চোখের দেখায় ভারতীয় ব্যাটার জয়সওয়ালকে আউট দিলেন ‘সৈকত’, আলোচনার ঝড়

স্নিকোগ্রাফে ধরা পড়েনি বড় কিছু। কিন্তু দিক বদল ছিল স্পষ্ট। বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকত ভরসা রাখলেন চোখের ওপর। প্রযুক্তির ছোঁয়া ক্রিকেটে এসেছে সিদ্ধান্তকে নির্ভুল করতে। কিন্তু জয়সওয়ালের আউটের বেলায় নিজের চোখকেই বিশ্বাস করেছেন বাংলাদেশি আম্পায়ার। অন-ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদল হলো।

আউট হলেন ভারতীয় ব্যাটার। এই আউটের পর থেকেই ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন শরফুদ্দৌলা সৈকত। টুইটারে বেশ বড় রকমের সমালোচনা চলছে বাংলাদেশি আম্পায়ারকে নিয়ে।

ঘটনার সূত্রপাত প্যাট কামিন্সের ৭১তম ওভারে। টেস্ট জিততে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৪ উইকেট। ভারতের ২০০ রান। এমন সময় বাউন্সার বলে ফাইন লেগে খেলতে চেয়েছিলেন জয়সওয়াল। তবে বল জমা পড়ে উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারির কাছে। ক্যাচের আবেদন করে অস্ট্রেলিয়া। মাঠের আম্পায়ার দেন আউট দেননি।

কামিন্স রিভিউ নিলে সিদ্ধান্ত যায় তৃতীয় আম্পায়ার শরফুদ্দৌলার কাছে। রিভিউ নেওয়ার রিপ্লেতে দেখা যায় বল ব্যাট ও গ্লাভস ছুঁয়েছে। শরফুদ্দৌলাও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় জানান, তিনি স্পষ্ট করেই দেখতে পেয়েছেন বলের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। তবে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি স্নিকোর সাহায্য চান। কিন্তু স্নিকোগ্রাফে পরিবর্তন আসেনি।

তাতে অবশ্য বাংলাদেশি আম্পায়ারের মন গলেনি। ঠিকই দিলেন আউটের সিদ্ধান্ত। মাঠেই আম্পায়ারদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন জয়সোয়াল। উইকেট ছাড়তে ছাড়তেও কিছু একটা বলেছেন তিনি। ধারাভাষ্যকারদের অবশ্য পাশে পেয়েছেন শরফুদ্দৌলা। হার্শা ভোগলে ও মার্ক নিকোলাসরা এটাকে সাহসী ও ন্যায্য সিদ্ধান্তই বলেছেন। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার চ্যানেল সেভেনে আউটের সিদ্ধান্তের পক্ষেই মত দিয়েছেন অভিজ্ঞ আম্পায়ার সাইমন টোফেল।

রোমাঞ্চকর টেস্ট জয়ে চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ‘দ. আফ্রিকা’

সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে পাকিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার পাশপাশি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে প্রোটিয়ারা। আব্বাস আফ্রিদির নাটকীয় স্পেলের পরেও নিজেদের স্বাভাবসুলভ ‘চোকার্স’ তকমা থেকে অনেকটা পরীক্ষিতভাবে পার পেয়েছে স্বাগতিকরা।

টেস্ট জিততে প্রোটিয়াদের লক্ষ্য ছিলো মাত্র ১৪৮ রান। ছন্দে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ঘরের মাঠে খুব একটা বড় টার্গেট না নিশ্চিতভাবেই বলা চলে।

কিন্তু পাকিস্তান সেই মামুলি টার্গেটকেই করলো অনেকটা কঠিন। ৩ উইকেটে ২৭ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে টেম্বা বাভুমার দল। ৩৭ রান করে আউট হন আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটার এইডেন মার্করাম। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করে ক্যাচ আউটের ফাঁদে পড়েন বাভুমা।

দলীয় ৯৯ রানের মধ্যে আরও তিন উইকেট হারালে পরাজয়ের শঙ্কায় পরে দক্ষিণ আফ্রিকা। তখনই দলের ত্রাতা হয়ে আসেন মার্কো ইয়ানসেন ও রাবাদা।

নবম উইকেটে দুজনের অপরাজিত ৫১ রানের জুটিতে জয় পায় প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত স্বাগতিকদের আটকে রাখতে যথেষ্ট হয়নি ১৪৮ রানের এই টার্গেট।

মোহাম্মদ আব্বাস ৬ উইকেট নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানালেও রাবাদার ৩১ রানের ইনিংসই দক্ষিণ আফ্রিকাকে তুলে দেয় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে।

উল্লেখ্য, চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে প্রোটিয়াদের প্রতিপক্ষ হবে ভারত অথবা অস্ট্রেলিয়া। আগামী বছরের ১১ জুন লর্ডসে মাঠে গড়াবে দ্বি-বার্ষিক এই মেগা ইভেন্টের ফাইনাল ম্যাচ।

মাশরাফির বিপিএলে খেলা নিয়ে যা জানালেন ‘সিলেট স্ট্রাইকার্স’

বিপিএলের ১১তম আসর শুরু হতে ৪৮ ঘণ্টাও হাতে নেই। ৩০ ডিসেম্বর শুরু হবে বাংলাদেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। সাত দলের অংশগ্রহণে খেলা হবে মোট ৪৬ ম্যাচ। আসরের অন্যতম ফ্র্যাঞ্চাইজি সিলেট স্টাইকার্স। ২০১৭ সাল থেকে বিপিএলে খেলছে সিলেট। এখন পর্যন্ত একবারও ফাইনাল খেলতে পারেনি।

২০২৪ সালের আসরে ১০ ম্যাচে সাতটিতেই হেরেছে দলটি। সবচেয়ে আলোচনা হয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার ফর্ম নিয়ে। সমালোচনা মুখে পড়ে টুর্নামেন্টের মাঝপথেই দল থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

এবারও মাশরাফি আছেন। স্কোয়াডে থাকলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে তিনি খেলবেন না বলেই এখন পর্যন্ত খবর। বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়কের খেলা না খেলা, নতুন অধিনায়ক কে হবেন, স্কোয়াডসহ অন্য বিষয় নিয়ে আজ শনিবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন সিলেটের কোচ মাহমুদ ইমন।

প্রথম দিনের অনুশীলন শেষে মাহমুদ ইমন বলেন, ‘স্থানীয় সবাই ছিল অনুশীলনে। নিলাম থেকে যাদের নিয়েছি তারা সবাই এভেইলেবল ছিল; শুধু মাশরাফি ছাড়া। আমাদের বিদেশি খেলোয়াড় আজকে দুজন ছিল। দুজন ইতোমধ্যে হোটেলে চলে এসেছে। বাকিরা অন দ্য ওয়ে।’

সিলেট এখনো অধিনায়ক নির্বাচিত করেনি। তবে আজকের মধ্যেই দলের নেতৃত্ব খুঁজে নেবে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। এ বিষয়ে মাহমুদ ইমন বলেন, ‘অধিনায়ক আমাদের এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আমাদের মালিকসহ কোচিং স্টাফদের মিটিং আছে। আজকেই ঘোষণা করবো।’

মাশরাফিকে সিলেট কোচ বলেন, ‘আমাদের স্কোয়াডে এখনও আছে। কারণ, এই দলের ওতপ্রোত অংশ হচ্ছে মাশরাফি। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে- ও কী ফিল করছে, ফিটনেসের অবস্থা কী। ও যদি খেলার পর্যায়ে থাকে বা পরিস্থিতি যদি ভালো থাকে তাহলে অবশ্যই খেলবে।’

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কের সঙ্গে কথাবার্তা হচ্ছে কি না, এ বিষয়ে মাহমুদ ইমন বলেন, ‘কথাবার্তা চলছে। কিন্তু পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। ফিটনেসের অবস্থা নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। প্রস্তুতিটা গুরুত্বপূর্ণ।’

মাশরাফি কতদিন স্কোয়াডে থাকবেন, এমন প্রশ্নে সিলেট অধিনায়ক বলেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে একমত। যতক্ষণ পর্যন্ত ও (মাশরাফি) ফিট হবে না খেলার জন্য; আমরা মনে করি ততদিন পর্যন্ত আমরা বিবেচনায় আনবো না ওকে। আমরা ওর জন্য অপেক্ষা করবো। এটা ওর কল। ও যখনই বলবে খেলার জন্য তৈরি আছে। তারপরও একটা নির্দিষ্ট সময় আছে।

যখন আর সময় থাকবে না। তখন ওই জায়গায় আমরা অন্য খেলোয়াড় ডাকবো।’

আইপিএলে দল না পেয়ে পাকিস্তান সুপার লিগ পিএসএলে ‘মুস্তাফিজ’

পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) আসন্ন আসরের খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশি এই পেসার ইতোমধ্যেই ড্রাফটের জন্য নাম জমা দিয়েছেন। আজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) পিএসএলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে মুস্তাফিজের পিএসএলের ড্রাফটে নাম দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

মুস্তাফিজের ছবি পোস্ট করে তারা ক্যাপশনে লিখেছে, ‘বাংলাদেশের পেস সেনসেশন মুস্তাফিজ পিএসএলের ড্রাফটে নাম লিখিয়েছেন। আগামী ৮ এপ্রিল শুরু হবে পিএসএলের এবারের আসর। কাছাকাছি সময়ে আছে আইপিএলও। তাই আইপিএলে দল না পাওয়া ক্রিকেটাররা এবার পিএসএলের দিকে ঝুঁকছেন। মুস্তাফিজও তাদেরই একজন। আইপিএলে নাম দিয়েও দল পাননি এই বাঁহাতি পেসার।

গতবারের আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছিলেন মুস্তাফিজ। আসরে ৯ ম্যাচে ৯.২৬ ইকোনমি রেটে ১৪ উইকেট পেয়েছিলেন বাংলাদেশের এই পেসার। তাই এবারও দল পাওয়ার আশা ছিল তার। কিন্তু দুই কোটি ভিত্তি মূল্যেও তাকে কিনতে আগ্রহ দেখায়নি কেউ।

এদিকে মুস্তাফিজ এর আগেও পিএসএলে খেলেছেন। ২০১৭-১৮ মৌসুমে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে পিএসএল খেলেছিলেন তিনি। পাঁচ ম্যাচে শিকার করেছিলেন চারটি উইকেট। সেবার তার ইকোনমি ছিল মাত্র ৬.৪৩।

পিএসএলের ড্রাফটে নাম লিখিয়েছেন বিশ্বের আরও কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার উসমান খাজা, ইংল্যান্ডের ডেভিড উইলি ও জেসন রয়ের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।

টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়া র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে পেসার তাসকিনের রাজত্ব

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদেরই মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল বাংলাদেশের বোলারদের। খেলোয়াড়দের আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়েও পড়েছে এর প্রভাব। ক্যারিয়াসেরা রেটিং ও র‌্যাঙ্কিংয়ে উঠে এসেছেন শেখ মেহেদি হাসান, তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন, হাসান মাহমুদরা।

ছেলেদের র‌্যাঙ্কিংয়ের সাপ্তাহিক হালনাগাদ বুধবার প্রকাশ করে আইসিসি। প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বোলারদের র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন মেহেদি। তার ঠিক পরেই আছেন তাসকিন।এছাড়া সেরা পঁচিশের মধ্যে আছেন রিশাদ ও হাসান। তানজিম হাসানও উঠে এসেছেন ক্যারিয়ার সেরা অবস্থানে।

ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাত্র ৫.৭৫ গড় ও ওভারপ্রতি ৪.১৮ রান খরচায় ৮ উইকেট নেন মেহেদি। পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৩৭ রান করে সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন ৩০ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। এই পারফরম্যান্সের ছাপ পড়েছে র‌্যাঙ্কিংয়ে। বোলারদের তালিকায় ১৩ ধাপ এগিয়ে এখন ১০ নম্বরে উঠেছেন মেহেদি,রেটিং পয়েন্ট ৬৩৬।

তিন ম্যাচে ওভারপ্রতি সাত রানের কম খরচায় ৭ উইকেটে নিয়ে তাসকিনও এগিয়েছেন ১৩ ধাপ। ৬৩০ রেটিং নিয়ে তিনি এখন ১১ নম্বর। একই সিরিজে ওভারপ্রতি ছয়ের কম রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন রিশাদ। তিনি ২১ ধাপ এগিয়ে এখন ৬২১ রেটিং নিয়ে আছেন ১৭ নম্বরে। ওভারপ্রতি মাত্র ৫.০৮ রান খরচায় ৪ উইকেট নেওয়া হাসান এগিয়েছেন ২৩ ধাপ। ৫৯৭ রেটিং নিয়ে তিনি এখন ২৪ নম্বরে।

আরেক পেসার তানজিম ১৬ ধাপ এগিয়ে ৫১৭ রেটিং নিয়ে স্কটল্যান্ডের মার্ক ওয়াটের সঙ্গে যৌথভাবে ৪৫ নম্বরে অবস্থান করছেন। সিরিজে ছুটিতে থাকা বাংলাদেশের আরেক পেসার মুস্তাফিজুর রহমান সাত ধাপ পিছিয়ে ২৬ নম্বরে নেমে গেছেন।

বোলারদের এই তালিকায় শীর্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল হোসেন।অলরাউন্ডারদের র‌্যাঙ্কিংয়েও ১০ ধাপ এগিয়ে ৩০তম স্থানে মেহেদি। এই তালিকায়ও বাংলাদেশিদের মধ্যে তিনিই সবার ওপরে। এই তালিকার শীর্ষে ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এক নম্বর জায়গা ধরে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেড। এই তালিকার সেরা ত্রিশে নেই বাংলাদেশের কেউ।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি ঘোষণা, বাংলাদেশের খেলা কবে কখন

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় হাইব্রিড মডেলের ৮ দলের এই টুর্নামেন্টের সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১০ মার্চ পর্দা নামবে টুর্নামেন্টটির। ১৯ ফেব্রুয়ারি আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে আয়োজক পাকিস্তান। ম্যাচটি হবে করাচিতে।

এছাড়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি। এই ম্যাচটি হবে নিরপেক্ষ ভেন্যু দুবাইয়ে।

৮ দলের টুর্নামেন্টে সর্বমোট ১৫ টি ম্যাচ হবে। আয়োজক পাকিস্তানের তিনটি মাঠ ছাড়াও নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে থাকছে দুবাই। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে গ্রুপ ‘এ’তে আছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। ‘বি’ গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তান।

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জিতে এবার বিপিলে দল পেলেন নতুন তামিম

সদ্য সমাপ্ত যুব এশিয়া কাপে আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই লড়াইয়ে ব্যাট হাতে আসরের অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন তামিম। অনলাইনে লাইভ খেলা দেখুন যশোরের এই তরুণ যুব এশিয়া কাপে ৫ ম্যাচে ২৪০ রান করেছেন। এক সেঞ্চুরির সঙ্গে তার নামের পাশে আছে দুই ফিফটি।

পাশাপাশি বল হাতেও নিয়েছেন ৪ উইকেট। ফলে চলমান এনসিএল টি-টোয়েন্টিতেও খেলার সুযোগ পান তিনি। এখানেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। নিজ বিভাগ খুলনার হয়ে করেন দুই অর্ধশতক। তাতে আসন্ন বিপিএলেও দল পেতে যাচ্ছেন এই ওপেনার।

সবকিছু ঠিক থাকলে বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলবেন তামিম। ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। তামিমকে দলে নিতে ইতোমধ্যেই বিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে রংপুর কতৃপক্ষ।

চলতি মাসের ৩০ ডিসেম্বর থেকে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বিপিএল। তবে গেল মাস থেকেই আসন্ন আসরকে ঘিরে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছে বিসিবি। সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে এবারের বিপিএলকে পরিচালনার কথা জানিয়েছেন সভাপতি ফারুক আহমেদ।

এবারের আসরে উন্নতমানের ডিআরএস, হকআই, স্পাই ক্যামেরাসহ দেখা যাবে আধুনিকসব প্রযুক্তি। দর্শকদের জন্যও থাকছে নানা আয়োজন। ইতোমধ্যে বিপিএলের মাসকট উন্মোচন হয়েছে। এছাড়া একাদশ বিপিএলের অনেক কিছুতেই স্মরণ করা হবে জুলাই–আগস্টের ছাত্র–জনতার আন্দোলনকে।

শহীদ মীর মুগ্ধর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে গ্যালারিতে দর্শকদের জন্য থাকবে বিনা মূল্যে পানির ব্যবস্থা। গ্যালারির একটি অংশে থাকবে ‘জিরো ওয়েস্ট জোন’।অনলাইনে লাইভ খেলা দেখুন

দর্শকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে থাকবে ই–টিকিটের ব্যবস্থাও। তাছাড়া প্রথমবারের মতো এই আসরে থাকবে থিম সং। আর আলাদা আলাদা শহরে থাকছে একাধিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। টুর্নামেন্টের তিন আয়োজক শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে ২৩, ২৫ ও ২৭ ডিসেম্বর হবে কনসার্ট।

খেলার মাঠে মানবিক আচরণের কারনে প্রশংসায় ভাসছেন ‘জাকের আলী’

প্রবাদ আছে, যেমন কুকুর তেমন মুগুর। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলটি বোধ হয় এই প্রবাদের উজ্জ্বল উদাহরণ। এর প্রমাণ অতীতে বহুবার দিয়েছে টাইগার বাহিনী। এর আগে বহুবার সাকিব আল হাসান, মাশরাফি, মাহমুদ্দুল্লাহ বা মিরাজসহ অনেকেই এই তকমা নিয়ে হয়েছেন সমালোচিত। আবার অনেক কারণে এরাই আবার ভেসেছেন দর্শকদের প্রশংসায়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও এমন ঘটনাই ঘটল। তবে এবার আর সমালোচনা নয়, বিশ্বমিডিয়া প্রশংসায় পঞ্চমুখ টাইগার ব্যাটার জাকের আলীর।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জাকেরের ৪১ বলে ৭২ রানের ইনিংসটি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের জয়ের প্রধান কারণ, তবে ইনিংসের ১৪তম ওভারে তার মানবিক আচরণ মুগ্ধ করেছে সবাইকে। সেই কারণে মাঠের বিপক্ষ খেলোয়াড়, উপস্থিত দর্শক আর কমেন্টি বক্স ছাড়িয়ে জাকিয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ লক্ষ কোটি মানুষ।

ঘটনাটি ঘটে ম্যাচের ১৪তম ওভারের প্রথম বলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলার মটির একটি শর্ট বলকে লক্ষ্য করে জাকের আলি পুল শট খেলেন। বলটি উড়ে গিয়ে ডিপ মিড উইকেট অঞ্চলের দিকে যায়, যেখানে ফিল্ডার ওবেদ ম্যাককয় ক্যাচ ধরার চেষ্টা করেন। ম্যাককয় বলটি ধরার জন্য ডাইভ দেন, তবে বলটি তার হাত থেকে ফসকে যায় এবং তিনি বাজেভাবে মাটিতে পড়ে যান।

এই সময় জাকের আলি ও তার সঙ্গী দুটি রান সম্পন্ন করেন। ম্যাককয়ের মিস ফিল্ডিং এর সুবাদে তৃতীয় রান নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। কিন্তু এখানেই দেখা যায় জাকের আলির মানবিকতার দিকটি। তিনি লক্ষ্য করেন যে, ফিল্ডার ম্যাককয় ব্যথায় মাটিতে পড়ে আছেন। এই পরিস্থিতিতে রান নেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি অপরপ্রান্তে থাকা শামীম পাটোয়ারিকে সিগন্যাল দেন

তৃতীয় রান না নিতে। এই ছোট অথচ গভীর মানবিক আচরণ ক্রিকেট খেলার চেতনার উদাহরণ হয়ে ওঠে। জাকেরের এই আচরণ শুধু মাঠে উপস্থিত দর্শক নয়, ধারাভাষ্যকার, ক্রিকেট বিশ্লেষক এবং বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের ভদ্রতার নজির এই প্রথম নয়।

এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার সময় ইশ সোধিকে ম্যাঙ্কাড আউট করেছিলেন হাসান মাহমুদ। আম্পায়ারও আউট দিয়ে দেন, কিন্তু পরে অধিনায়ক লিটন দাস ও বোলার হাসান মাহমুদ ইশ সোধিকে ডেকে এনে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদল করান।

আগামী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য অ্যাভেইলেবল ‘সাকিব-তামিম’

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আর খুব বেশি দূরে নেই। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টটি। যদিও ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণে টুর্নামেন্টের ভেন্যু জটিলতা ছিল। হাইব্রিড মডেলে হলেও সেই জটিলতা খানিকটা কমেছে এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে।

এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ দল কেমন হবে? ওয়ানডে ফরম্যাটে হওয়ার কারণে আইসিসির এই টুর্নামেন্টে খেলবেন তো সাকিব আল হাসান এবং তামিম ইকবাল?

বিসিবির কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে আজ মিরপুরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানালেন, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সিলেকশনের জন্য সাকিব এবং তামিম এভেইলেবল। অর্থ্যাৎ, কোনো ঝামেলা না থাকলে নির্বাচকরা এই দুই ক্রিকেটারকে বাংলাদেশ দলে রাখতে পারবেন।

সাকিব আল হাসান এরই মধ্যে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। ওয়ানডে থেকে অবসর না নিলেও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণে আপাতত দলের বাইরে রয়েছেন। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের সময় তিনি ছিলেন আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

অন্যদিকে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যায় ছিলেন পুরোপুরি নীরব। এ কারণে, দেশের মানুষের অধিকাংশই সাকিব দেশে ফিরে এসে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলুক, তা চান না।

দেশের মাটিতে সর্বশেষ টেস্ট খেলে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন সাকিব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও কিছুটা নমনীয় হয়েছিলো; কিন্তু ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওয়ানা দিয়েও দেশে ফিরতে পারেননি। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশ দল ওয়ানডে খেললেও সাকিব সেখানে ছিলেন না।

এর ফলেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছিলো, বিসিবি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিবকে খেলাবে কি না? অন্যদিকে তামিম ইকবাল সম্পর্কেও মানুষ জানতে চান, তিনিও খেলবেন কি না। কারণ, তামিম এখনও অবসর নেননি। এক বছরেরও অধিক সময় দলের বাইরে। ফিরতে চান শর্ত সাপেক্ষে। চলমান এনসিএল টি-২০ টুর্নামেন্টেও তিনি দারুণ ব্যাটিং করেছেন।

সুতরাং, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তামিম খেলবেন কি না, সেটাও বড় একটি প্রশ্ন। আজ বিসিবি সভাপতিকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘যদি কোন খেলোয়াড় অবসর না নিয়ে থাকে, সে নির্বাচনের জন্য অবশ্যই অ্যাভেইলেবল।’ সাকিবকে নির্বাচকরা দলে নিতে চাইলে নিতে পারবেন, তবে তিনি যদি ব্যাক্তিগত কারণে না খেলেন, তাহলে সেটা ভিন্ন কথা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিব খেলেনি কেন, তা নিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আসলে এই ব্যাপারটা একদমই ভিন্ন ইস্যু। এটাতে আসলে নতুন করে কিছু নেই। শেষ যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ খেলেছি আমরা, সেখানে সে মানসিক অবস্থায় ছিল না খেলার মতো। যেতে পারেনি। এখন বলবে বিপিএল খেলবে কি আমার কাছে কোন আপডেট নেই তার ব্যাপারে।

তামিম সম্পর্কে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘তামিমেরটা আসলে প্রধান নির্বাচক যে কথা বলেছেন, এখনো কোনো পলিসি নেই। যদি কোনো খেলোয়াড় অবসর না নিয়ে থাকে আর যদি নির্বাচকরা মনে করে তাকে দরকার, তখন ওই নির্বাচক প্যানেল নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলবে।’