ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় বেশির ভাগ মুসলিম দেশ

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিশ্বের ৪৩টি দেশের নাগরিকদের ওপর নানা মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। এই তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত একটি খসড়া তালিকা তৈরি করেছেন। তবে চূড়ান্ত প্রস্তাবে আরো কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কূটনীতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা একটি লাল তালিকা প্রস্তাব করেছেন। এই তালিকায় থাকা ১১টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হবে। এই দেশগুলো হলো—আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা এবং ইয়েমেন।

এ ছাড়া, একটি ‘কমলা’ তালিকাও আছে।

এই তালিকায় থাকা ১০টি দেশের নাগরিকদের আংশিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হবে। এ ক্ষেত্রে দেশগুলোর ধনী ব্যবসায়ীরা প্রবেশ করতে পারলেও অভিবাসী বা পর্যটন ভিসায় আসা ব্যক্তিরা পারবেন না। এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো হলো—বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান এবং তুর্কমিনিস্তান।
প্রস্তাবে একটি খসড়া ‘হলুদ’ তালিকাও অন্তর্ভুক্ত আছে।

যেখানে ২২টি দেশকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রাপ্ত তথ্যগত ঘাটতি দূর করার জন্য বলা হয়েছে, যদি তারা তা না করতে পারে তবে তারা অন্য কোনো তালিকায় স্থানান্তরিত হতে পারে। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো হলো—অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, কেপ ভার্দে, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ডোমিনিকা, ইকুয়াটোরিয়াল গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, সেন্ট কিটস ও নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাও টোমে ও প্রিন্সিপে, ভানুয়াতু এবং জিম্বাবুয়ে।

এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেই একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে। সেই আদেশে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে কোন কোন দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন বা সীমিত করা প্রয়োজন তা চিহ্নিত করতে বলা হয়। তিনি ৬০ দিনের মধ্যে হোয়াইট হাউসে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলেছিলেন।

অর্থাৎ, আগামী সপ্তাহেই জমা দিতে হবে এই প্রতিবেদন।

মোড়লগিরি হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, বিশ্ব নেতৃত্বে হ-য-ব-র-ল

বিশ্বের ভবিষ্যৎ ব্যবস্থা এখন অনেকটাই অনিশ্চিত। কারণ একসময় যেসব স্থিতিশীলতা আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করেছিল, সেগুলো এখন বড় ধরনের চাপের মধ্যে পড়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে, যুক্তরাষ্ট্র ছিল আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো গঠন, মুক্ত বাণিজ্য প্রচার ও নিরাপত্তা জোট রক্ষা করার ক্ষেত্রে প্রধান শক্তি। তবে সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন- বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে এ ব্যবস্থা কতটা টিকবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চীন, রাশিয়া ও বহুপাক্ষিকতাবাদের উত্থানে বৈশ্বিক ব্যবস্থা এখন দুর্বল হয়ে পড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের পতন এবং ট্রাম্পের প্রভাব

বিশ্বের ২০তম শতাব্দীর অধিকাংশ সময় যুক্তরাষ্ট্র ছিল বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি। জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও সামরিক জোট ন্যাটো গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী একটি নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা দেখা গেছে। তবে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি থেকে মার্কিন নীতি একটি বদলে গেছে। ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এই পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতাকে দুর্বল করেছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে সরে আসা, ন্যাটোকে দুর্বল করা ও গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর শুল্ক আরোপ করার মতো সিদ্ধান্তগুলো বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থা নড়েচড়ে দিয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষপাত বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসী পদক্ষেপের দৃঢ় নিন্দা না করা ও ন্যাটোর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সংশয় প্রকাশ পশ্চিমা ঐক্যকে দুর্বল করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে।

চীনের উত্থান

যখন যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক নেতৃত্বের ভূমিকা থেকে পিছিয়ে আসছে, চীন ধীরে ধীরে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করছে। কয়েক শতাব্দী পশ্চিমা ঔপনিবেশিকতার পর, চীন আবারও একটি প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে উঠছে। শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয়, ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ (বিআরআই) মাধ্যমে চীন এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন অংশে তার প্রভাব বিস্তার করেছে। দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ, নৌবাহিনী আধুনিকায়ন ও অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের মাধ্যমে চীন পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা করেছে। একইসঙ্গে চীন একটি বিকল্প শাসন ব্যবস্থা প্রচার করছে, যেখানে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্বৈরাচারী স্থিতিশীলতা প্রাধান্য পায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের উদার গণতান্ত্রিক আদর্শের বিপরীত।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা শুধু সামরিক বা অর্থনৈতিক শক্তির প্রতিযোগিতা নয়, এটি আন্তর্জাতিক আদর্শের প্রতিযোগিতাও। চীন যদি তার উত্থান অব্যাহত রাখে, তাহলে বৈশ্বিক নীতিমালা পরিবর্তিত হতে পারে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও অব্যাহত হস্তক্ষেপের পরিবর্তে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রাধান্য পাবে না।

রাশিয়ার কৌশলগত লাভ

এদিকে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার সুবিধা নিয়ে রাশিয়া তার প্রভাব বিস্তার করছে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ ও ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া পরবর্তী যুদ্ধোত্তর ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। মস্কো একটি হাইব্রিড যুদ্ধ কৌশল অবলম্বন করেছে, যেখানে প্রচলিত সামরিক কৌশলের চেয়ে সাইবার আক্রমণ, মিথ্যা তথ্য প্রচার ও রাজনৈতিক চক্রান্তের মাধ্যমে পশ্চিমা ঐক্যকে দুর্বল করা হচ্ছে। ট্রাম্পের রাশিয়ার প্রতি মনোভাব বিষয়টিকে আরও জটিল করেছে। ন্যাটো সম্পর্কে ট্রাম্পের সংশয় পুতিনকে উত্সাহিত করেছে, যা পশ্চিমা প্রতিরোধের শক্তি কমিয়েছে। এর ফলে এখন ইউরোপকে তার নিরাপত্তা কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে হয়েছে।

বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা

বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান যেমন জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ ঐতিহাসিকভাবে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছিল। তবে এখন সেগুলোর কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ। সিরিয়া যুদ্ধ ও রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে জাতিসংঘ। মূলত নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের ভেটো শক্তির কারণে ব্যর্থ হয় সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে ডব্লিউটিও। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকও এখন চাপে, কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও বেশি প্রভাব চায়। যুক্তরাষ্ট্রের কম প্রতিশ্রুতি এবং চীন ও রাশিয়ার চাপের ফলে বহুপাক্ষিক শাসনের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। যদি এসব প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়ে, তবে বিশ্বের প্রবণতা আঞ্চলিক শক্তি গোষ্ঠী বা অঞ্চলভিত্তিক শক্তির মধ্যে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে। এতে ঐক্যবদ্ধ বৈশ্বিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যাবে।

সংকটে ইউরোপ

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের অভাবে ইউরোপ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের সামনে দাঁড়িয়ে। ঐতিহাসিকভাবে ইউরোপীয় দেশগুলো মার্কিন সামরিক সুরক্ষার ওপর নির্ভর করত, কিন্তু রাশিয়ার বেড়ে ওঠা হুমকি এবং মার্কিন সমর্থন নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে ইউরোপের নেতারা এখন তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা পুনর্বিবেচনা করছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ‘যৌথ কৌশলগত অটোনমি’ প্রস্তাব করেছেন, যেখানে ইউরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর না হয়ে নিজেদের প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তুলতে হবে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাণিজ্য ও জলবায়ু নীতিতে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক প্লেয়ার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। তবে অভ্যন্তরীণ বিভাজন যেমন জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও ব্রেক্সিট, একীভূত অবস্থানে থাকাকে কঠিন করে তুলেছে। যদি ইউরোপ তার প্রতিষ্ঠান ও সামরিক ক্ষমতা শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়, তবে বড়-শক্তিগুলোর নজর পড়বে সেখানে। ফলে বৈশ্বিক শাসন স্বাধীনভাবে এগোতে পারবে না।

ইতিহাসের শিক্ষা এবং বিশ্বব্যবস্থার ভবিষ্যৎ

ইতিহাসে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওঠানামা করে। রোমান ও চীনা সাম্রাজ্য একসময় তাদের সামরিক আধিপত্য, অর্থনৈতিক একীকরণ ও সম্মিলিত নিয়মের মাধ্যমে শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল, তাদেরও পতন হয়েছে। বর্তমান আমেরিকা-নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থা (১৯৪৫ সাল থেকে স্থিতিশীল ছিল), তা এখন একই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

বিশ্ব নেতাদের অবশ্যই এই চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি সঠিক ভারসাম্য খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য যতটুকু সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতা সম্ভব তা চালিয়ে যাওয়া। বর্তমানে এ অস্থিরতা শুধু আমেরিকা-নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থার অবসানের প্রতিফলন কিনা, নাকি এটি একটি অস্থায়ী অস্থিরতা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদি ট্রাম্পের মতো আর কোনও জাতীয়তাবাদী নেতা ক্ষমতায় ফিরে আসেন, তবে যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল নেতৃত্ব আরও দুর্বল হতে পারে। তবে অন্য কোনও নেতৃত্বে পুনরায় যদি আন্তর্জাতিক জোট ও বহুপাক্ষিকতার প্রতি প্রতিশ্রুতি দৃঢ় হয়, তবে কিছু স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

শুধু তাই নয়, চীনের উত্থান ও রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাব বিশ্বব্যাপী দৃশ্যপট গঠনে প্রভাব ফেলবে। দেশগুলোকে তাদের আঞ্চলিক জোট শক্তিশালী করতে, প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ করতে এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্বে বৈচিত্র্য আনতে হবে। ১৯৪৫ সালের আগেও বিশ্বব্যবস্থা চিরস্থায়ী ছিল না এবং এর স্থায়িত্বও অনিশ্চিত।

বিশ্বব্যবস্থার ভবিষ্যৎ শেষ পর্যন্ত নির্ভর করবে জাতিগুলো এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে চলবে। ইতিহাসের আলোকে বলা যায়, অসুবিধা ও বিশৃঙ্খলার সময়কাল পেরিয়ে তারপর নতুন স্থিতিশীলতা আসবে।

৮ মিনিটের উত্তপ্ত বাক-বিতণ্ডায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’ নুর-হান্নান!

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর এবং সমন্বয়ক হান্নান মাসউদের আট মিনিটের টকশোর একটি ক্লিপ। আলোচনায় একে অপরের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন, যা মুহূর্তেই টকশোকে উত্তপ্ত করে তোলে। নুর এবং হান্নান মাসউদ একে অপরকে অভিযোগ করতে গিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণও করেছেন।

নুর দাবি করেছেন, হান্নান মাসউদ এবং তার দল পুরনো রাজনীতির পথে চলে গেছে, যেখানে দুর্নীতি ও নৈতিকতার অবক্ষয় রয়েছে। তিনি বলেন, যারা নতুন রাজনীতির কথা বলে, তারা কিন্তু পুরনো পথে হাঁটছে। তাদের নেতাদের আচরণ থেকেই স্পষ্ট যে, তারা নিজেদের ক্ষমতা ও প্রভাব বজায় রাখতে চায়।”

এদিকে, হান্নান মাসউদও নুরের সমালোচনা করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, “নুর ভাই, আপনি যে রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে কথা বলেন, সেখানে কিছু না কিছু প্রশ্ন উঠে থাকে। আপনার দল, আপনার কার্যক্রম নিয়ে সবসময় বিতর্ক উঠছে।

নতুন রাজনীতির নাম করে আমরা কখনোই পুরনো রাজনৈতিক প্রথাগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে চাই না।” এছাড়া, তাদের আলোচনায় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী আন্দোলন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

নুর এবং হান্নান মাসউদ উভয়েই নিজেদের দলের কাজকর্ম এবং জনগণের জন্য তাদের ভূমিকা নিয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেছেন। এই টকশোর মধ্যে দুই নেতার মধ্যে তর্ক-বিতর্ক ছড়িয়ে পড়লেও, তাদের সমালোচনার ভিত্তি ছিল দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের প্রতি গভীর উদ্বেগ এবং পরিবর্তনের জন্য তাদের প্রতি তীব্র আগ্রহ।

শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে বিতর্ক, আ. লীগ কর্মীর হাতে বিএনপি কর্মী গু’লিবিদ্ধ

শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে চায়ের দোকানে বিতর্কে আওয়ামী লীগ কর্মী ইমরানের গুলিতে বিএনপি কর্মী আজগর হোসেন (২৫) আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, ২ রাউন্ড তাজা গুলি ও ১ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে চৌগাছা উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। চৌগাছা থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহত আজগর ফুলসারা ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের বিএনপি নেতা আব্বাস আলীর ছেলে। ইমরান একই গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালামের ছেলে।

আহতের ফুফাতো ভাই বিপুল হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনার দেশে ফেরা না ফেরা নিয়ে সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য কবীর হোসেনের বাবা আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ হোসেনের সঙ্গে বিএনপি কর্মী ওলিয়ার রহমান এবং গুলিবিদ্ধ আজগরের বাবা ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আব্বাস আলীর বিতর্ক হয়।

এ নিয়ে সন্ধ্যায় গ্রামের পণ্ডিত মোড়ে ইউপি সদস্য কবীর হোসেনের চাচাতো ভাই (আলতাফের ভাতিজা) শিপন আমাকেকে হুমকি দেয় ও আব্বাস-ওলিয়ারদের খুঁজতে থাকে। তখন আমি পণ্ডিত মোড় থেকে চলে যাই।’

তিনি বলেন, ‘পরে তারাবির নামাজের আগ দিয়ে গ্রামের মুদি দোকানের সামনে মামাতো ভাই আজগরসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এ সময় আলতাফ হোসেনের আরেক ভাতিজা ইমরান পিস্তল উঁচিয়ে আমার (বিপুল) দিকে গুলি ছোড়ে। আমি সরে গেলে গুলি পাশে থাকা আজগরের পায়ে বিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়রা ইমরানকে আটক করে মারপিট করে এবং পুলিশে খবর দেয়।

তবে এরই মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা চিকিৎসা দেওয়ার নাম করে ইমরানকে নিয়ে সরে পড়ে। পুলিশ এসে গুলিবিদ্ধ আজগরকে উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলি ও এক রাউন্ড ব্যবহৃত গুলির খোসাসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।’

চৌগাছা থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ আজগরকে উদ্ধার করে চৌগাছা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার্থে তাকে তার বাবা যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। তিনি ফিরে এজাহার দায়ের করবেন। অভিযুক্তকে আটকের চেষ্টা চলছে।’

এবার ট্রাম্পের হু’মকির বিরুদ্ধে ‘কড়া বার্তা’ দিলেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী!

কানাডাকে নিজেদের অঙ্গরাজ্য করার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এ হুমকির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। শপথের পর তিনি এ বার্তা দেন। শনিবার ( ১৫ মার্চ) সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রাজধানী অটোয়ার রিডা হলের বাইরে সমবেত জনতার উদ্দেশে কার্নি বলেন, আমরা কখনই, কোনো আকার বা আকৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হব না। আমরা মৌলিকভাবে একটি ভিন্ন দেশ।

ব্যাংক অফ কানাডা এবং ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের সাবেক এ গভর্নর বলেন, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ‘সম্মান আশা করে’, একই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে তার সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ‘একসাথে কাজ করার’ উপায় খুঁজে পাবে।

এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, অর্থনৈতিকভাবে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হলে দেশটির জন্য ভালো হবে। এ বিষয়ে কার্নি বলেন, এটা পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়।

এদিকে গত রোববার সদস্যদের ভোটে লিবারেল পার্টির নতুন নেতা বাছাই হয়। এতে মার্ক কার্নি ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ড পেয়েছেন ১১ হাজার ১৩৪ ভোট।

টানা ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ট্রুডো। এরপর তার উত্তরাধিকার বাছাইয়ের জন্য ৯ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছিল।

কানাডার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হাউস অব কমন্সের সবচেয়ে বড় দল হিসেবে যিনি লিবারেল পার্টির প্রধান হবেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রীও হন তিনি। এ হিসেবে মার্ক কার্নি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কার্নি এমন সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন যখন কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কানাডিয়ান পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যা কানাডার অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে। কার্নি এই পরিস্থিতিকে ‘জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণকারী মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

মার্চ মাসেই শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড়ের প্রবল আশঙ্কা, নদীবন্দরগুলোতে রয়েছে সতর্ক সংকেত!

চৈত্রের শুরুতেই কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বাভাস দিলেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ে পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ। তার তথ্য মতে, চলতি মাসেই সারা দেশে তিনবার কালবৈশাখী ঝড়ের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) তার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য দেন তিনি। পোস্টে তিনি লেখেন, শনি ও রোববার (১৫ ও ১৬ মার্চ) সিলেট, ময়মনসিংহ (নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ জেলা), চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

এ অবস্থায় আগামী বৃহস্পতি থেকে রোববার (২০ থেকে ২৩ মার্চ) খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

শুক্র থেকে সোমবার (২৮ থেকে ৩১ মার্চ) রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। এ দিন ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শনিবার (১৫ মার্চ) আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ভারতের কেন এত বেশি ভয় বাংলাদেশ নিয়ে? কেনই বা তারা হাসিনাকেই বারবার চায়?

কোন প্রতিবেশির কাছেই ওরা ভালো নয়, প্রতিবেশিদের চাপে রাখা আর সেদেশে দ্বন্দ্ব তৈরি করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। বলছিলাম আমাদের প্রতিবেশি দেশ ফ্যাসিস্ট হাসিনার পরম মিত্র ভারতের কথা। তবে ইদানিং বাংলাদেশ নিয়ে খুব বেশি চুলকানি ধরেছে দাদাবাবুদের। বাংলাদেশ নিয়ে কেন এত বেশি ভাবনা ভারতের? কেনই বা তারা হাসিনাকেই চায় বারবার?

ভারত সবসময়ই তার প্রতিবেশি দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলংকা এমনকি মিয়ানমারের ভিতরেও রয়েছে ভারতের হস্তক্ষেপ। এক্ষেত্রে মূলত তারা ব্যবহার করে থাকে তাদের দেশের বিশেষ বাহিনী ‘র’ কে।

প্রতিটি দেশেই ‘র’ এর এজেন্ট রয়েছে যারা কখনো প্রকাশ্যে আবার কখনো গোপনীয়তার সাথে অবস্থান করে দেশগুলোতে। এদের মূল উদ্দেশ্যই হলো প্রতিবেশি দেশগুলোর ভিতরে দ্বন্দ সৃষ্টি করা। যাতে তারা এসবেই ব্যস্ত থাকে। আর বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের বেশি লাফালাফি করার বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম চায়না ও পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ক।

ভারতের ঘোর শত্রু এই দুই দেশ বর্তমান বাংলাদেশের পরম মিত্রে পরিণত হয়েছে। এছাড়া আর একটি কারণ সেভেন সিস্টর্স। মনে পড়ে ড. মোহাম্মদ ইউনূস হাসিনা পালানোর পর প্রথমেই ভারতের এই অংশটি নিয়ে কথা বলেছিলেন?

ভারত ভালো করেই জানে ওরা একটু বারাবারি করলেই ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে পুরো দেশ। সম্প্রতি ভারতের চিকেন নেকের কাছেই লালমনিরহাটে এশিয়ার সবচেয়ে বড় বিমানঘাটি নির্মাণের গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছিলো তা নিয়েও রাতের ঘুম হারাম মোদি সরকারের।

ভারত বাংলাদেশের সাথে সরাসরি দ্বন্দে জড়ানো মানে চীন ও পাকিস্তানের সাথেও দ্বন্দ সৃষ্টি করা। একটু খানি কিছু হলেই চিকেন নেক থেকে আলাদা হয়ে যেতে পারে দাদাবাবুরা। ফ্যাসিস্ট হাসিনার কাজই ছিলো ভারতের দালালি করা। ভারতকে শুধু দিয়েই যাওয়া, হাসিনা এমনভাবে ভারতের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করতো মনে হতো দেশটা বোধহয় ইন্ডিয়ারই কোন প্রদেশ।

বিশ্বের কোন দেশ হাসিনাকে আশ্রয় না দিলেও দাদারা ঠাঁই দিয়েছে, শুধু এতটুকুতেই ক্ষান্ত হয়নি ওরা হাসিনাকে আবার দেশে ফেরানোর পায়তারা করছে। ভারত সবকিছুই করছে নিজেদের স্বার্থে নিজেদের দেশ রক্ষা করতে।

গণমাধ্যমে ঘাপটি মেরে আছে হাসিনার দোসররা, অসাবধানতায় ঝলক দেখালেন ‘বর্ণা’

ফ্যাসিস্ট হাসিনার গণহত্যা চালিয়ে ভারতে পালানোর ঘটনা ৭ মাস পেরিয়েছে। টানা দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনামলে তাকে ফ্যাসিস্ট ও হিংস্র হয়ে ওঠার পেছনে গুরুতরভাবে ভূমিকা রেখেছিল কিছু গণমাধ্যম ও দোসর সাংবাদিকরা। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার পতন হলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এখনো ঘাপটি মেরে আছে সেসব দোসররা। রয়েছে সুযোগের অপেক্ষায়। এখন টিভির নিউজরুম এডিটর ও টেলিভিশন উপস্থাপিকা জেনিসিয়া বর্ণার আচমকা ফাঁস হওয়া গা‌লি‌কাণ্ডে যেন সেই চিত্রই উন্মোচিত হয়েছে, বলছেন নেটিজেনরা।

জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষনেতা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলোনের প্রধানমুখ হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলমকে লাইভ অনুষ্ঠানে শুয়োর বলে চাকরী হারিয়েছেন বর্ণা।
সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া ন্যাক্কারজনক ঘটনা, আট বছরের শিশু আছিয়া নিজ বোনের শশুরবাড়িতে গণধর্ষনের স্বীকার হয়ে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করলে। ঘটনার প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমিক ভূমিকায় একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল ‘এখন টিভি’ সংবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে সরাসরি সম্প্রচারে ছিলো।

অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারে থাকা অবস্থায়, কারিগরি ত্রুটির ফলে, স্টুডিও ইসনাইড কনভার্সেশনের একটি অংশ সরাসরি সম্প্রচারে চলে আসে। যেখানে নিউজরুম থেকে একজন জিজ্ঞেস করছিলেন, হাসনাত এবং সারজিস মাগুরায় গিয়েছেন কি না। তার প্রতিউত্তরে এখন টিভির উপস্থাপিকা বর্ণা আনকোট অবস্থায় বলেন, এই শুয়োর গুলো গেলেই কি আর না গেলেই কি।

মুহুর্তের মধ্যে টিভি ফুটেজটি ভাইরাল হয়। সমালোচনার ঝড় শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিতর্কের মুখে এখন টিভির সিইও তুষার আব্দুল্লাহ তড়িঘড়ি করে টিভি উপস্থাপিকা জেনিসিয়া বর্ণাকে চাকরিচ্যুত করেন।

নেটিজেনরা বলছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর সাংবা‌দিক‌রা অভ‌্যুত্থা‌নের নায়ক ছাত্রনেতা‌দের কতটা ঘৃণা ক‌রে তা প্রমাণ হ‌য়ে‌ছে আচমকা ফাঁস হওয়া এই গা‌লি‌তে। ছাত্রদের তা‌রাই ঘৃণা ক‌রে, যারা জুলাই গণহত‌্যার সমর্থক। একজন সাংবা‌দিকের অভ‌্যুত্থান ও অভ‌্যুত্থানকারী‌দের এতটা বি‌দ্বেষ থাকলে নির‌পেক্ষ হ‌বেন কী ক‌রে? যা গা‌লিকা‌ন্ডের আসল আলাপ। সাংবা‌দিকতা রাজ‌নৈ‌তিক কর্মীর জন‌্য নয়।

এদিকে, সেই সাংবাদিকদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ নিজেই।গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত ২টা ২০ মিনিটে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, এখন টিভির সাংবাদিকদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই দ্বিমত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম। আপনার এই গালির স্বাধীনতার জন্যই আন্দোলন করেছিলাম। শুধু মত প্রকাশ নয়, দ্বিমত প্রকাশও অব্যাহত থাকুক।

ফেসবুক ব্যবহারকারী ইসরাফিল ফরাজী লিখেছেন, গতকাল রাতে ওই গণমাধ্যম যা করেছে সেটা তার অফিস পলিসি। হাসনাতেরও নিজস্ব একটি মতাদর্শ রয়েছে। আমিও মনে করি ওদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। মিডিয়ার ৯৫% ওদেরই লোক। একটা ভয়েস শুধু ভুলে প্রকাশ হয়েছে বলে বুঝা গেছে। এমন কত হাজার গা*লি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন হাউজ দেয় তার কী হবে?

চব্বিশের অভূত্থানকে মিডিয়া ভুলিয়ে দিচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। এটা শুধু পুরনোরা নয় নয়া ফ্যাসিজম যারা প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারাও বিপ্লবের কেনো ফলোআপ অনুষ্ঠান করছে না। এতে করে মানুষ ভুলতে বসেছে চব্বিশে একটি বিপ্লব বাংলাদেশে হয়েছিল। কয়েক বছর পরই দেখা যাবে এর ফলাফল।

মোস্তফা সারিয়ার রাজিব লিখেছেন, যেসব সাংবাদিক কট্টর আওয়ামীলীগ ও সুবিধাভোগী এরা তো ছাত্রদের ঘৃণা করবে! ফ্যাসিস্টদের সমর্থক এইসব সাংবাদিকদের প্রতি করুনা দেখানো যাবে না! হাসিনার আমলে তো গুম হয়ে যেত। সাংবাদিকদের অনেকেই আমাদের বাচ্চাদের খুন করার সমর্থন দিয়েছে। তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এরা এখনও সক্রিয়। যারা আবারও সুযোগ পেলে আমাদের সন্তানদের খুন করার ন্যারেটিভ তৈরী করবে।

সাংবাদিক গাজী আনোয়ার লিখেছেন, দ্বিমত প্রকাশের ভাষাও শালীন এবং সাবলীল হওয়া উচিত।সাংবাদিকতায় প্রফেশনালিজম এর বাহিরে গেলে চাকরিচ্যুত হবে স্বাভাবিক।সাংবাদিক হিসেবে পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতার মানদণ্ড লঙ্ঘণ করা যায় না।
সাংবাদিকতা কোনো লেবাস না, কিন্তু অনেকে লেবাস নিয়েছেন সাংবাদিকতার। এগুলো আসলে নিচু জাতের এক্টভিস্ট!

সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়যেখানে দেখা যাচ্ছে, দোসর সাংবাদিকরা কিভাবে সাবেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আরো হিংস্র হয়ে উঠতে উৎসাহ জুগিয়েছিলেন। তারা হাসিনার মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে নগ্ন সমর্থন, দমনপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা ও নির্লজ্জ চাটুকারিতার মাধ্যমে রক্তপিপাসু হাসিনাকে আরও ভয়ঙ্কর, নিপীড়ক ও গণহত্যাকারী হয়ে ওঠতে উৎসাহ জুগিয়েছেন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

জানা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি গত বছরের ২৪ জুলাইয়ের। ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যা চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে হাসিনার সঙ্গে মতবিনিময়ের নামে তার চাটুকারিতা করেন বাছাইকৃত দোসর সাংবাদিকরা। হাজার হাজার হতাহত ছাত্রজনতার জন্য তাদের বিন্দুমাত্র সমালোচনা করতে দেখা তো যায়নি উল্টো বিটিভি ভবন ও মেট্রোরেলের জন্য মায়া কান্না এবং প্রশাসনরে ক্র্যাকডাউনের প্রশংসা করে নরপিশাচ হাসিনাকে রক্তাক্ত দমনপীড়নে আরও উৎসাহ দেন। ফ্যাসিবাদের দোসর এসব সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এখনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা।

গণজাগরণ মঞ্চের আলোচিত সেই লাকি আক্তারের মৃ’ত্যু! যা জানা গেল

দেশজুড়ে বেড়েছে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা, এর প্রতিবাদে মাঠে নেমেছে ধর্ষণবিরোধী বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণী পেশার মানুষ। একই দাবিতে দীর্ঘ ১৩ বছর পর রাজপথে দেখা যাচ্ছে গণজাগরণ মঞ্চের আলোচিত সেই লাকি আক্তারকে। এরই মাধ্যে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে।

এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ খবর ছড়িয়েছে দুর্বৃত্তের হামলায় নিহত হয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের এই নেত্রী। কিন্ত সত্যিই কি তাই নাকি গুজব! ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামী কণ্ঠ লাকি আক্তার নিহত, ১৩ মার্চ স্বাধীন নিউজ নামে একটি ওয়েবসাইটে শীর্ষক শিরোনামে এমন একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

যেখানে স্বাধীন নিউজ জানায়, বাংলাদেশের অন্যতম সংগঠক ও অধিকারকর্মী ১২ই মার্চ রাত ১২টায় দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হয়েছেন। রাজধানীর শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের এক সভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে একদল মুখোশধারী সন্ত্রাসী তাকে ছুরি ও লাঠিসোঁটা দিয়ে আঘাত করে৷ স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপরেই লাকি আক্তারের নিহত হওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে, আর এ বিষয়টি নজরে আসে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানারের।

রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীন নিউজের ওই প্রতিবেদনটিতে চিকিৎসক ও পুলিশের কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। এমনকি কোন হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল বা কোন স্থানে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল সে বিষয়েও উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া স্বাধীন নিউজ ওয়েবসাইটটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ওই ওয়েবসাইটটি একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট।

রিউমার স্ক্যানার আরো জানায়, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনকারীর লাকি আক্তারের মৃত্যুর দাবিটি সঠিক নয়। বরং কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কী ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে এই সংক্রান্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সুতরাং ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনকারী লাকি আক্তার মারা যাওয়ার সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

সূত্রঃ https://youtu.be/8B0ZJ9cgRhU?si=nAlLMF1GKSVZjW30

ভারতের সেনাপ্রধান শেখ হাসিনার ফেরা নিয়ে কি ‘মন্তব্য’ করেছেন?

সম্প্রতি বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ফিরলে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক আগের মতো হবে শীর্ষক মন্তব্য ভারতীয় সেনাপ্রধান করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে শেখ হাসিনা ফিরলে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক ভালো অবস্থানে যাবে। তবে ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ খবর সঠিক নয়। ভারতীয় সেনাপ্রধান এমন মন্তকব্য করেননি।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ফিরলে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক আগের মতো হবে শীর্ষক মন্তব্য করেননি ভারতীয় সেনাপ্রধান বরং, ভারতীয় সেনাপ্রধানের বাংলাদেশে সরকার বদলালে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক পরিবর্তন হতে পারে শীর্ষক মন্তব্যকে আলোচিত ভুল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ‘বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ফিরলে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক আগের মতো হবে’ শীর্ষক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ভিডিওতে জাতীয় দৈনিকের লোগো লক্ষ করা যায়।

ওই দৈনিকের ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি ভিডিওসহ ১০ মার্চ প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির সঙ্গে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে সরকার বদলালে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক পরিবর্তন হতে পারে: ভারতীয় সেনাপ্রধান’।

এ বিষয়ে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে ৯ মার্চ ‘বাংলাদেশে সরকার বদলালে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তন হতে পারে’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হলে ভারতের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের পরিবর্তন আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সামরিক সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী এবং উভয় দেশের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবে নোট বিনিময় করে থাকে।

অর্থাৎ গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকেও এটি নিশ্চিত যে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ফিরলে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক আগের মতো হবে শীর্ষক মন্তব্য ভারতীয় সেনাপ্রধান করেননি।

সুতরাং ভারতীয় সেনাপ্রধানের বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন হলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্তব্যকে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসলে সম্পর্ক আগের মতো হবে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৮ মার্চ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের অনুষ্ঠান ‘ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে’ বক্তব্য দেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সামরিক সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী এবং উভয় দেশের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবে নোট বিনিময় করে থাকে।