৫ আগস্টে ‘সার্বক্ষণিক যোগাযোগে’ ছিলেন বাংলাদেশ- ভারতের সেনাপ্রধান!

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর।

আজ সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দিল্লিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে যান। বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, “আজকের তারিখে আমাদের কোনো পক্ষেরই আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমার সে দেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ আছে।”

তিনি আরো বলেন, “বস্তুত সে দেশে যখন পালাবদল ঘটল, তখনও আমরা নিজেদের মধ্যে সব সময় যোগাযোগ রেখে চলছিলাম। এরপর গত ২০ নভেম্বরও আমাদের মধ্যে একটা ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই চলছে।”

৫ অগাস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে অপসারিত হয়ে বাংলাদেশের একটি মিলিটারি এয়ারক্র্যাফটে করে দিল্লির কাছে হিন্ডন এয়ারবেসে এসে অবতরণ করেন। তখন থেকে আজ পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে তিনি ভারতেই রয়েছেন। ভারতের সেনাপ্রধানের মন্তব্যে স্পষ্ট হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশ ছাড়ার এই প্রক্রিয়াটা দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় রেখেই সম্পন্ন হয়েছিল।

জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বাংলাদেশে তার কাউন্টারপার্টের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে আরো বলেন, “উনি যেমন বলেছেন ভারত তাদের জন্য স্ট্র্যাটেজিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, কথাটা আমাদের দিক থেকেও সত্যি।

আমরা পরস্পরের প্রতিবেশী, আমাদের একসঙ্গেই থাকতে হবে ও পরস্পরকে বুঝতে হবে– যে কোনো ধরনের শত্রুতা আমাদের উভয়ের জন্যই হানিকর হবে।” ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতাও আগের মতোই অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।

তবে তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক তখনই স্বাভাবিক হবে, যখন একটি ‘নির্বাচিত সরকার’ বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসবে। উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, “যদি আপনারা (দুই দেশের) সম্পর্কের কথা বলেন, সেটা ওখানে নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত সম্ভব নয়। তবে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক একদম ঠিক আছে, সব মসৃণভাবে চলছে।

হাসিনার উৎখাতের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করলো যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত

ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা গত বছরের আগস্টে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। রাজনৈতিক এই পটপরিবর্তনের ঘটনায় গুঞ্জন-জল্পনায় অনেকেই সামনে আনেন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কথা।

তবে হাসিনার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ আরও একবার উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনও ধরনের ভূমিকা নেই, সেটা ভারতীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বিশ্বাস করেন।

হোয়াইট হাউসের রুজভেল্ট রুমে সাংবাদিকদের একটি নির্বাচিত দলের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।

অবশ্য হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ভূমিকা নেই বলে আগেই জানিয়েছিল ওয়াশিংটন। এমনকি বাংলাদেশে মার্কিন হস্তক্ষেপের অভিযোগ কেবলই মিথ্যা বলেও গত বছরের আগস্টে আখ্যায়িত করে দেশটি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পালাবদল ঘটেছে এই কয়েক মাস আগেই। সস্প্রতি দিল্লি সফর সম্পন্ন করেছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। তিনি বলেছেন, ঢাকায় যা ঘটেছে, তার নেপথ্যে ওয়াশিংটনের হাত থাকতে পারে বলে যে ধারণা তৈরি হয়েছে, তা ভিত্তিহীন এবং ভুয়া।

তিনি আরও বলেছেন, ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও বিশ্বাস করেন না যে— বাংলাদেশের ঘটনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সংশ্লিষ্টতা আছে।

এর আগে হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছিল হোয়াইট হাউস। বাংলাদেশে সরকার উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে গত বছরের আগস্টে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “আমাদের আদৌ কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল বলে যদি কোনো প্রতিবেদনে বলা হয় বা গুজব ছড়ানো হয় তবে তা নিছক মিথ্যা।”

মূলত গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালানোর পর ভারতের ইকোনমিক টাইমস পত্রিকা তাদের একটি প্রতিবেদনে হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করেছে কারণ তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ চায়।

পত্রিকাটি সেসময় আরও বলেছিল, হাসিনা তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাধ্যমে পত্রিকাটির কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। তবে হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ পরে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেন, তিনি (হাসিনা) কখনোই এ ধরনের কোনো বক্তব্য দেননি।

এবার টিউলিপকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে ‘বিকল্প’ কাউকে খুঁজছে যুক্তরাজ্য সরকার

টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তার দল লেবার পার্টি। বর্তমানে সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্বরত টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিলে কারা সেই পদে দায়িত্ব নিতে পারেন, সেরকম একটি খসড়া তালিকাও নাকি প্রস্তুত করা হয়েছে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এমন তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা একটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে ভাবছেন, যেখানে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করলে তার স্থলাভিষিক্ত কে হতে পারেন।

সূত্র বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, টিউলিপের বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট নিয়ে ওঠা অভিযোগ ও শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসার পরই এই আলোচনা শুরু হয়।

তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরির বিষয়টিকে ‘সম্পূর্ণ অসত্য’ বলে দাবি করেছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও বলেছেন— তিনি টিউলিপ সিদ্দিকের উপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন।

তবে সংবাদমাধ্যমটির সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ঘনিষ্ঠদের কেউ কেউ অনানুষ্ঠানিকভাবেই টিউলিপের উত্তরসূরি খোঁজা শুরু করছেন। গত সপ্তাহেই কিছু কর্মকর্তাকে তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি নির্ধারণে কাজ করতে দেখা গেছে।

এদিকে সোমবার টিউলিপ নিজেই ঘোষণা করেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর নৈতিকতা পর্যবেক্ষকের কাছে এই বিষয়ে স্বচ্ছতার জন্য নিজেকে উপস্থাপন করবেন। ডাউনিং স্ট্রিটের বিবেচনাধীন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাচেল রিভসের দুই মন্ত্রীর সহকারী এলেস্টেয়ার স্ট্রাথার্ন এবং ইমোজেন ওয়াকার।

অন্য প্রার্থীরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের সংসদীয় ব্যক্তিগত সচিব (পিপিএস) ক্যালাম অ্যান্ডারসন, কনিষ্ক নারায়ণ, পরিবেশ দপ্তরের পিপিএস জশ সাইমন্স এবং রেচেল ব্লেক। অ্যাটর্নি জেনারেল লুসি রিগবি এবং একজন মন্ত্রীর সহকারী ও অর্থনীতিবিদ তোরস্টেন বেল-ও শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন।

সার্বিক প্রেক্ষাপটের সাথে বর্তমান পরিস্থিতি— সব মিলিয়ে টিউলিপের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ও দলে (লেবার পার্টি) তার অবস্থান সম্পর্কেও তৈরি করেছে নতুন জল্পনা-কল্পনা। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে দুর্নীতিবিরোধী নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের ক্ষ্মতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি।

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস থেকে পালাচ্ছেন মানুষ

ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের ঘরবাড়ি। আর এ থেকে প্রাণে বাঁচতে সেখান থেকে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আর সেখানে এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে।

আলটাডেনার এমন কিছু নেই যা দাবানলের আগুনে পুড়েনি, যা স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা গেছে। লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ১০০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বইতে থাকে। এতে তিনটি বড় দাবানলের শক্তি বৃদ্ধি পায়।

আগুনে দগ্ধ হয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে পালিসাদেস দাবানলটি। এটির আগুনে ১৫ হাজার ৮০০ একর জমি পুড়ে গেছে। এ থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি কোনো কিছু বাদ যায়নি।

অপরদিকে, ইটন দাবানলে ১০ একর জায়গা ভষ্মিভূত হয়ে গেছে। ছাই হয়েছে আলটাডেনা এবং পাসাডেনার বহু ঘরবাড়ি। এ দুটির পাশাপাশি তাণ্ডব চালাচ্ছে সানসেট এবং হার্স্ট দাবানল। এরমধ্যে নতুন করে হলিউড হিলে আগুন ছড়িয়েছে।

ভয়াবহ আগুনে বেশ কয়েকজন হলিউড তারকার ঘর পুড়ে গেছে বলে তারা নিজেরাই বিষয়টি জানিয়েছেন। জানা যায়, আগুনের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দাবানলের আগুনের তীব্রতা এতই বেশি যে অনেকে তাদের গাড়ি রেখেই পালাতে বাধ্য হয়েছেন। এর প্রভাবে অনেকে খাবার পানির অভাবেও পড়েছেন।

সূত্র: সিএনএন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জয়ের সুযোগ ছিল, তবুও কেন নির্বাচনে অংশ নেননি ‘বাইডেন’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যদি তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনী দৌড়ে থাকতেন, তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে পারতেন এবং নভেম্বরের নির্বাচনে পুনরায় জয়ী হতে পারতেন। তবে তিনি এ-ও বলেছেন, তিনি নিশ্চিত নন যে আরেকবার পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারতেন কিনা। বুধবার প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

আগামী ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব ছাড়তে যাওয়া ৮২ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট নেতাকে ইউএসএ টুডে প্রশ্ন করেছিল, তিনি কি মনে করেন, গত নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া তার জন্য বাস্তবসম্মত ছিল? বাইডেন এর উত্তরে অজ্ঞাত জরিপের উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি মনে করি, হ্যাঁ।


বাইডেন আরো বলেন, ‘আমি সত্যিই মনে করতাম, তার (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বিরুদ্ধে জয়ের সবচেয়ে ভালো সুযোগ আমার ছিল। কিন্তু আমি ৮৫ বা ৮৬ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট হতে চাইনি। তাই আমি নেতৃত্বের দায়িত্ব হস্তান্তর নিয়ে কথা বলেছিলাম। এখন পর্যন্ত ভালো আছি। তবে কে জানে আমি ৮৬ বছর বয়সে কেমন থাকব?’

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রবীণ প্রেসিডেন্ট বাইডেন বারবার তার মানসিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের পেছনে বড় কারণ ছিল একটি বিতর্ক, যেখানে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার পুনর্নির্বাচনের যুক্তি উপস্থাপনে ব্যর্থ হন। এ ছাড়া বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন অনেক কম সাক্ষাৎকার ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রোনাল্ড রিগানের পর থেকে এত কম গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি আর কোনো প্রেসিডেন্ট।

ইউএসএ টুডে ছিল একমাত্র প্রিন্ট মিডিয়া, যারা বিদায়ি প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছে। বাইডেন যখন তার চার বছরের মেয়াদের আফসোস নিয়ে কথা বলেন, তখন তিনি বিতর্কে তার ব্যর্থতা বা এক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার প্রতিশ্রুতি ভাঙার বিষয়টি উল্লেখ করেননি। বরং তিনি ভুল তথ্য ও ধীরগতির অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো নিয়ে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যদি আমরা এসব প্রকল্পে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারতাম, তবে আমরা অনেক ভালো অবস্থানে থাকতাম।’

এদিকে ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে, বিশেষ করে তিনি হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর যেসব ব্যক্তিকে তার শত্রু মনে হতে পারে, তাদের জন্য আগাম ক্ষমা প্রদানের বিষয়টি। বাইডেন নিশ্চিত করেন, তিনি এই বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন, তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।

বাইডেন জানান, নির্বাচনের পর ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময় তিনি ট্রাম্পকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যেন তিনি প্রতিশোধের রাজনীতি থেকে বিরত থাকেন। তিনি বলেন, ‘এটি তার নিজের স্বার্থের জন্যও বিপরীতমুখী হবে।’ তবে ট্রাম্প এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।

নিজের উত্তরাধিকারের বিষয়ে বাইডেন জানান, তিনি চান, তাকে এমন একজন নেতা হিসেবে স্মরণ করা হোক, যিনি মহামারি-পরবর্তী অর্থনীতির পুনর্গঠন ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নেতৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছিলেন।

বিদায়ি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটাই ছিল আমার আশা। আমি চাই, ইতিহাসে এটি রেকর্ড হোক, আমি সততা ও নৈতিকতার সঙ্গে (কাজ) করেছি এবং আমার মনের কথা স্পষ্টভাবে বলেছি।’

হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিল ভারত

দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে দিল্লি চলে যান তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে বাংলাদেশের ফেরত চাওয়ার মধ্যেই তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকে আড়ালে চলে গেছেন হাসিনা। যদিও দিল্লির একটি সেফ হাউজে তাকে রাখা হয়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে নোট ভার্বাল পাঠায় বাংলাদেশ। তবে সেটির জবাব এখন পর্যন্ত দেয়নি নয়াদিল্লি।

হাসিনা যেন ভারতে আরও সময় অবস্থান করতে পারেন সেজন্য তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে সূত্রটি। এছাড়া তাকে কোনো ধরনের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়নি বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। কারণ ভারতে কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই।

হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর কাজটি করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছে লোকাল ফরেনার্স রিজিওনাল অফিস (এফআরআরও)।

এদিকে গুম ও জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে পাসপোর্ট অধিদপ্তর। গতকাল মঙ্গলবার এমন তথ্য জানানো হয়। এরপরই জানা গেল, হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত সরকার।

এছাড়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত সোমবার দ্বিতীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এরমধেই হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করল নরেন্দ্র মোদির সরকার। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

এবার হাসিনাকে দীর্ঘমেয়াদি থাকার সুযোগ করে দিলো ভারত

ভারত সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকার জন্য দীর্ঘমেয়াদি আবাসন অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবার একাধিক সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন উচ্চপদস্থ সূত্র।

তবে অনুমতির প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। কিছু সূত্র জানিয়েছে, এটি সম্ভবত এমন একটি “আবাসিক অনুমতি” হতে পারে যা নির্বাসনে থেকেও স্বাভাবিক জীবনযাপন করার সুযোগ দেয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অনুমতি জারি করছে বলে জানা গেছে। তবে, শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সূত্র বলছে, ভারতে কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয়

দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনও আইন না থাকায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে। একইসঙ্গে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি নোট ভার্বালের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি করা হলেও, তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এর আগে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানান, তাঁর মা রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি এবং তিনি হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন। ভারতে অবতরণের সময় তাঁর ভিসা বৈধ ছিল।

ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট

গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।’ সিরিয়ার পরিস্থিতির উদাহরণ টেনে তিনি

বলেন, ‘৬১ বছরের নিপীড়ন এবং ১৩ বছরের গণহত্যার পর সিরিয়া যেভাবে মুক্ত হয়েছে, আল্লাহর ইচ্ছায় ফিলিস্তিনেও ন্যায়ের জয় হবে। ন্যায়ের সূর্য নিপীড়নের অন্ধকার ভেদ করবে।’ খবর ইয়েনি শাফাক।

তুর্কি জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলে প্রায় ৫ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করে দেখিয়েছে, গাজা একা নয়। গত ১ জানুয়ারি, আমাদের নাগরিকরা ফিলিস্তিনের প্রতি তুরস্কের অটল সমর্থন প্রদর্শন করে বিশ্বকে একটি শক্তিশালী বার্তা

দিয়েছে।’ বিশ্ব সম্প্রদায়কে ফিলিস্তিনিদের প্রতি আরও বেশি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আশা প্রকাশ করেন, ‘২০২৫ সাল গাজার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জন্য শান্তি ও স্বস্তি নিয়ে আসবে।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী হামলা শুরু করে। এক বছরের অধিক সময় ধরে চলা এ হামলায় ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১ লাখ ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

গাজায় যুদ্ধের শুরু থেকেই তুরস্ক ফিলিস্তিনিদের প্রতি দৃঢ় সমর্থন অব্যাহত রেখেছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের অধিকারের পক্ষে শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে।

ফিলিস্তিন নিয়ে তুরস্কের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য, ১৯৬৭ সালের সীমানার ওপর ভিত্তি করে আঞ্চলিক অখণ্ডতার সঙ্গে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

কলকাতা বিমানবন্দরে ২২০ বাংলাদেশি আটকা

কলকাতা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন ২২০ জন বাংলাদেশি। তারা সবাই মালয়েশিয়া থেকে ঢাকা ফিরছিলেন। রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে কুয়ালালামপুর থেকে ঢাকা আসার পথে মালোন্দ এয়ারে (ফ্লাইট নম্বর ওডি-১৬২) একটি বিমান ঘন-কুয়াশার কারণে কলকাতায় জরুরি অবতরণ করে। বিমানটি রাত ৩টায় ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল।

যাত্রীদের অভিযোগ, ১৫ ঘণ্টা পার হলেও কলকাতা থেকে বাংলাদেশে তাদের ফেরানোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেলেও তাদের পানি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এছাড়া কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এখনো পর্যন্ত তাদের ফেরত যাওয়ার সময় সম্পর্কে কোনো সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি।

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানটি রাত ৩টায় ঢাকা পৌঁছানোর কথা থাকলেও ঘন-কুয়াশার কারণে ২২০ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতায় অবতরণ করে। এরপর থেকে যাত্রীরা ট্রানজিট পয়েন্টেই আছেন। প্রত্যেক যাত্রীকে খাদ্য পানি ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, বিমানবন্দরে কয়েকজন গুরুতর অসুস্থ যাত্রী রয়েছেন। বিমানে থাকা যাত্রীরা জানিয়েছেন, বিমান সংস্থার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলো তাদের ভারতীয় আঞ্চলিক অফিস কিংবা কুয়ালালামপুরের সদরদপ্তরেও তারা যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেনি।

নারী হওয়ায় জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে হাত মেলালেন না সিরিয়ার নেতা

নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়ে আলোচনা করতে সিরিয়া সফর করেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। তার সঙ্গে ছিলেন ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো।

তারা সিরিয়ার ডি-ফ্যাক্টো শাসক এবং হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গোষ্ঠীর প্রধান আহমেদ হুসেইন আল-শারার সঙ্গে বৈঠক করেন। শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) এই বৈঠকের শুরুতেই একটি অস্বস্তিকর ঘটনা ঘটে। আল-শারা ফরাসি মন্ত্রীর সঙ্গে করমর্দন করেন। কিন্তু বেয়ারবকের দিকে হাত বাড়াননি।

তিনি বেয়ারবকের সামনে নিজ বুকে হাত রেখে সম্মান জানান। খবর আরটি। প্রসঙ্গত, সিরিয়ার বিদ্রোহী জোটের নেতা আল-শারা একজন কট্টর ইসলামি বিশ্বাসী। তিনি নারীদের সঙ্গে করমর্দন করেন না। এজন্যই তিনি বেয়ারবকের সঙ্গে হাত মেলাননি।

বেয়ারবক এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি জানতাম, হাত মেলানো আশা করা ঠিক হবে না। ফরাসি মন্ত্রীও হাত না মেলানোর বিষয়ে সিরিয়ার নেতা আল-শারার সঙ্গে একমত ছিলেন।

বৈঠকে নারীর অধিকার নিয়ে আল-শারার সঙ্গে দুই মন্ত্রী কথা বলেন। ফরাসি মন্ত্রী বারো এক্স-এ এক পোস্টে উল্লেখ করেন যে, সিরিয়ার নতুন প্রশাসন নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী জোটের আকস্মিক আক্রমণে সিরিয়ার সেনাবাহিনী কয়েক দিনের মধ্যে পরাজিত হয়। এর ফলে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটে।

এদিকে সব ইস্যুকে ছাপিয়ে আল-শারার করমর্দন এড়ানোর বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত হচ্ছে।