানগর থেকে রওনা হওয়া শিক্ষার্থীদের গাড়িবহরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, কর্মসূচিতে যোগ দিতে খুলনা থেকে ২৫টি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। বাগেরহাটের মোল্লাহাট মাদরাসাঘাট এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা গাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে

এবং গাড়ি থামিয়ে কয়েকজনকে মারধর করে। পরে শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে মূহুর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত বিশ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে মোল্লাহাট অতিক্রম করার সময় আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। স্থানীয়রা তাদের সহযোগিতা করে বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

থানার সামনে ঘটনা হওয়া স্বত্তেও এ সময় পুলিশ নিরব ভূমিকায় ছিলো বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। ওই এলাকাটি আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এলাকা বলেও জানান তারা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন খুলনার সমন্বয়ক জহুরুল তানভীর জানান,

খুলনা থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের বহর ঢাকায় যাচ্ছিলো। পথে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা এই আক্রমণ করেছে বলে জানান তিনি।

আরেক সমন্বয়ক মিনহাজুল আবেদীন সম্পদ বলেন, পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করা হয়েছে। আমাদের ভাইদের রক্ত ঝরেছে।

এর বিচার অতি দ্রুত করতে হবে, জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আর না হলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে জড়িতদের খুঁজে বের করবে বলে হুশিয়ারী দেন তিনি।- যমুনা টেলিভিশন।

যে কারনে ভারতীয় হাইকমিশনে গেলেন ‘ড.মুহাম্মদ ইউনূস’

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে গিয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই তথ্য জানিয়েছে। প্রেস উইং জানায়, মুহাম্মদ ইউনূস আজ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। তিনি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে গিয়ে দেশটির প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

ভারতীয় হাইকমিশনে খোলা শোকবইয়ে শোকবার্তাও লিখেছেন।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে জ্ঞানী উল্লেখ করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘তিনি কত সাদামাটা ছিলেন। কত জ্ঞানী ছিলেন।মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ভারতকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক জায়ান্টে পরিণত করতে মনমোহন সিং একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন।

উল্লেখ্য,গেল বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস) হাসপাতালে মারা যান ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।

উত্তাল শহীদ মিনার, স্লোগানে-স্লোগানে ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মিছিল-স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। শিক্ষার্থী ও জনতা সেখানে শেখ হাসিনাসহ জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে শহীদ মিনার এলাকায় এ চিত্র দেখা গেছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

এ সময় ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি-আজাদি’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে শোনা যায়।

বক্তারা বলেন, শহীদদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, এর মধ্যে স্বৈরাচারকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন কেউ কেউ। যখনই আমরা চিরতরে দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে চাই, তখনই সুশীল বেশে কিছু ব্যক্তি ও দল বিরোধিতায় নেমে যায়। আমরা প্রয়োজনে তাদেরও প্রতিহত করব।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারের আশপাশে অবস্থান নিচ্ছেন। চেয়ার বিছিয়ে শহীদ মিনারের সামনেও অনেক বিপ্লবীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। অনেকের মাথায় দেশের পতাকা বাধা রয়েছে।

চট্টগ্রাম, নাটোর, পঞ্চগড়, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ছাত্র-জনতাও সকাল থেকে শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান নেন এবং পর্যায়ক্রমে তারা মিছিল নিয়ে শহীদ মিনারে জড়ো হন।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আজ শহীদ মিনারে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করার কথা ছিল। পরে অন্তর্বর্তী সরকার এ ঘোষণাপত্র পাঠ করবে জানালে আজ ঘোষণাপত্র পাঠ হবে কি না তা নিয়ে বিভ্রান্তি শুরু হয়।

গতকাল সোমবার রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে নিজেদের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সেখানে বলা হয়, মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা) কর্মসূচি পালন করা হবে।

ভারতের বিপক্ষে পাল্টা হুংকার দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারত হুংকার দিলে পাল্টা হুংকার দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। সীমান্ত রক্ষায় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পিছপা হবো না। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের সীমানা রক্ষায় তোমরা প্রয়োজনে জীবন দেবে, তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটি হাতছাড়া হতে দেবে না। সীমান্তে প্রতিপক্ষের কাছে কোনো অবস্থাতেই পিঠ প্রদর্শন করবে না।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বিজিবির ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার ও কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে প্রতিপক্ষের কাছে কোনো অবস্থাতেই পিঠ প্রদর্শন না করার জন্য আমি তোমাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। দেশ মাতৃকার রক্ষায় তোমরা প্রয়োজনে জীবন দেবে, তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটি হাতছাড়া হতে দেবে না।

বিজিবির নবীনদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, সীমানা রক্ষায় প্রয়োজনে জীবন দেবে, ‘এক ইঞ্চি মাটি’ হাতছাড়া করবে নাতিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করতে চাই যে, তোমরা আমাদের হতাশ ও নিরাশ করবে না। জেনে রাখবা, তোমাদের দেওয়া নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাই দেশের মানুষের নির্বিঘ্ন ঘুম নিশ্চিত করবে। তোমরাই হবে আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক।

তিনি আরো বলেন, ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে সুপরিচিত এ বাহিনী বাংলাদেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষা এবং সীমান্ত ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানের মহান দায়িত্ব অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সফলতার সঙ্গে পালন করে আসছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সৈনিকরা আজ তোমরা যে তেজোদ্দীপ্ত কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেছো তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এটা সম্ভব হয়েছে কেবল তোমাদের কঠোর প্রশিক্ষণ, নিরলস প্রচেষ্টা, আন্তরিকতা ও অদম্য আগ্রহের জন্য। মনে রাখবা, বৃহত্তর কর্মজীবনে কাজের ব্যাপ্তি ও পরিধি আরো বিস্তৃত হবে।

তোমরা যখন সীমান্তে নিয়োজিত থাকবে তখন তোমাদের সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার ওপরই নির্ভর করবে এ বাহিনীর ভাবমূর্তি ও গৌরব।বিজিবির নবীনদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, সীমানা রক্ষায় প্রয়োজনে জীবন দেবে, ‘এক ইঞ্চি মাটি’ হাতছাড়া করবে নাএসময় অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, ঢাকা,

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ১০২তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত ৩০ জুলাই বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজে (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) শুরু হয়।

প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে সর্বমোট ৬৯৫ জন রিক্রুটের মধ্যে ৬৪৯ জন পুরুষ এবং ৪৬ জন নারী রিক্রুট মৌলিক প্রশিক্ষণ সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। দীর্ঘ ২৩ সপ্তাহের অত্যন্ত কঠোর ও কষ্টসাধ্য এ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে আজ আনুষ্ঠানিক শপথগ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের সৈনিক জীবনের সূচনা হলো।

২০২৫ সালের শিক্ষাবর্ষে ছুটির তালিকায় টানা ২৮ দিন স্কুল বন্ধ!

২০২৫ শিক্ষাবর্ষে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭৬ দিন ছুটি নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তারের সই করা প্রজ্ঞাপনে বার্ষিক শিক্ষাপঞ্জি ও ছুটির তালিকা প্রকাশ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, পবিত্র রমজানের ছুটি শুরু হবে ২ মার্চ। এসময় ঈদুল ফিতর, জুমাতুল বিদা ও স্বাধীনতা দিবসসহ অন্যান্য ছুটি মিলিয়ে টানা ২৮ দিন স্কুল বন্ধ থাকবে।

দীর্ঘ এই ছুটির পর ৮ এপ্রিল ক্লাস শুরু হবে। এছাড়া, ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটির জন্য ১ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত টানা ১৫ দিন ছুটি রাখা হয়েছে। দুর্গাপূজায় ৮ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে লক্ষ্মীপূজা ও ফাতেহা-ই-ইয়াজ দহমসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত।

প্রতি বছরের মতো এবারও প্রধান শিক্ষকের জন্য সংরক্ষিত তিনদিনের বিশেষ ছুটি রাখা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যালয়ের প্রধান এই ছুটি বরাদ্দ করতে পারবেন। এছাড়া, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান উপলক্ষে নিয়মিত ছুটি থাকবে।

শিক্ষা ছুটিতে আরও বলা হয়েছে:
১. শিক্ষাবর্ষ হবে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ সাল পর্যন্ত। সরকার ঘোষিত নির্দেশনার আলোকে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করতে হবে।

২. উল্লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা, প্রাক নির্বাচনি পরীক্ষা, নির্বাচনি পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং বার্ষিক পরীক্ষার উত্তরপত্র অন্তত এক বছর সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতি পরীক্ষার সময় ১২ কর্মদিবসের বেশি হবে না।

৩. স্ব-স্ব বিদ্যালয় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র (পাবলিক পরীক্ষা ব্যতীত) নিজেরাই প্রণয়ন করবেন। কোনো অবস্থাতেই অন্য কোনো উৎস থেকে সংগৃহীত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

৪. পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না। তবে কোনো বিশেষ কারণে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে।

৫. সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্রবার ও শনিবার) ব্যতীত বছরে মোট ছুটি থাকবে ৭৬ দিন।

৬. কোনো সরকারি কর্মকর্তার পরিদর্শন উপলক্ষে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া যাবে না এবং সংবর্ধনা বা পরিদর্শন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ করা যাবে না। সংবর্ধিত বা পরিদর্শনকারী ব্যক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করানো যাবে না।

৭. ছুটিকালীন অনুষ্ঠেয় ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদন ও অন্যান্য পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনে বিদ্যালয় খোলা রাখতে হবে।
৮. এসএসসি পরীক্ষার সময় পরীক্ষা কেন্দ্র ব্যতীত অন্যান্য বিদ্যালয়সমূহে যথারীতি শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকবে।

জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতেই হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হবে।

সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও

পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে।’

আমরা আশা করছি, সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিছুদিনের মধ্যেই সর্বসম্মতিক্রমে এ ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে এবং জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।