একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, দিশেহারা ভারত!

পশ্চিমাদের একরে পর এক নিষেধাজ্ঞায় ভয়ানক চাপে পড়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যতই নরেন্দ্র মোদিকে বন্ধু বলে সম্বোধন কুরন না কেন ঠিকই মোদির উপর শুল্ক আরোপ আর নিষেধাজ্ঞার খড়গ ছাপিয়ে দিয়েছেন।

শুধু যুক্তরাষ্ট্র কেন যুক্তরাজ্য, ইইউর নিষেধাজ্ঞার কপটে পড়েছে বেশ কিছু ভারতীয় কোম্পানি। এর মধ্যে আছে জয়পুরভিত্তিক ইলেকট্রনিক্স বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান ইউনিসিয়া ইমপেক্স প্রাইভেট লিমিটেড, রুশ বার্তা সংস্থা আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সেমাবার এই কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনছে লন্ডন এবং ব্রাসেলস কর্তৃপক্ষ।

শুধু তাই নয় ইইউর নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসছে প্রতীক কর্পোরেশন যেটি মুম্বাইভিত্তিক একটি কোম্পানি যেটি মোটরগাড়ি পণ্য তৈরি করে থাকে। আরটি বলছে রাশিয়া এবং ইরানের সাথে বাণিজ্য করায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।

বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন নিয়ে ট্রাম্প মিথ‍্যাচার করেছেন: ড. ইফতেখারুজ্জামান

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল শক্তিশালী করতে একটি প্রতিষ্ঠানকে ২৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া হয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বক্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান একে মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করেছেন।

ট্রাম্পের বক্তব্যে বলা হয়, মাত্র দুই সদস্যের একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিমণ্ডল শক্তিশালী করতে কাজ করেছে এবং তারা ২৯ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ পেয়েছে। তবে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে ২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।

মুর্শেদ হাসিবের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করতে বিভিন্ন সূত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশে চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে স্ট্রেন্থেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ (SPL Bangladesh) নামের একটি প্রকল্পের খোঁজ পাওয়া গেছে। এটি ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (DI) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা পরিচালনা করছে।

২০১৭ সাল থেকে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তৃণমূল পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের সাথে সংলাপ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালের নভেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আরও ১০ মাস বাড়ানো হয়েছে।

তবে ট্রাম্পের উল্লেখ করা সংস্থাটি ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বাংলাদেশে কাজ করা ৭৬টি এনজিওর গত সাত বছরের আর্থিক লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইউএসএআইডির (USAID) মাধ্যমে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার (২৯ মিলিয়ন ডলার) অনুদান ছাড়ের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

এনজিও ব্যুরোর এক কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো সংস্থা বা প্রকল্পের তথ্য নেই, যেখানে ২৯ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তহবিলের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা অর্থ কড়া নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে ব্যয় করা হয়,

এবং এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধিত কোনো সংস্থার মাধ্যমে এই অর্থের লেনদেন হয়নি। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার, অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন। বাংলাদেশে বিদেশি অর্থায়নের প্রতিটি লেনদেন কঠোরভাবে তদারকি করা হয়। মাত্র দুইজন কর্মী থাকা একটি সংস্থাকে ২৯ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার দাবি অবাস্তব এবং অগ্রহণযোগ্য।”

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দক্ষতা বিষয়ক বিভাগ জানায়, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে এবং এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।

চাপের মুখে ভারত, শেখ হাসিনাকে আর সমর্থন করবে না মিডিয়া!

দিল্লির আকাশে তখন ঝলসানো দুপুর, জানালার ওপারে গাঢ় রোদ, কিন্তু ঘরের ভেতর শীতল বাতাস বইছে। সোফার কোণে হেলান দিয়ে বসে আছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, হাতে ভারতের একটি সংবাদপত্র। বড় করে ছাপানো হেডলাইনটি পড়তে গিয়ে তার চোখে অস্বস্তি ফুটে উঠছে—”বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় বদলের সময় এসেছে হাসিনাকে সমর্থন করা কি ভারতের জন্য ক্ষতিকর?”

শেখ হাসিনা কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে পড়লেন, তার ঠোঁট কামড়ে ধরে আরো মনোযোগ দিয়ে সংবাদটি পড়তে শুরু করলেন। সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে তার অস্বস্তি আরও বেড়ে গেছে। দ্যা প্রিন্ট, হিন্দুস্থান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে—সব জায়গাতেই এখন প্রশ্ন উঠছে হাসিনার সম্পর্কে।

একসময় যেসব সংবাদমাধ্যম ছিল তার পক্ষে, তারা এখন প্রশ্ন তুলছে, কেউ সরাসরি বলছে, “বাংলাদেশের জনগণের কাছে হাসিনার গ্রহণযোগ্যতা নেই,” আর কেউ পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ভারতকে নতুন কৌশল নিতে হবে।

এক সময় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে শেখ হাসিনার প্রতি ছিল গভীর সমর্থন, এমনকি বলা হতো হাসিনাই ভারতের একমাত্র নির্ভরযোগ্য মিত্র। তবে বর্তমানে ভারতের কূটনৈতিক মহলে হাসিনাকে নিয়ে বিভক্তি দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে তার জনপ্রিয়তা তলানিতে পৌঁছেছে এবং ভারতীয় নীতি এখন বিপদে পড়তে পারে। দ্যা প্রিন্টের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, “শেখ হাসিনাকে সমর্থন করে ভারত নিজেদের বিপদ ডেকে আনছে, বাংলাদেশের জনগণের ক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠছে, এবং ভারতের স্বার্থ এখন হুমকির মুখে।”

ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও এ বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে বিজেপি বাংলাদেশী জনগণকে পাকিস্তানের সমর্থক হিসেবে চিত্রিত করছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একটি সতর্কবার্তা উঠে এসেছে, “দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশকে হারানো ভারতের জন্য কৌশলগত আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হতে পারে।”

বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের ক্ষোভ শুধু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নয়, বরং ভারতীয় নীতির বিরুদ্ধেও প্রকাশিত হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত বিরোধী মন্তব্যের সুনামি দেখা যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। এমনকি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, ভারত তাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রকে বাঁচাতে গিয়ে পুরো বাংলাদেশকেই হারাতে বসেছে।

এখন ভারতের কূটনৈতিক মহলে বিভক্তি দেখা যাচ্ছে। এক পক্ষ বলছে, “হাসিনাকে সমর্থন অব্যাহত রাখা উচিত,” অন্য পক্ষ বলছে, “এখনই সরে যাওয়ার সময়।” একজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন, “শেখ হাসিনার ভারত নির্ভরতা এখন তার রাজনৈতিক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের সমর্থন তাকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না, বরং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি ডেকে আনবে।”

এখন প্রশ্ন উঠছে, “নরেন্দ্র মোদি সরকার কি শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে ছেড়ে দেবে, নাকি তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য নতুন কোন কৌশল গ্রহণ করবে?” ভারতের সামনে দুটি পথ রয়েছে: এক, হাসিনাকে ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা, এবং দুই, হাসিনাকে বাঁচাতে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়া—যা ভারতের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বড় ঝুঁকি হয়ে উঠতে পারে।

এই সংকটপূর্ণ সময়ে ভারতের পরবর্তী সিদ্ধান্ত শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। শেখ হাসিনা জানেন, তার কপালের ভাঁজ আরও গভীর হতে চলেছে। প্রশ্ন একটাই—দিল্লি কি সত্যিই তার বিশ্বস্ত হাসিনাকে ছাড়তে চলেছে?

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=y0WzQYC3Qsk&ab_channel=NTVNews

ফের বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা!

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোশ্যাল মিডিয়ায় বক্তব্য রাখাকে কেন্দ্র করে ফের কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে। হাসিনার বক্তব্যকে বানোয়াট ও উস্কানিমূলক অভিহিত করে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করেছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি শেখ হাসিনা যেন বক্তব্য না দেন,

সেজন্য ঢাকার ভারতীয় ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার পবন বাধেকে তলব করে প্রতিবাদ নোট দেওয়ার পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এতে করে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা আবারও বেড়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলন ও গণবিপ্লবের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে তিনি বক্তব্য দেন।

আর এটিকে কেন্দ্র করে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। পবন বাধের কাছে দেওয়া প্রতিবাদ নোটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘গভীর উদ্বেগ, হতাশা এবং গুরুতর আপত্তি’ প্রকাশ করেছে।

হাসিনার বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য-বিবৃতিগুলো ঢাকা-দিল্লির মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সহায়ক নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এতে। এছাড়া ভারতে থাকাকালীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অন্যান্য যোগাযোগ চ্যানেলের মাধ্যমে হাসিনাকে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখতে, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার মনোভাব নিয়ে অবিলম্বে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ভারতকে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ড. ইউনূসের সঙ্গে বসে কাচ্চি খেতে চান ভারতীয় সাংবাদিক ‘ময়ূখ রঞ্জন’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের পর এবার ড. ইউনূসের ইন্টারভিউ নিতে চান ভারতীয় সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন। তবে এবার শুধু ইন্টারভিউই নয়, এক সঙ্গে বসে খেতে চান কাচ্চি, পায়েস ও পিঠা। ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার উপস্থাপক ও স্ক্রিপ্ট রাইটার ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ।

বাংলাদেশের অনেকে মজা করে তাকে হকার সাংবাদিক বলেও ডাকেন। এবার সেই সাংবাদিকের মুখোমুখি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। জবাব চায় বাংলা নামের এদিনের টকশোতে উঠে আসে বাংলাদেশের বিভিন্ন ইস্যু।

প্রশ্ন করা হয়, ডাস্টবিনে শেখ হাসিনার ছবি, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, সেন্টমার্টিন বিক্রিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়ে। ঠান্ডা মাথায় সব প্রশ্নের জবাব দেন প্রেস সচিব। অবশ্য অন্য দিনের মতো এদিন খুব একটা উত্তেজিত হয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়নি ময়ূখকে। আলোচনার এক পর্যায়ে প্রেস সচিব ময়ূখকে বাংলাদেশে আসার দাওয়াত দেন।

মুখে মুখে না শুনে সরেজমিনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথা বলেন। এ সময় ময়ূখ বলেন তিনি আসবেন। বাংলাদেশে এসে, কাচ্চি, পায়েস ও পিঠা খেতে চান। এসব খেতে খেতে ড. ইউনূসের ইন্টারভিউ করতে চান। আগে এই রিপাবলিক বাংলা চ্যানেলের নাম-গন্ধ খুব একটা শোনা না গেলেও ৫ আগস্টের পর থেকেই বাংলাদেশের সবাই চিনতে শুরু করে এই চ্যানেলটি।

কারণ শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তিকর আর মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে রিপাবলিক বাংলা। যা ময়ূখকে সরাসরি বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

ভোটারে নেই আস্থা, পুণ্যস্নানেই মোদীর ভরসা?

বুধবার মহাকুম্ভে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সঙ্গমে পুণ্যস্নান করবেন মোদী। আর বুধবারই রয়েছে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন। ভোটের দিন মোদীর পুণ্যস্নান ঘিরে সরগরম রাজনীতির ময়দান। প্রধানমন্ত্রীর পুণ্যস্নানকে ‘ভোটের

রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করেছে উদ্ধবপন্থী শিবসেনা। অন্য দিকে, মৌনী অমাবস্যার ভোরে কুম্ভে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় সোমবার উত্তাল হয়েছে সংসদ। আজ সংসদে ভাষণ দেওয়ার কথা মোদীর।
কখন পুণ্যস্নান করবেন মোদী?

জানা গেছে, বুধবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে সঙ্গমে পুণ্যস্নান করবেন তিনি। সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তাঁর প্রয়াগরাজ বিমানবন্দরে নামার কথা। সেখান থেকে রওনা দেবেন আরিয়েল ঘাটের উদ্দেশে। সেখান থেকে নৌকা করে মহাকুম্ভে পৌঁছবেন তিনি।

অন্য দিকে, বুধবারই রয়েছে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন। জাতীয় রাজনীতির অন্যতম মূলকেন্দ্র দিল্লির ভোটের দিন মোদীর কুম্ভ সফর এবং পুণ্যস্নান রাজনৈতিক দিক থেকে আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে। সবটাই ‘চমক’ বলে সরব হয়েছে বিরোধীদের একাংশ। দিল্লিতে ভোটের দিনই কেন পুণ্যস্নান, তা নিয়েও সরব হয়েছেন অনেকে।

মৌনী অমাবস্যার ভোরে কুম্ভে স্নান করতে গিয়ে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় সোমবার উত্তাল হয় সংসদ। কক্ষত্যাগ করেন বিরোধী সাংসদররা। পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় ১ হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজ্যসভার প্রধান বিরোধী দলনেতা

মল্লিকার্জুন খাড়গে। লোকসভা এবং রাজ্যসভা থেকে কক্ষত্যাগ করেন বিরোধী সাংসদরা। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার মোদীর কুম্ভ সফর নয়া মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভারতের অস্ত্র কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, কেঁপে ওঠে ৫ কিমি এলাকা

সকাল সকাল বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের অস্ত্র কারখানা ও আশপাশের এলাকা। এতে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে মহারাষ্ট্রের ভান্ডারা জেলায় এই ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দ এতোটাই তীব্র ছিল যে তা পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে শোনা গেছে বলে জানা গেছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শুক্রবার সকালে নাগপুরের কাছে একটি অস্ত্র কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের ভান্ডারা জেলার এই কারখানায়

সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে এই বিস্ফোরণটি ঘটে বলে জেলা কালেক্টর সঞ্জয় কোলতে জানিয়েছেন। বিস্ফোরণের পর উদ্ধারকারী ও চিকিৎসা কর্মীরা জীবিতদের সন্ধান করছেন এবং দমকলকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন বলে জানানো হয়েছে।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ নাগপুরের কাছে জওহর নগরের ওই অস্ত্র কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের জেরে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা এবং কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারদিক। স্থানীয়দের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের এলাকাতেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

ভান্ডারার জেলা প্রশাসক সঞ্জয় কোলতে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের কিছুক্ষণের মধ্যেই উদ্ধারকারী দল সেখানে পৌঁছায়। পরে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জীবিতদের খোঁজে কাজ শুরু করেন তারা। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ধসে পড়েছে কারখানার একটি ছাদ। আর সেটির নিচে চাপা পড়ে যান অন্তত ১২ জন কর্মী।

তিনি আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত তাদের মধ্যে দু’জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিদেরও ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনার চেষ্টা চলছে। তবে তাদের মধ্যে কত জন বেঁচে আছেন, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না।

এনডিটিভি বলছে, বিস্ফোরণটি এতোটাই তীব্র ছিল যে, এর আওয়াজ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে শোনা গেছে। দূর থেকে ধারণ করা ভিডিওতে বিস্ফোরণের পর কারখানা থেকে ঘন ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।

টিউলিপ সিদ্দিক যা লিখেছেন পদত্যাগপত্রে!

যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারের দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম উঠে আসার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। টিউলিপের পদত্যাগপত্রটি কালবেলা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল –

“প্রিয় প্রধানমন্ত্রী

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমার প্রতি আপনি যে আস্থা প্রদর্শন করেছেন, তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মন্ত্রীদের মানদণ্ডবিষয়ক আপনার স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসকে ধন্যবাদ জানাই, যিনি আমার স্বপ্রণোদিত আবেদন দ্রুত ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করেছেন এবং আমার বর্তমান ও অতীত আর্থিক এবং বাসস্থানসংক্রান্ত তথ্য বিস্তারিতভাবে শেয়ার করার সুযোগ দিয়েছেন।

আপনি অবগত আছেন, আমার অনুরোধে বিষয়টি নিয়ে গভীর পর্যালোচনা করার পর, স্যার লরি নিশ্চিত করেছেন, আমি মন্ত্রিত্ববিধি ভঙ্গ করিনি। তিনি উল্লেখ করেছেন, আমার মালিকানাধীন বা বসবাসকৃত সম্পত্তি বা আমার কোনো সম্পদ বৈধ উপায় ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে এসেছে, এমন কোনো প্রমাণ নেই।

আমার পারিবারিক সম্পর্ক সর্বজনবিদিত এবং যখন আমি মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হই, তখন আমি আমার সমস্ত সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের তথ্য সরকারের কাছে জমা দিয়েছিলাম। কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যাপক পরামর্শের পর আমাকে আমার স্বার্থপত্রে উল্লেখ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, আমার ফুফু বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশসংক্রান্ত বিষয় থেকে (আমার) বিরত থাকা উচিত, যাতে স্বার্থের সংঘাতের কোনো সন্দেহ না থাকে। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই, এসব বিষয়ে আমি সর্বদা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ থেকেছি এবং কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুসারে কাজ করেছি।

তবে এটি স্পষ্ট, অর্থনৈতিক সচিব হিসেবে আমার ভূমিকা সরকারি কাজের জন্য একটি বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। আমার আনুগত্য সব সময় এই লেবার সরকার এবং তার জাতীয় পুনর্নবীকরণ ও রূপান্তরের কর্মসূচির প্রতি থাকবে। তাই আমি আমার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আপনার সরকারে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি পেছনে থেকে যে কোনোভাবে সরকারকে সমর্থন করতে থাকব।

শুভেচ্ছান্তে,

টিউলিপ সিদ্দিক এমপি”

টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি তার খালা শেখ হাসিনার দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে টিউলিপের ভোগ-দখলে থাকা দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য প্রকাশ্যে আসে। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককে হুমকি, ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করানোসহ টিউলিপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় দলের ভেতরে-বাইরে চাপে পড়েন তিনি।

গার্ডিয়ানের সূত্র বলছে, কিয়ার স্টারমার টিউলিপ সিদ্দিককে সমর্থন করছিলেন। অভিযোগ ওঠার পরও তিনি তাকে বরখাস্ত না করায় বিরোধী দলও সমালোচনামুখর হয়। এদিকে টিউলিপও নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন।

কিন্তু ব্রিটিশ রাজনীতিতে আলোড়ন তোলা এ ঘটনায় শেষমেশ কিয়ার স্টারমার সরাসরি টিউলিপের পক্ষ থেকে সরে আসেন। বাংলাদেশের সাথে শেখ পরিবারের সম্পর্ক থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টিউলিপকে আরও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন স্টারমার। এদিকে পদত্যাগ করলেও টিউলিপ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তিনি তার সব আর্থিক স্বার্থ এবং সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করেছেন বলেও দাবি করেন। তবুও বর্তমান পরিস্থিতি সরকারের জন্য বিভ্রান্তিকর হয়ে ওঠায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, টিউলিপ সিদ্দিকের দখলে থাকা আরও দুটি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। প্রথম ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পেয়েছেন তিনি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে ওই ব্যবসায়ীর।

খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী। তবে ওই ফ্ল্যাটের বিনিময়ে কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হয়নি টিউলিপ সিদ্দিককে। বিনামূল্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের তথ্য ওঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রে।

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিতে বলা হয়েছে, বিনামূল্যে পাওয়া ওই ফ্ল্যাট লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে অবস্থিত। ২০০৪ সালে ফ্ল্যাটটি টিউলিপকে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় যে ফ্ল্যাটের কথা বলা হচ্ছে তাতে টিউলিপ বসবাস করতেন। এটি তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সূত্রে পাওয়া।

তবে এই ফ্ল্যাটটি সরাসরি টিউলিপকে দেওয়া হয়নি। তার বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তিকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন মঈন গনি নামের একজন বাংলাদেশি আইনজীবী। তিনি হাসিনা সরকারের লোক বলে পরিচিত। এ ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিভিন্ন দুর্নীতিতে টিউলিপের সহযোগিতার অভিযোগ ওঠে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনাসহ তার দলের নেতাদের বিচার শুরু হলে এ নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

মন্ত্রীসভা থেকে ‘পদত্যাগ’ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক!

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (১৪ জানুুয়ারি) রাতে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির একজন সদস্য। তার দল এবার সরকার গঠন করলে তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টারেরও (ইকোনমিক সেক্রেটারি) দায়িত্ব পান। তিনি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারের দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম উঠে আসার প্রেক্ষাপটে তিনি পদত্যাগ করলেন। অভিযোগ ওঠে, তিনি তার খালা শেখ হাসিনার দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে টিউলিপের ভোগ-দখলে থাকা দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য প্রকাশ্যে আসে। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককে হুমকি, ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করানোসহ টিউলিপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় দলের ভেতরে-বাইরে চাপে পড়েন তিনি।

গার্ডিয়ানের সূত্র বলছে, কিয়ার স্টারমার টিউলিপ সিদ্দিককে সমর্থন করছিলেন। অভিযোগ ওঠার পরও তিনি তাকে বরখাস্ত না করায় বিরোধী দলও সমালোচনামুখর হয়। এদিকে টিউলিপও নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু ব্রিটিশ রাজনীতিতে আলোড়ন তোলা এ ঘটনায় শেষমেশ কিয়ার স্টারমার সরাসরি টিউলিপের পক্ষ থেকে সরে আসেন।

বাংলাদেশের সাথে শেখ পরিবারের সম্পর্ক থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টিউলিপকে আরও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন স্টারমার। এদিকে পদত্যাগ করলেও টিউলিপ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তিনি তার সব আর্থিক স্বার্থ এবং সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করেছেন বলেও দাবি করেন। তবুও বর্তমান পরিস্থিতি সরকারের জন্য বিভ্রান্তিকর হয়ে ওঠায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, টিউলিপ সিদ্দিকের দখলে থাকা আরও দুটি ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। প্রথম ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পেয়েছেন তিনি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে ওই ব্যবসায়ীর।

খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী। তবে ওই ফ্ল্যাটের বিনিময়ে কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হয়নি টিউলিপ সিদ্দিককে। বিনামূল্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের তথ্য ওঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রে।

যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিতে বলা হয়েছে, বিনামূল্যে পাওয়া ওই ফ্ল্যাট লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে অবস্থিত। ২০০৪ সালে ফ্ল্যাটটি টিউলিপকে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় যে ফ্ল্যাটের কথা বলা হচ্ছে তাতে টিউলিপ বসবাস করতেন। এটি তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সূত্রে পাওয়া। তবে এই ফ্ল্যাটটি সরাসরি টিউলিপকে দেওয়া হয়নি। তার বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তিকে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন মঈন গনি নামের একজন বাংলাদেশি আইনজীবী।

তিনি হাসিনা সরকারের লোক বলে পরিচিত। এ ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিভিন্ন দুর্নীতিতে টিউলিপের সহযোগিতার অভিযোগ ওঠে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনাসহ তার দলের নেতাদের বিচার শুরু হলে এ নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র: একদিকে দাবানল, অন্যদিকে তুষারঝড়!

একদিকে দাবানল, অন্যদিকে তুষারঝড়; বিপরীতমুখী দুই প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। কোনোভাবেই সামাল দেয়া যাচ্ছে না পরিস্থিতি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ুগত একাধিক পরিবর্তন কাজ করে এমন বিপরীতমুখী চরম ভাবাপন্ন অবস্থার পেছনে।

এই সময়ে দেশটির দুই প্রান্তে আবহাওয়ার চরম ভাবাপন্ন দুই রূপের জন্য বায়ুমন্ডলীয় বিভিন্ন ঘটনাকে দায়ী করছেন আবহাওয়াবিদরা। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশী আলোচিত জেট স্ট্রীম।

বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তর-ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চগতির বায়ুপ্রবাহই জেট স্ট্রীম। একই সাথে একই অঞ্চলে ভিন্ন ধরনের আবহাওয়ার কারণ মূলত এই বায়ুপ্রবাহের ঢেউ খেলানো গড়ন।

এই গড়নের কারণে একদিকে তৈরি হয় উচ্চচাপ; অন্যদিকে নিম্নচাপ। ফলে, একই সাথে অঞ্চলের একদিকে দাবানল ও অন্যদিকে দেখা দেয় তুষারপাতের মতো ঘটনা।

আবহাওয়াবিদ জিম ফোয়েরস্টার বলেন, ঢেউয়ের গড়নের উচু অংশকে বলা হয় রিজ আর নিচু অংশকে বলা হয় ট্রাফ। রিজ অংশে বাতাস উষ্ণ হয়ে দ্রুত গতিতে উঠতে শুরু করে উপরে। ফলে নিচের ঠাণ্ডা বাতাসের সাথে হয় সংঘর্ষ। কমে যায় বাতাসের আর্দ্রতা।

অন্যদিকে, ঢেউয়ের নিচু অংশে বায়ু উষ্ণতা হারিয়ে হতে শুরু করে আর্দ্র। দ্রুত গতিতে নামতে শুরু করে নীচে। ফলে তৈরি হয় নিম্নচাপ।

জেট স্ট্রীমের কারণেই তৈরি হতে পারে জলবায়ুগত আরেক পরিস্থিতি; যার নাম অ্যাটমোস্ফিয়ারিক ব্লকিং। জেট স্ট্রীম এর ঢেউ খেলানো গড়ন যদি দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়, তখন তাকে বলা হয় অ্যাটমোস্ফিয়ারিক ব্লকিং।

এর কারণে, একই স্থানে দীর্ঘদিন বিরাজ করে উচ্চচাপ কিংবা নিম্নচাপ। যেকারণে, আরও বেড়ে যায় চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার ঝুঁকি। তাছাড়া, এল নিনো ও লা নিনার প্রভাবেও ঘটে এমন ঘটনা।

প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধিকে ইঙ্গিত করে এলো নিনো- লা নিনা। সর্বোপরি, জলবায়ু পরিবর্তনই এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রধান কারণ বলে মনে করেন আবহাওয়াবিদরা।

গত ৫ জানুয়ারি থেকে ভয়াবহ তুষারঝড়ে কুপোকাত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ অঞ্চল। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। সড়ক দুর্ঘটনা, শিডিউল বিপর্যয়,

প্রাণহানিসহ সব মিলিয়ে বিপাকে লাখ লাখ মানুষ। অন্যদিকে, পশ্চিমাঞ্চলে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পুড়ছে হাজার হাজার একর জমি। ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল বলা হচ্ছে একে।